2দৈনিক বার্তা : বাংলাদেশের পর্যটন বিকাশে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার অভাব  নেই বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান  মেনন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন বিকাশে বর্তমান সরকারের সদিচ্ছার অভাব  নেই। তবে এ খাতকে এগিয়ে নিতে হলে দেশের জনগণকেও পর্যটন মানসিকতা তৈরি করতে হবে।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) এবং ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিওএবি) এ আলোচনার আয়োজন করে। আলোচনায় আরো উপস্থিত ছিলেন- এয়ার কমান্ডার শফিকুল আলম, সিভিল এভিয়েশন অথরিটির সদস্য (অর্থ) মিজানুর রহমান, টিওএবি’র পরিচালক  তৌফিক রহমান, নাসির মজুমদার, মাসুদ হোসেন, সাবেক ভাইস  প্রেসিডেন্ট গোলাম কাদের, এটিএবি’র সভাপতি এসএন মঞ্জুর  মোর্শেদ (মাহবুব), মহাসচিব জিননুর আহমেদ  চৌধুরী দিপু, বিমান বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল হাসান প্রমুখ।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ( টোয়াব) আগামী বাজেটকে সামনে  রেখে সন্মানজনক প্রণোদনা চেয়ে  ৭ টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে সরকারের কাছে।

মন্ত্রী বলেন, দেশের পর্যটন বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে। তিনি প্রায় মন্ত্রিসভার  বৈঠকে এ খাতকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তিনি এ খাতকে জাতীয় প্রবৃদ্ধির একটি অংশ মনে করেন।এ খাতের বিকাশে সংকট ও অসুবিধা হলো সম্পদের অপর্যাপ্ততা। কারণ, অর্থ বরাদ্দের দিক দিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এ খাত অনেক  পেছনে রয়েছে।তবে আগামী বাজেটে অর্থমন্ত্রী এ খাতের উন্নয়নের বিশেষ বক্তব্য দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

রাশেদ খান  মেনন বলেন, পর্যটন বিকাশে নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার  দেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে পর্যটন এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। তবে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এ  দেশের জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি বলেন, পর্যটন খাতের অগ্রগতির জন্য ব্যক্তি মালিকানায় আরো বিনিয়োগ প্রয়োজন। শুধু সরকারের পক্ষে এ খাতকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। এরইমধ্যে এ খাতে অনেক বিনিয়োগ হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।এ জন্য প্রাইভেট খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।মন্ত্রী বলেন, আমরা পর্যটন খাতের জন্য বিশেষ পর্যটন এলাকা গড়ে  তোলার কাজ করছি।  যেখানে ব্যক্তি  শ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে এ খাতকে এগিয়ে নিতে পারে।

সিপিডি অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার  গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন খাত অনেক অবহেলিত। এ সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ে যে অর্থ বরাদ্দ  দেওয়া হয় তার বড় অংশ বিমান খাতে ব্যয় হয়ে যায়। ফলে পর্যটন খাতের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তাই দু’টি পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন।টিওএবি’র পক্ষ  থেকে আগামী বাজেটে কয়েকটি বিষয়ে নজর  দেওয়ার আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজারজাতকরণ এবং নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব  দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়া টিওএবি আসন্ন বাজেট উপলক্ষ্যে ৭টি প্রস্তাব দেয়। এর মধ্যে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫২ (কিউ) ধারা রহিত করা,  হোটেলগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত  বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী  লেনদেন করতে হবে, সার্ভিস চার্জের ওপর ভ্যাট আরোপ, পর্যটন সংস্থাগুলোর জন্য করমুক্ত যানবহন আমদানি,  টোয়াবের সদস্যদের বিশেষ বিবেচনায় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাঠনোর নিশ্চয়তা, ট্যুর অপারেটরদের সম্মানজনক হারে প্রণোদনা  দেওয়া এবং কারনেট’র মাধ্যমে ক্রস বর্ডার ট্যুরিজম  সেবা দেওয়া অন্যতম।

এসময় টোয়াবের পরিচালক তৌফিক রহমান বলেন, সার্ভিস চার্জের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে পর্যটন খাত আরও এগিয়ে যাবে । তিনি বলেন, দেশের তারকামান হোটেলগুলো সার্ভিস চার্জের ওপর এ ভ্যাট প্রয়োগ করে ।