1দৈনিক বার্তা : প্রেম, প্রতারণা, অপরাধের পাশাপাশি কিডনীও বিক্রি হচ্ছে ফেসবুকের দৌলতে৷ এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটটিতে সক্রিয় রয়েছে একটি অন্তরাষ্ট্রীয় কিডনী র‍্যাকেট৷ এমনই বিস্ফোরক তথ্য জানিয়েছেন আইপিএস আধিকারিক অমিতাভ ঠাকুর৷

অমিতাভ ঠাকুর জানিয়েছেন, তার এক বন্ধু প্রতীক জৈন কিডনী র‍্যাকেটের একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন৷ কিডনীর বদলে তিন থেকে চার লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়৷ ওই ব্যাক্তি প্রতীককে নিজের মোবাইল নম্বর ও দিয়েছিল৷ ওই নম্বরে দালালের সঙ্গে কথা বলার পরই অমিতাভ ঠাকুর তাদের বিরুদ্ধে এইআইআর দায়ের করেন৷

ঠাকুর আরও জানিয়েছেন যে, তার বন্ধু প্রতীককে অনুরাগ জোশী নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে কিডনীর প্রয়োজনের কথা জানিয়ে ম্যাসেজ করে ও নিজের নম্বর দেয়৷ প্রতীক সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে অনুরাগ তার বয়স জিজ্ঞেস করে৷ অনুরাগ তাকে এও জানায় যে, বয়স যত কম হবে কিডনী তত তাড়াতাড়ি ও ভাল দামে বিক্রি হবে৷ প্রতীকের বয়সের হিসেবে অনুরাগ তাকে সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলে৷ অনুরাগ বলে কিডনী দাতার নিজস্ব পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং তাকে প্রথমে পুনে ও পরে ইরান যেতে হবে৷

অনুরাগের বক্তব্য অনুযায়ী, সমস্ত খরচ যিনি কিডনী কিনছেন তিনিই বহন করবেন৷ অনুরাগ দেনা-পাওনার জন্য তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও যাবতীয় তথ্য জানিয়েছিল৷ প্রতীকের থেকে এই তথ্য জানার পর অমুতাভ ঠাকুর গত সোমবার অনুরাগকে ফোন করেন৷ অনুরাগ তাকেও একই কথা বলে৷ বয়স জানার পর অমিতাভকে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়৷ অনুরাগ জানায় তার বয়স বেশি বলে কিডনী খদ্দের খুঁজতে অনেক সময় লাগবে৷

অমিতাভ ঠাকুন জানান, অনুরাগ জোশী কারুর নকল নামও হতে পারে৷ যদি পুলিশ তদন্ত করেন তবে এই কিডনী র‍্যাকেটকে ধরা সম্ভব হবে৷ তিনি আরও জানান, অনুরোগ জোশী অবৈধ কিডনী ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যবসায়ী দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন এবং ফেসবুক বা অন্যান্য নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে যোগসুত্র তৈরি করেএই ধরনের কাজ করছেন৷ ভারতের গরীব লোকেদের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে৷ যে কোন ব্যাক্তি গবীরদের ভুল বুঝিয়ে তার কিডনী বিক্রি করাতে পারে বা সে নিজেও অনুরাগের মতোই দালাল হতে পারে৷ অমিতাভ ঠাকুর জানিয়েছেন, অনুরাগের সঙ্গে হওয়া সমস্ত কথা তিনি রেকর্ড করে রেখেছেন৷

অন্যদিকে, ওডিশার কটক পুলিশ অঙ্গ ব্যবসার পর্দা ফাঁস করে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে৷ পুলিশ আধিকারিক আরপি শর্মা জানিয়েছেন, তারা এক মহিলার কিডনী চুরির তদন্তে নেমে এই দলের সন্ধান পান৷ শর্মিষ্ঠা জেনা নামের এক মহিলাকে গ্রেফতরা করা হয়েছে৷ ওই মহিলা জানিয়েছে তাকে পয়সার লোভ দেখিয়ে অপারেশন করার কথা বলা হয় ও হাসপাতালেই কিডনী বের করে নেওয়া হয়৷ ওই মহিলার পরিবারের তরফে দেওয়া সমস্ত কাগজ খতিয়ে দেখা যায় অঙ্গদানের নাম করে পাচার চক্র চলছিল৷ অঙ্গদানের সমস্ত কাজগ জাল প্রমাণিত হয়৷ ওই মহিলার স্বামী একজন রিস্কা চালক৷ তাদের মোট দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলে হয়েছিল যার মধ্যে প্রথমেই ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷