1দৈনিক বার্তাঃ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে মিথ্যাচার ও গুজব ছড়ানো বন্ধ করে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, মানুষের শান্তি নষ্ট করে এমন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। আপত্তিকর বিষয় এবং নারী ও শিশু পর্ণোগ্রাফি রোধ করে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদেরকে নিরাপদ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে না।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা সিটির  গোল্ড ওয়াটার কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক অপারেশন গ্র“প বিডিনগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।বিডিনগের তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক দুদিনব্যাপী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি নূরুল ইসলাম রোমান।অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন তথ্য -প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক,

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এপনিক ডিরেক্টর জেনারেল পল উইলসন এবং আইক্যান এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ-চুয়াং কোয়েক, এপিনক নির্বাহী কমিটির সদস্য গৌরব রাজ উপাধ্যয়া, বিডিনগ বোর্ড অফ ট্রাস্ট্রির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাব্বির ।গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দেবে এমন প্রত্যাশা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,বিডিনগের এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়াররা অনেক উপকৃত হবেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি খাতের বিদেশী বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের ফলে আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের কার্যক্রম একধাপ এগিয়ে যাবে।তিনি বলেন, ধর্মীয় উস্কানি ,মিথ্যাচার ,গুজব ছড়িয়ে শান্তি বিনষ্ট করা এবং নারীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য পরিহারের মাধ্যমে আমাদেরকে তৃণমূল পর্যায়ে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল আমরা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে পারবো।

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, আগামী ৫ বছরে দেশের ৭৫ভাগ মানুষকে ইন্টারনেন্টের আওতায় আনা হবে। বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলার ২০০টি উপজেলা ইন্টারনেটের আওতায় আনা হয়েছে। ২০১৫ সালের মধ্যে ২৪ ভাগ মানুষকে ইন্টারনেটের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে একটি আধুনিক বাংলাদেশ হিসাবে দেখতে চাই। এই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে সকল পেশার মানুষ একে অপরের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যেতে হবে।এপনিকের ডিরেক্টর জেনারেল পল উইলসন বলেন, বিডিনগের সাফল্যে এপনিক গর্বিত এবং বিডিনগ প্রতিষ্ঠায় এপনিকের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য এপনিক আনন্দিত। বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহার সম্প্রসারণে বিডিনগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশের অনেক ইন্টারনেট প্রফেশনালস দরকার। এপনিক এক্ষেত্রে ট্রেনিং সুবিধা দিতে পারে ।তবে এ ক্ষেত্রে স্থানীয় আইসিটি ইন্ড্রাস্ট্রিকে যুগোপযোগী নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার তৈরির দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।

আইক্যান এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউ-চুয়াং কোয়েক বলেন, ইন্টারনেট বর্তমান পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ করে দিচ্ছে। বিডিনগের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থায় ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরপরই বিদেশী অতিথিদের উপস্থিতিতে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনের সম্মেলনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের ইন্টারনেট অবকাঠামো নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য জানান এপনিকের ড. ফিলিপ স্মিথ, ফাইবার অ্যাট হোমের সুমন আহমেদ সাব্বির প্রমুখ সম্মেলনের অংশ হিসাবে গত ১৯-২২ মে রাজধানীর ধানমন্ডির ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটিতে টেলিকম ও আইএসপি প্রকৌশলীদের জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিপি রাউটিং, নেটওয়ার্ক

সিকিউরিটি এবং ভার্চুয়ালাইজেশন ও ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে কারিগরি কর্মশালা। টিউটোরিয়াল ট্র্যাকে রাউটিং রেজিস্ট্রি অটোমেশন, এডভান্স মাল্টিথোমিং এবং অ্যাপ্লিকেশন ও ট্রান্সপোর্ট বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিডিনগ সভাপতি নুরুল ইসলাম রোমান জানান, সম্মেলনে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিডিনগ সদস্যদের নিজেদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, বিভিন্ন অপারেশনাল রিসার্চ সম্পাদন,স্থানীয় আইসিটি ট্যালেন্টদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রমোট করা এবং বাংলাদেশের জন্য সুলভ ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করতে সহায়তা করা।

বিডিনগ বোর্ড অফ ট্রাস্ট্রির চেয়ারম্যান সুমন আহমেদ সাব্বির বলেন, বিডিনগ ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে একটি অলাভজনক সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি মূলত বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলীদের একটি কমিউনিটি হিসাবে কাজ করবে।নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্র“প (নগ) হচ্ছে ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ারদের একটি গ্লোবাল কমিউনিটি যারা নিজেদের মধ্যে অপারেশনাল বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মতামত বিনিময় করে।এ বছরের নভেম্বরে বিডিনগের দ্বিতীয় সম্মেলন কক্সবাজারে করার পরিকল্পনার কথা জানান আয়োজকরা।