দৈনিক বার্তা: মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়ান টাইগার হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধৈর্যশীল ও পরিশ্রমী। তারা উদ্যোমী ও গতিশীল বলেই বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত হয়েছে।বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মতবিনিময় সভায় মজীনা এসব কথা বলেন।
ভায়া পৌরবাসী ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান, বিজিবি চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর আনোয়ার জাহিদ।
মজীনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সম্ভাবনা প্রচুর রয়েছে, তবে এক্ষেত্রে বাধাও কম নয়। এ দেশ থেকে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক লোক বিদেশে যাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদ দেখেছি। আমি এ দেশের ঊর্বর মাটি ও পানি সম্পর্কে জেনেছি। এখানে বছরে ৩/৪ বার ফসল ফলে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এ উৎপাদন বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছে। আর এসব গুণ পাওয়া গেছে সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে।মজীনা বলেন, আমি আমার ৬৫ বছরের চোখ দিয়ে এ দেশের মানুষকে কাছ থেকে দেখেছি। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া আমি ঘুরেছি জানার জন্য, শেখার জন্য।
তিনি বলেন, সারাদেশে আমি সেই সব মানুষকে দেখেছি যারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। তাই বাংলাদেশ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গা সফরের ব্যাপারে মজীনা বলেন, এখানে আমি শিখতে এসেছি। দেখতে এসেছি এখানকার পরিশ্রমী মানুষগুলোকে, যারা দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে কাজ করছে।সভায় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, চিকিৎসক, সাংবাদিক, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে মজীনা ১১ জন সফর সঙ্গী নিয়ে মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এর আগে দুদিন ধরে তিনি ঝিনাইদহ জেলা সফর করেন। ঝিনাইদহ সার্কিট হাউজে রাত্রিযাপন করে বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গায় আসেন ড্যান মজীনা।
বুধবার মেহেরপুরের মুজিবনগরে সুশিল সমাজের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেছেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার মাধ্যমেই এ দেশের সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সাথে তার সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, সে সময় তিনি এ দেশের ৬৪টি জেলা সফরের যে ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন তারই অংশ হিসেবে মেহেরপুর সফর করলেন।ড্যান মজিনা বলেন,এ দেশের অস্থায়ী সরকার মেহেরপুরের মুজিবনগরে শপথগ্রহণ করেছিল।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগরে শপথ গ্রহণকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের নির্দেশনায় পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ অচিরেই মধ্যম আয়ের একটি দেশে পরিণত হবে।এ জন্য দেশের মেধা ও প্রাকৃতিক সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত গুরুত্ব আরোপ করেন।ড্যান মজিনা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ থেকে পায়ে হেঁটে ’মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ’ মানচিত্র দেখতে যান।