দৈনিক বার্তা : কয়েকজনের অপরাধের জন্য বিএনপি নেত্রীর গোটা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব বাহিনীর বিলুপ্তির দাবি হঠকারী, চক্রান্ত ও উস্কানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্যে করে মন্ত্রী বলেন, তার (খালেদা জিয়া) এ দাবি মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলার মতো।এ দাবি প্রত্যাহার করে সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব থাকলে তা দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।জিয়াউর রহমান হত্যার জন্য আগামীতে বিএনপি নেত্রী গোটা সশস্ত্র বাহিনীর বিলুপ্তিই চাইবেন কি না এ সময় প্রশ্ন করেন ইনু।
সন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়ার প্রস্তাব করছেন খালেদা জিয়া এমন সব কথাবার্তা উত্থাপন করেন যেটা বোঝা খুব মুশকিল এবং সেটা অনেকটা পাগলের প্রলাপের মতোই। কতিপয় সদস্যের অপরাধের জন্য র্যাব বাতিলের দাবি যখন করছেন খালেদা জিয়া। তার স্বামী জেনারেল জিয়া হত্যার জন্য সেনাবাহিনী বাতিলের দাবি করবেন? এ প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণঞ্জের ঘটনায় র্যাব সদস্যদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় র্যাব-১১ সেই তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারও হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। ধৈর্য ধরতে হবে সবাইকে। তিনি বলেন, কতিপয় সদস্যের অপরাধের জন্য আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বাহিনী বা সংস্থাকে বাতিল করে দেওয়ার প্রস্তাবটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। খালেদা জিয়া র্যাবকে দলীয় বাহিনী বলেছেন। এর আগেও তিনি পুলিশকেও দলীয় বাহিনী বলেছেন।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন,উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় সেনা সদস্যের কারণে তার স্বামী জিয়াউর রহমানকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে। তাহলে তিনি সেনাবাহিনী বাতিলের প্রস্তাব দেবেন? পুলিশ বাহিনী বাতিলের প্রস্তাব দেবেন?
নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে ইনু বলেন, কতিপয় সদস্যের অপকর্মের জন্য পুরো র্যাব দায়ী হতে পারে না। র্যাব আইনের উর্ধ্বে নয়।প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত র্যাবের ১ হাজার ৯৪৯ জনকে বিভিন্ন অপরাধে লঘু ও গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অনেককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর অর্থ তারা যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ক্রমাগতভাবে খালেদা জিয়া র্যাব বিলুপ্তির হুমকি দিচ্ছেন। বিলুপ্তি না করলে আন্দোলনে যাবেন। আইননানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত এই বাহিনী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর খালোদা জিয়া বলছেন দলীয় বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির সময়ে র্যাবের হাতে বেশি মানুষ মারা গেছেন। ২০০৪ সালে র্যা বের যাত্রা শুরুর পর প্রথম তিন বছরেই ৩৭৩ জন মারা যান। আর শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গত ৫ বছরে এ সংখ্যা কমে ২৭৮ জনে পৌঁছেছে। এলিট ফোর্স বাতিল করে দিয়ে আর কোনো বাহিনী তৈরি করার দরকার নেই বলে কি উনি মনে করেন, যোগ করেন হাসানুল হক ইনু।
নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে। র্যাব, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনী আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বাহিনী। আইনানুগভাবেই তারা কাজ করছে।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সময় ক্লিনহার্টকে হত্যাকাণ্ডের দায়মুক্ত করেছিলেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষায় দায়মুক্তি দিয়েছিলেন। বর্তমান সরকার মানুষ হত্যাকাণ্ডের দায়মুক্তির বিধান করে আসামিদের রক্ষা করছে না।
খালেদা জিয়াকে তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করে বিকল্প প্রস্তাব দেওয়ার আহবান জানান তথ্যমন্ত্রী। জানমালের নিরাপত্তায় তাহলে খালেদা জিয়ার কাছে কিকল্প প্রস্তাব কি? তারাই র্যাব প্রতিষ্ঠা করেছিল তাহলে কি ভুলভাবে করেছিল? এসব প্রশ্ন করে হাসানুল হক ইনু।