1দৈনিক বার্তা –-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া  সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত  বৈঠকে যোগ দেননি। মন্ত্রিসভার  বৈঠকে অংশ  নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় মায়ার এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে।এমন  প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার আজকের  বৈঠকে মায়ার অনুপস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে নানা আলোচনা চলছে।

যোগাযোগ করা হলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানান, অসুস্থতার কারণে তিনি মন্ত্রিসভার  বৈঠকে  যোগ দিতে পারেননি। তিনি জ্বরে ভুগছেন। এদিকে, দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া  দেশবাসীর কাছে  দোয়া  চেয়েছেন।  সোমবার বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটের সচিবালয়ে আসলে সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সবার কাছে এ দোয়া কামনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, আমার জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।এ সময় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে চলতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি রাজি হননি।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে মর্মান্তিক সাত খুনের ঘটনায় তার জামাতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এসব বিষয়ে আমি  কোনো কথা বলতে চাই না।এর আগে সকালে মন্ত্রিসভার নিয়মিত  বৈঠকে উপস্থিত হননি তিনি। এমনকি তিনি সচিবালয়ে তার কার্যালয়েও আসেননি। সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার  বৈঠক চলাকালেমন্ত্রী বাসায় অবস্থান করছিলেন বলে জানা  গেছে।

মন্ত্রিসভার  বৈঠকে যোগ না দেয়া সম্পর্কে  মোফাজ্জল  হোসেন চৌধুরী মায়া জানান, অসুস্থতার কারণে মন্ত্রিসভার  বৈঠকে যোগ দিতে পারিনি। আমি জ্বরে ভুগছি। তাই যাওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত,নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় মায়ার জামাতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর এ বিষয়ে গত শুক্রবার একটি বিবৃতিতে দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী। তিনি দাবি করেছেন, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যের সংশ্লিষ্টতা  নেই।বিবৃতিতে  মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে চাই যে,মামলায় অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার পরিবারের কোনো সদস্যের কখনোই কোনো রকম  যোগাযোগ বা ব্যবসায়িক  লেনদেন বা সম্পর্ক ছিল না।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রী আজ আসেননি। তিনি বাসায় অবস্থান করছেন।

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় মায়ার এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর এ বিষয়ে গত শুক্রবার একটি বিবৃতিতে দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী। তিনি দাবি করেছেন, ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যের সংশ্লিষ্টতা নেই।

বিবৃতিতে  মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে চাই যে, মামলায় অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার পরিবারের কোনো সদস্যের কখনোই কোনো রকম যোগাযোগ বা ব্যবসায়িক লেনদেন বা সম্পর্ক ছিল না।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে, যা আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত এবং আমার পরিবারের সম্মানহানি করেছে।

সাধারণত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অনুপস্থিতির বিষয়টি আগাম জানানোর নিয়ম থাকলেও  সে রকমও কিছু করেননি এই আওয়ামী লীগ  নেতা।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।লাশ উদ্ধারের আগের দিন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল  হোসেন  চৌধুরী মায়ার  মেয়েজামাই তারেক সাঈদ মোহাম্মদকে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়কের দায়িত্ব  থেকে সরিয়ে  সেনাবাহিনীতে পাঠানো হয়।

এরপর নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জের আরেক কাউন্সিলর নূর  হোসেন ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা তার জামাতাসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে।ওই অভিযোগ ওঠার পর গত ৭ মে সাঈদসহ র‌্যাব-১১ এর ওই তিন কর্মকর্তাকে চাকরি  থেকে অকালীন অবসরে পাঠানো হয়।তদন্ত চলাকালে এ ধরনের বিবৃতি দেয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া পাওয়া  গেছে,  কেউ  কেউ দাবি করেছেন মায়ার পদত্যাগ।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রীর অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভুইঞা বলেন, মন্ত্রী মহোদয়ের নামে ক্যাবিনেটের  ফোল্ডার পাঠানো হয়েছে। তিনি তা গ্রহণও করেছেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সভায় উপস্থিত ছিলেন কিনা জানতে চাইলে তা এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, সভায় যারা কথা বলেন তাদের দিকেই  বেশি নজর থাকে।আমি আজ খেয়াল করিনি মন্ত্রী মহোদয় উপস্থিত ছিলেন কিনা।তবে কেউ উপস্থিত না থাকতে পারলে তা আগাম জানিয়ে দিতে হয় বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

রোববার জাতীয় সংসদে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় মন্ত্রী অংশ নিয়েছেন জানিয়ে  মায়ার একান্ত সচিব তাহের বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে  রোববার বিকালে এবং এর আগেও একদিন (৫ মের পর) সচিবালয়ে অফিস করেছেন মন্ত্রী।মন্ত্রী সবগুলো সিডিউল অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। একটি অনুষ্ঠানও মিস করেননি। ফাইলপত্রও নিয়মিত সই করছেন।

তবে সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনে মায়ার ২০৫ নম্বর কক্ষটি সোমবার সকাল থেকে তালাবদ্ধ দেখা  গেছে। মন্ত্রীর পাশের কক্ষেই তার সহকারী একান্ত সচিব এ এস এম সহিদুল ইসলাম মিলনের কক্ষে দুটি  টেবিলেও কাউকে দেখা যায়নি। দরজা  খোলা কক্ষে দুটি ফ্যান চলছিল।তাহের জানান,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে  মেক্সিকোতে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর  শেষে গত ৫  মে  দেশে ফেরেন মায়া।