1দৈনিক বার্তা :নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের সঙ্গে যাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে তাদের ব্যাংক হিসাবে  লেনদেনে অস্বাভাবিকতা পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই খুনের আগে ও পরে ঘটনায় অভিয্ক্তু এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি(স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন, বাবা, মা ইত্যাদি) ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে বিচ্ছিন্নভাবে টাকা জমা  দেয়া ও উঠানোর ঘটনা ঘটেছে। যা গত ছয়মাসে এইসব ব্যাংক হিসাবে হয়নি।

খুনের ঘটনার পর নিহত কমিশনার নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন র‌্যাব-১১ অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ৬ কোটি টাকা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই অর্থ সরবরাহ করেছে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন।শহীদ  চেয়ারম্যান দাবি করেন খুন করানোর জন্য টাকা লেনদেন হয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে।

শহীদ চেয়ারম্যানের এই দাবির পর বাংলাদেশ ব্যাংক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে যারা অভিয্ক্তু তাদের এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের  খোঁজ নিতে শুরু করে।৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম এই নিয়ে তদন্ত শুরু করে। কয়েকটি  বেসরকারি ব্যাংকে এ নিয়ে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, অভিয্ক্তু এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যতগুলো ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করা  গেছে  সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে যে তদন্ত হয়েছে, তাতে  দেখা গেছে কিছু হিসাবে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে ও পরে  ছোট-বড় লেনদেন হয়েছে। তবে এই লেনদেনের সঙ্গে ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা এনখও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

লেনদেনগুলোকে কি সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে কি না জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন,  যেহেতু বিষয়টি এখনও প্রমাণিত না, সেহেতু লেনদেনগুলোকে আমরা এই মুহূর্তে সন্দেহজনক বা সন্দেহজনক নয় কোনোটাই বলবো না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন মুখপাত্র  সোমবার বলেন, অভিযুক্ত এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যতগুলো ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করা  গেছে সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে।

ইতোমধ্যে যে তদন্ত হয়েছে তাতে  দেখা  গেছে কিছু হিসাবে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে ও পরে ছোট-বড়  লেনদেন হয়েছে। তবে এই লেনদেনের সাথে ঘটনার  কোন সম্পৃক্ততা আছে কি না তা এখনও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।নারয়াণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালকসহ  মোট সাতজনকে গত ২৭ এপ্রিল শহরের একটি এলাকা  থেকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করে তাদের স্বজনরা।৩০ এপ্রিল তাদের লাশ ভেসে ওঠে শহর সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীতে।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের হত্যা করা হয়েছে।ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ,মেজর আরিফ হোসেন এবং  নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে চাকরি থেকে অকালীন অবসরে পাঠানো হয়েছে।

এদের মধ্যে তারেক সাঈদ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন  চৌধুরী মায়ার জামাতা।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নূর  হোসেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াসিন আলী, নূর হোসেনের কর্মচারী হাসমত আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম, যুবদল নেতা আনোয়ার ও বিএনপি সমর্থক ইকবাল হোসেন।তদন্ত দলের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,আমরা কয়েকটি অ্যাকাউন্ট দেখেছি, যেখানে এই ঘটনার আগে ও পরে যে ধরনের লেনদেন হয়েছে, গত ছয় মাসে তা হয়নি। লেনদেনে সন্দেহজনক কিছু মিলেছে কি না জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখনো প্রমাণিত না, সেহেতু  লেনদেনগুলোকে আমরা এই মুহূর্তে সন্দেহজনক বা সন্দেহজনক নয়, কোনোটাই বলব না।