1দৈনিক বার্তা :  প্রধানমন্ত্রী বিচার বিভাগকে হুমকি দিয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,কেন অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাদের  গ্রেফতার করা হচ্ছে না।  কেন এই টালবাহানা? সরকার তাদের রক্ষা করতে চায়। কারণ তাদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে বিরোধী দলকে দমন করা হচ্ছে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস  চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার আদালত স্থানান্তরের প্রতিবাদে ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের পরে অভিযুক্ত র‌্যাব কর্মকর্তাদের  গ্রেফতারে সরকার টালবাহানা করছে। কারণ এরমধ্যে একজন সরকারের মন্ত্রীর জামাই।

র‌্যাব মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আগে বলা হতো  ছেলে ঘুমালো পাড়া জুড়ালো, বর্গী এলো  দেশে। আর এখন বলতে হবে  ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো র‌্যাব এলো  দেশে।খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জনগণের জন্য রাজনীতি করে এই কারণে তাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় বিচার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ভারতে বিজেপি নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ভারত একটি স্বাধীন-সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক   দেশ।সেখানে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, আজকে ভারতের  লোকসভার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ  পেয়েছে। নির্বাচনে বিজেপি বিজয়ী হওয়ায় আমরা অভিনন্দন জানাই এবং তাদের সাফল্য কামনা করি। একইসঙ্গে আমরা আশা করি ভারতের নতুন সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবে, সীমান্তে আমাদের নাগরিক হত্যা বন্ধ হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল  ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশব্যাপী  যে গুম খুন হচ্ছে তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই হচ্ছে। কারণ তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন।

বিচার বিভাগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন,প্রধানমন্ত্রী বলেছেন জুডিশিয়ালদের উচিত হবে না রাষ্ট্রের অন্য বিভাগের উপর খবরদারি করা। আসলে হাইকোর্ট নারায়ণগঞ্জে সাত খুনে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে বলে আজ তাদের গায়ে  লেগেছে।ফখরুল বলেন, তাবেদার  স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতা  থেকে সরাতে দলমত নির্বিশেষে আন্দোলন তীব্র  থেকে তীব্রতর গড়ে তুলতে  হবে।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে রাজনীতি  থেকে সরাতে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা  হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা একের পর এক খুন করে যাচ্ছে আর দেশের সাধারণ মানুষ তাদের হাতে প্রাণ হারাচ্ছে,  দেশে  যেন ক্ষমতাসীনদের খুনের লাইসেন্স  দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।রিজভী বলেন, বর্তমান সমাজে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এখান  থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য  দেশের বর্তমান তরুণ সমাজ  কেনো বিক্ষোভে নামছে না?  যে তরুণ সমাজ এ  দেশকে স্বাধীনতা দিয়েছে, গণতন্ত্র দিয়েছে  সে তরুণ সমাজ কেনো আজ চুপ? তারা  কেনো এখন পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙ্গতে পারছে না? আমাদের এই খারাপ অবস্থা  থেকে  দেশের তরুণ সমাজই মুক্তি দিতে পারে।

তিনি বলেন, নাটকের বহু দৃশ্যপট আমরা  দেখেছি। একের পর এক অধ্যায় আমরা  দেখেছি। জানি না কিভাবে তার জবনিকা ঘটবে। প্রধানমন্ত্রীর র‌্যাব আছে, বন্দুক আছে। সুতরাং  দেশে প্রতিবাদ করলেই লাশ ভাসবে নদীতে। এটা  কোন ধরনের গণতন্ত্র?

বিএনপি  চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মামলার বিচারিক কার্যক্রম বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করায় ৯০ এর ডাকসু সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান।আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম  দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সামছুজ্জামান দুদু।

দুদু বলেন, ভারতে একটা উত্তাপ বইছে। এ উত্তাপ সবাই বুঝতে পারছেন। একটা নির্বোধ কথিত প্রধানমন্ত্রী এটা বুঝছেন না। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে আপনজন  সোনিয়া গান্ধি। আজকে দেখলাম তার বাড়িতে  কোনো মুখপাত্র খুঁজে  পেল না মিডিয়া।

তিনি বলেন,মুক্তিযোদ্ধারা গণতন্ত্র এনেছেন।  শেখ মুজিব জবাই করেছে। এরশাদ গণতন্ত্র হত্যা করেছে। আর খালেদা জিয়া তা উদ্ধার করেছেন। আবারও গণতন্ত্র উদ্ধার করবেন খালেদা জিয়া।

আওয়ামী লীগ  নেতাদের সঙ্গে আত্মীয়তা করার সমালোচনা করে দুদু বলেন, তাদের  ছেলে- মেয়েদের সঙ্গে নিজেদের  ছেলে- মেয়েদের বিয়ে দিবেন, হতে পারে না। এরা গণতন্ত্রের বন্ধু হতে পারে না। এদের ত্যাগ করেন।ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় সভায়

আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শিক্ষা সম্পাদক খায়রুল কবির  খোকন, গণতান্ত্রিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির, বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন   চৌধুরী অ্যানি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা,  স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধরণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী  হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান আলীম প্রমুখ।