2দৈনিক বার্তা : প্রাইম ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।ব্যাংকটি  থেকে প্রায় দুই  কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ চার্জশিট দাখিল অনুমোদন  দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আদাবর থানায় এ চার্জশিট (নম্বর ৪৪) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-সহকারী পরিচালক  মো.   মোজাম্মেল হোসেন হাওলাদার।দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- প্রাইম ব্যাংকের রিং রোড শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা, একই শাখার সাবেক সিনিয়র ভাইস  প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার জাহানারা  বেগম, সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম খান, আল-আমিন  স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী মো. নুরুল আমিন, মেসার্স আরাফাত  ট্রেডার্স নামক ভুয়া প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী আরাফাত আলী খান,মেসার্স তামান্না ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হাই ও তার স্ত্রী রওশন আরা হাই, মো. শহিদুল ইসলাম এবং  মো. হাবিবুর রহমান।

সূত্রটি জানায়, আসামি  গোলাম মোস্তফা ওই শাখার ব্যবস্থাপক থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে তার আত্মীয়দের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ ঋণ দেন। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোনো প্রকার জামানত ছাড়া এবং কখনো ভুয়া জামানতে ঋণ প্রদান করেন। এই ঋণপত্রগুলো ম্যানেজার জাহানারা বেগমকে দিয়ে অনুমোদন করে  নেন। জাহানারা বেগম নিজেও অসৎ উপায়ে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই এসব বিধি বহির্ভূত ঋণপত্রে সাক্ষর করেন।

এসবের মধ্যে- যথাযথ  রেকর্ডপত্র ছাড়াই ভুয়া প্রতিষ্ঠান আরাফাত আলী  ট্রেডার্সকে দুই কিস্তিতে ৪০ লাখ, জামানত এবং ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই তিনটি ভুয়া এলসির বিপরীতে  মেসার্স তামান্না ট্রেডার্সকে ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার, ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে এবং একটি ভুয়া এফডিআর বন্ধক দেখিয়ে আল-আমিন স্টোরকে ৬০ লাখ, ওই ব্যবস্থাপক নিজের কথা বলে ২৫ লাখ এবং দু’টি ভুয়া এফডিআর বন্ধক দেখিয়ে ১১ লাখ ৬২ হাজার ৪৪৫ টাকা উত্তোলন করেন। এভাবে তারা ব্যাংক হতে এবং গ্রাহকদের নামীয় ঋণ হিসাব হতে সর্বমোট ১  কোটি ৮৬ লাখ ৯ হাজার ৪৪৫ টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন। আর এসব তথ্য দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে।

সূত্রটি আরো জানায়, ২০১১ সালে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের রিং রোড শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক (বর্তমানে বরখাস্তকৃত)  গোলাম  মোস্তফার বিরুদ্ধে অবৈধ ও বিধি বহির্ভূত নানাবিধ অপকর্মের অভিযোগ  তোলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।একই সালের ১২ অক্টোবর রাজধানীর আদাবর (ডিএমপি) থানায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক   মো. গিয়াস উদ্দিন বাদি হয়ে ওই অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৪)। পরে মামলাটির তদন্তভার দুদকে দেওয়া হলে কমিশন তা তদন্তের জন্য মো. মোজাম্মেল হোসেন হাওলাদারকে দায়িত্ব  দেয়। তার দীর্ঘ তদন্তে প্রাইম ব্যাংকের এই টাকা আত্মসাতের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যায়।

কমিশন যাচাই-বাছাই  শেষে নয়জনকে আসামি করে মামলাটির চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন  দেয়।