2
সন্তানসহ অপহূত তরুণী। ১০ বছর পরে উদ্ধার করা হয়েছে তাকে। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

দৈনিক বার্তাঃ  ১০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে অপহরণ করা হয়েছিল এক তরুণীকে। তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। এরপর বছরের পর বছর তার ওপর চলেছে নির্যাতন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বারবার। এক পর্যায়ে অপহরণকারীকে বিয়ে করতে বাধ্য হয় ওই তরুণী। সন্তানও হয় তাঁদের। সন্তানের বয়স এখন তিন বছর।

গত মঙ্গলবার ওই তরুণীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে তাঁর স্বামী ইসিদরো গার্সিয়াকে (৪১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০০৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার অরেঞ্জ কাউন্টির সান্টা আনা নামে একটি শহর থেকে ওই তরুণীকে অপহরণ করেন গার্সিয়া। সে সময় গার্সিয়া ওই তরুণীর পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। সে বছরের আগস্ট মাসে তরুণীকে (তখন তার বয়স ১৫) অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী দেশ মেক্সিকোতে নিয়ে যান গার্সিয়া। সেখানে তরুণীকে একটি গ্যারেজে আটকে রেখে চালানো হয় নির্যাতন। তখন গার্সিয়া তরুণীকে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, সে (তরুণী) তার পরিবারের কাছে ফিরে গেলে, তাঁর পরিবার সামাজিকভাবে হেয় হবে। নানাভাবে ভয় দেখিয়ে তরুণীর মগজ ধোলাই করেন গার্সিয়া। একপর্যায়ে আশাহত তরুণীটি অপহরণকারী স্বামীর সঙ্গেই বসবাস করতে থাকে।
বিবিসি জানায়, কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে বোনের সঙ্গে যোগাযোগ হয় ওই অপহূত ওই তরুণীর। বোন তাকে জানান, পরিবার তাকে এখনও ফিরে পেতে চায়। তরুণীটি এরপর সান্টা আনায় পুলিশের কাছে যায়। তিনি জানান, ১০ বছর আগে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এদিকে ওই তরুণীর স্বামী তাকে অপহরণ করেছে—এ খবরে রীতিমতো বিস্মিত তাদের প্রতিবেশী। স্থানীয়রা তাদের নাম টমাস ও লরা হিসেবে জানে। তাদের তিন বছরের মেয়েও সবার খুব আদরের। মেয়ের জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করতেন তারা।
প্রতিবেশীর এক শিশু জানায়, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গেলেই সে সুন্দর সুন্দর খেলনা উপহার পেত। মারিয়া নামের আরেক প্রতিবেশী একটি গির্জার সামনে মেয়েসহ লরা ও টমাসের ছবি দেখায়। প্রতিবেশীরা জানান, তাদের মনে খটকা ছিল একটি ব্যাপারে। সেটি হলো টমাস ও লরা দম্পতি কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতেন না। তারা প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও সেসব অনুষ্ঠানে তাদের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবকে দেখা যেত না। কেউ কেউ বলেছেন, লরাকে যে অপহরণ করা হয়েছে, তা তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
প্রতিবেশী মারিয়া বলেন, তারা খুব সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। তবে লরা কখনও বাইরের কারও সঙ্গে খুব বেশি কথা বলতেন না। কারণ তার স্বামী তার ওপর নজর রাখতেন।