2দৈনিক বার্তা — কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ৯ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে মাত্র ২০ হাজার টাকা। স্থানীয় সমাজপতিরা লম্পটদের বাঁচাতে জোর পূর্বক ভাবে ওই স্কুল ছাত্রীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করে। সুষ্টু বিচার না পাওয়া এবং ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করায় চরম ভাবে হতাশ ওই ছাত্রীর পরিবার। এ দিকে ইজ্জতের মূল্যের কোন অর্থ না নেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে ওই স্কুল ছাত্রী। সমাজপতিরা ওই অর্থ সামাজিক কোন কাছে ব্যয় করার উদ্দ্যেগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২রা মে রাতে ভেড়ামারা উপজেলার পল্লী মির্জাপুর গ্রামের এক প্রবাসীর কন্যা দোলুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী কে নিজ বাড়িতেই ধর্ষনের চেষ্টা করে ওই এলাকার ৩ লম্পট তৌহিদুল ইসলামের পুত্র লিটন, কাবিল হোসেন’র পুত্র আরিফুল এবং সাহেব আলী’র পুত্র রানা। এসময় মেয়ের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে হাতে নাতে ২ লম্পট আরিফুল এবং রানা কে আটক করে গন ধোলাই দেয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বড় সাইজের কসটেপ এবং অজ্ঞান করার ঔষুধ পাওয়া যায়। পরে তাদের র্সোপাদ করা হয় ভেড়ামারা থানায়। এরপর সমাজপতিরা শুরু করে তদবির। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মিমাংসা করা জন্য ২ লম্পট কে থানা থেকে মুক্ত করে নিয়ে যায়। গত ৬ মে ছিল স্থানীয় ভাবে মিমংসা করার দিন। কিন্তু সমাজপতিরা সুষ্টু বিচার না করতে পারায় ওই দিন অমিমাংসিত ভাবেই শেষ হয় শালিস। সুষ্টু বিচার না পেয়ে ওই ছাত্রীর মা তাসলিমা খাতুন বাদী হয়ে ওই রাতেই ভেড়ামারা থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে পর দিন ২ লম্পট রানা এবং আরিফুল কে আটক করে। এবারও পুলিশের হাতে অধরাই থেকে যায় ঘটনার মুল নায়ক লম্পট লিটন। আবার শুরু হয় এলাকার সমাজপতি এবং নেতাদের দৌড় ঝাঁপ। তারা বিভিন্নভাবে ওই ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে আপোষ মিমংসা করতে বাধ্য করায়। ৮ মে শুক্রবার ওই ছাত্রীর মা তাসলিমা খাতুন কে থানায় ডেকে এনে মিমাংসা করান। ওই ছাত্রীর মা তাসলিমা খাতুন জানিয়েছেন, মেয়ের মান সম্মান হানি করায় তিনি লম্পটদের আইনি শাস্তি চেয়েছিলেন। তিনি মেয়ের ইজ্জতের মূল্য চাননি। তথাপওি সমাজপতিরা জোরপূর্বক ভাবে ইজ্জতের মূল্য নির্ধারন করেছেন মাত্র ২০ হাজার টাকা। তবে তিনি এখনও সে টাকা পাননি।
ভেড়ামারা উপজেলা  পরিষদ’র ভাইস চেয়ারম্যান সমাজপতি আমিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, লম্পট ৩ জনই নাবালক। তাছাড়া এলাকাবাসী ধোলাই দেওয়ায় তাদের শাস্তি হয়ে গেছে। এ জন্য তাদের ৩ জন কে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মেয়ে এই টাকা নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এ জন্য ২০ হাজার টাকা সমাজসেবা মুলক কাজে ব্যয় করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ পারভেজ ইসলাম পিপিএম জানিয়েছেন, স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের চেষ্টা করা হয়নি। তাকে বিয়ে করার জন্য এক লম্পট বিষয়টি সাজিয়ে ছিল। তার আগেই জনগন তাদের আটক করে। বিষয়টি আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে শেষ হয়েছে। তবে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করার বিষয়টি তার জানা নেই।