1নাজিম হাসান/দৈনিক বার্তা : রাজশাহীর বাগমারায় লাইসেন্স বিহীন একটি অবৈধ ইটভাটায় পরিবেশ দুষন করে কাঠ পোড়ানো অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগটি করেছেন বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার চকিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহেদুর রহমান নামের এক ব্যাক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাগমারার গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত হাটগাঙ্গোপাড়া-দামনাশ রোডের জিল¬ুর মোড় সংলগ্ন কাঁঠালকুড়ি ব্রীজের পশ্চিম পার্শ্বে ‘উকিল-লালবর’ নামে একটি অবৈধ ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এ ভাটার কোনো বৈধ লাইন্সে নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্রও নেই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনো ইটভাটা স্থাপন করতে হলে প্রথমেই বিএসটি.আই কর্তৃক লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। কিন্তু এ ভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১২০ ফুট উঁচু পাকা কংক্রিটের স্থায়ী চিমনি ছাড়া কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এ ভাটাটি স্থাপনের ক্ষেত্রে সেই নিয়মও মানা হয়নি। পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন অমান্য করে মাত্র ৩০ ফুট উঁচু টিনের চিমনি দ্বারা ভাটাটি স্থাপন করা হয়েছে। এ কারনে সামান্য উঁচু চিমনি দিয়ে নির্গত কালো ধোঁয়া উপরে  না গিয়ে নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে ভাটা সংলগ্ন এলাকার আমবাগানের কচি মূকুল, কাঁঠারের মৌচা, আলু, পেয়াজ, ভূট্রা, গম ও ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ধরনের জমির কৃষি আবাদ মারাতœকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নির্গত কালো ধোঁয়ার কারনে বয়ষ্ক ব্যক্তিরা শ্বাসকষ্ট রোগ আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও মানব দেহের হাপানি, কাশি ও চর্ম রোগসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
এছাড়া ওই ইটভাটায় বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার দু’ পার্শ্বে রোপিত নানা প্রজাতির ছোট ছোট গাছ কেটে অবাধে জ্বালানী হিসাবে ইটপোড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে রাতের আধারে সরকারি রাস্তার দু’পার্শ্বের শিশু, মেহগনি, আম, জাম ও বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ভুটভুটি/নসিমন যোগে ওই ভাটায় সরবরাহ করা হয়। এতে একদিকে যেমন রাস্তার দু’ ধার বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে মারাতœকভাবে পরিবেশ দুষিত হয়ে পড়ছে। অপরদিকে কৃষকদের অর্থেও লোভ দেখিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে ইট তৈরির জন্য ভাটার সামনে এনে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। এতে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তিও কমে যাচ্ছে। কাজেই তদন্ত সাপেক্ষে ভাটাটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী বলে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদেকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বেশ কয়েকটি ভাটার বিরুদ্ধে এ ধরনে অভিযোগ রয়েছে। তবে খুব শিগগিরই অবৈধ ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থ নেওয়া হবে।