1দৈনিক বার্তা :  নারায়ণগঞ্জের প্যালেন মেয়রসহ সাত খুনের ঘটনায় সরকার বসে  নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন,নারায়নগঞ্জের ঘটনায় আমরা বসে নেই। একটু ধীর গতিতে হলেও প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার সরকার ন্যায়সঙ্গতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির মহড়া কক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিচার হবেই। তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের শাস্তি দিতে সরকার কুণ্ঠাবোধও করবে না।

হাই কোর্টের নির্দেশে র‌্যাবের চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তাকে  গ্রেপ্তারে  কোন দীর্ঘসূত্রতা করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।তবে আইনি প্রক্রিয়া  মেনে চলার কারণেই একটু সময় লাগছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাবেক তিন সেনা কর্মকর্তাকে  গ্রেফতার করতে দেরি হচ্ছে  কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন,হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে প্রক্রিয়া মেনেই  গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের  গ্রেফতারের সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সাবেক ওই তিন  সেনা কর্মকর্তার আত্মসমর্পন বা আপিল করা ছাড়া উপায় নেই।বুধবার তিন  সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হবে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এ ধরনের কথা বলিনি, আমাকে মিস  কোট করা হচ্ছে।

কিছু কিছু গণমাধ্যমে মন্ত্রী মিসকোট’ করার হয়েছে অভিযোগ তুলে প্রতিমন্ত্রী বলেন,আমাদের প্রক্রিয়া ে শেষ। তাদের আত্মসমর্পণ কিংবা আপিল ছাড়া  কোন উপায় নেই। তাই তারা আত্মসমর্পণ বা আপিল করতে পারে। করবে- এমন কথা বলিনি।

গত মঙ্গলবার রাতে দুটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বুধবার ওই তিন র‌্যাব কর্মকর্তা আত্মসমর্পণ করতে পারেন- এমন কথা বলেছিলেন মন্ত্রী।

নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযোগের মুখে থাকা র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার তারেক সাঈদ  মোহাম্মদসহ তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে গত রোববার হাই কোর্টের আদেশ হয়।আদেশের পর দুই দিনেও সামরিক বাহিনী  থেকে অবসরে পাঠানো এই তিন কর্মকর্তা  গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহতদের স্বজনরা

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনের স্মৃতিচারণ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তিনি (শেখ হাসিান)  যেদিন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন ে ে দন এদেশের আকাশ-বাতাশ তার জন্য কেঁদেছিল। সারা  দেশের মানুষ সেদিন তার জন্য চোখের জল ফেলেছিল।

নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নিয়ে কোনো জজ মিয়া নাটক তৈরি করা হবে না উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, এ ঘটনাকে পুঁজি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির  চেষ্টা চলছে।সরকার এ ঘটনার তদন্তের স্বার্থে সবধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির মহড়া কক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক  জোটের আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

কামরুল বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনার বিচার হবে। সঠিক বিচার ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যেখানে বিচার ও তদন্ত হচ্ছে  সেখানে কিছু অতিউৎসাহী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতারা ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। কিন্তু তা এদেশের মাটিতে  কোনো দিনই সফল হবে না।

টিআইবি, সুজন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’র মতো বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠননের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই সংগঠনগুলো প্রধানমন্ত্রীর সংসদীয় গণতন্ত্রের ক্ষমতা কমানোর কথা বলছে। তারা বিএনপির সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলে।

বিএনপির  চেয়াপরসন  বেগম খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া মূর্খের মতো বলেছেন, বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমান নাকি জাতিকে বিভক্ত করেছেন। তাই তাকে জাতির পিতা হিসেবে মানা যায় না।

কত বড় ধৃষ্টতা হলে এমন বক্তব্য দিতে পারেন। তবে এমন ফিরিস্তি দিয়ে গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করতে পারবে না বলেও জানান এই নেতা।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর  ও  প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরিয়ে  নেওয়া হয়েছে। সরকার এর সুষ্ঠু বিচার করতে সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারপরও  কেন এত মন্তব্য? বিএনপির  চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) বক্তব্যে মিল খুঁজে  পেয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, র‌্যাব বিলুপ্তি নিয়ে খালেদা জিয়া ও এইচআরডব্লিউর বক্তব্য সম্পূর্ণ মিল। আমাদের বুঝতে হবে এসব সংগঠন কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়।

কামরুল ইসলাম বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি ঘটনা ঘটার পর র‌্যাব ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সরিয়ে  নেওয়া হয়েছে। তাহলে  কেন এসব মন্তব্য। আসলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনার পর জড়িত সন্দেহে তিন র‌্যাব কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, এ জন্য ওই এলাকার প্রশাসনের সব কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতা থাকার সময় ২১ আগস্ট  গ্রেনেড হামলা হলো, কই, একজন পুলিশকেও  তো বহিষ্কার করা হলো না। কাউকে শাস্তি  দেওয়া হয়নি। বরং তাদের পুরস্কৃত করা হয়।

কামরুল বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় কাউকে ছাড়  দেওয়া হবে না।  কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পারে,  সে সুযোগও দেওয়া হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জ গেছেন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য।  যে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছেন তা ব্যর্থ হবেই, হবে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ঢাকা মহনগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উপদেষ্টা জি এম আতিক, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনাকে ইস্যু করে অতি উৎসাহী রাজনীতিকরা  দেশে  নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।