Momin Picনাজিম হাসান/দৈনিক বার্তা : বড় হয়ে সমাজের অসহায় মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে চাই মেধাবী মমিন ইসলাম। মমিন ইসলামের জম্ম রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। বাবা আয়নাল হক ও মাতা মমেনা বেগম। মমিন ইসলাম তাদের বড় ছেলে। বাবা মা কেউই পড়াশুনা জানে না। খুব দুঃখ কষ্টে চলে মমিনের বাবা আয়নালের সংসার। আয়নাল হক বাগমারা থানার মোড়ে একটি ছোট্ট টিন সেটের ঘরে বসে মোবাইলে ফ্ল্যাকজি দেয়। মমিন ও সকাল বিকেল তার বাবা আয়নাল হককে দোকানে বসে সহযোগিতা করে। তাদের আয়ের এক মাত্র উৎস ওই দোকান টুকু। বাবা আয়নাল হক মমিনকে প্রথমে তার গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয়। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মমিন প্রথমে জিপিএ-৫ ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিলাভ করে। সেখান থেকে তাকে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীতে ভর্তি করা হয়। জেএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে আবারও বৃত্তিলাভ করেন। তিনি লেখাপড়া পাশাপাশি বাবার দোকানে তাকে সহযোগিতা করেন। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ লাভ করেছেন। গতকাল সকালে থানার মোড়ে নিজের দোকানে দেখা মেধাবী মমিন ইসলামের সাথে। কথাকপোনের সময় মমিন ইসলাম জানান, তিনি বড় হয়ে অবহেলিত সমাজের অসহায় মানুষের সেবা করবেন। এমন কি? সে ওই সকল অসহায় মানুষের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করবেন বলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। মমিনের মনে এমন প্রশ্ন জাগার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভাবী সংসারে জম্ম নিয়ে বুঝতে পেরেছি। সমাজের এই অসহায় মানুষদের কেউ সাহায্য করতে চাইনা। তাই আমি বড় হয়ে সমাজের এই অবহেলিত, অসহায় মানুষের সেবা করে বৃত্তশালীদের ছোখ খোলে দিতে চাই। কথা শেষ হতেই দোকানে উপস্থিত হয় মমিনের বাবা আয়নাল হক। ছেলের পরীক্ষার ফলাফলে খুশি হলেও তিনি বড় চিন্তায় রয়েছেন। কথা হয় তার বাবা আয়নালের সাথে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, অর্থের অভাবে তিনি তার ছেলেকে উন্নত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াতে পারবেন না। তার পরেও তিনি হাল ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন। এব্যাপারে কথা হয় শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মৃধার সাথে। তিনি বলেন, মমিন ইসলাম অত্যান্ত মেধাবী ছেলে। তিনি মনে করেন, দেশের যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মমিন প্রতিযোগীতায় টিক বলে আমি বিশ্বাস করি। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার সময় তার মেধার উপর ভিত্তি করে তাকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, মটির ঘরে সোনার ছেলের জম্ম হয়েছে। তার দ্বারা সমাজের মানুষ উপকৃত হবে এটা আমি বিশ্বাস করি।