1দৈনিক বার্তাঃ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান  মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন,দেশপ্রেমিক সরকারের প্রয়োজনে অবৈধ সরকার পতনে শিগগিরিই রাজপথে নামবে বিএনপি। শুধু  নেত্রীর  ঘোষণার অপেক্ষা।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে শুক্রবার এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশের পানির ন্যায্য অধিকার: ভারতের নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বাধীনতা ফোরাম  কেন্দ্রীয় সংসদ। সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ।

পানি নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের নীতি এক উল্লেখ করে সাবেক এ পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন,  মোদীর বিজয়ে বিএনপি উল্লসিত কিংবা ব্যাথিত নয়। বিএনপির দৃষ্টি জনগণের দিকে।বিএনপি  দেশের মানুষের স্বার্থেই আন্দোলন করে।

ভারত আওয়ামী লীগকেই পানি দেয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, পানি নিয়ে শুধু আন্দোলন করে লাভ  নেই। জাতিসংঘে  যেতে হবে। চীন ও  নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় আলোচনায় বসতে হবে। এটা আন্তর্জাতিক ইস্যু। আন্তর্জাতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। নইলে আমরা যতই হুংকার দেই ভারত আমাদের কথা শুনবে না।প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য সরকার দায়ী দাবি করে সাবেক এ ফুটবলার বলেন, নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের পরিণতি কংগ্রেসের  চেয়েও খারাপ হতো।

বিএনপি ভাইস  চেয়ারম্যান  মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন,  দেশে এখন গুম-খুনের মহোৎসব চলছে।পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীও এতো অত্যাচার করেনি যতটা বাঙালির ওপর সরকার করছে।খুনিরা হয় মন্ত্রীর জামাই,ছেলে।ফেনী,নারায়ণগঞ্জ,লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশ আজ মৃত্যু উপত্যকা।হাফিজ উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে মানুষের জীবনের  কোনো মূল্য নেই। শুধু একটি বিষয়ে তাদের মূল্য আছে সেটা হলো ভারতের চাওয়া পাওয়া। বাংলাদেশের মানুষের  যে পানির প্রয়োজন আছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের কথায় কখনো তা প্রকাশ পায়নি। কারণ তারা পানি চায় না।

বিএনপির এই নেতা বলেন,দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ভারত আমাদের ৫৪টা নদীর প্রত্যেকটির ওপর বাঁধ নির্মাণ করে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করেছে। ভারতের কারণে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে আমাদের ২০টি নদী আমাদের হারিয়ে  গেছে।৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার মন্তব্য করে মেজর হাফিজ বলেন, আজকে যদি একটা নির্বাচন হতো কংগ্রেসের যে অবস্থা হয়েছে একই অবস্থা হতো আওয়ামী লীগের।

ফারাক্কা চুক্তি অনুযায়ী ভারত পানি বন্ধ করতে পারে না মন্তব্য করে  মেজর হাফিজ বলেন, ভারত  যে আমাদের পানি দিচ্ছে না এটা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন। তারা চায় না আমরা তৃতীয়  কোনো  দেশের সঙ্গে বিশেষ করে   নেপাল ও চীনের সঙ্গে মিলে এ সমস্যার সমাধান করি। আমাদের ন্যায্য দাবির প্রতি তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই।

বিজেপি প্রসঙ্গে হাফিজ বলেন,মোদির আগমনে বিএনপি ব্যথিতও নয়,উল্লসিতও নয়। স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে কোনো আপস আমরা করব না। আমরা আশা করব ভারতের নতুন সরকার আমাদের ন্যায্য দাবির প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাবে।আলোচনা সভায় বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম বলেন,দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি সবচেয়ে  বেশি দখল করেছে আওয়ামী লীগের  নেতাকর্মীরা। হিন্দু সম্প্রদায়কে সবচেয়ে  বেশি তারাই নির্যাতন করে। আবার তারাই নিজেদের অসাম্প্রদায়িক দাবি করে।

তিনি বলেন,ধর্মনিরপেক্ষতা একটা প্রতারণা-ভণ্ডামি। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে রাজনীতি করে জনগণকে  শোষণ করা হচ্ছে।

পিয়াস করিম বলেন, দেশের ১৬ কোটি জনগণ তাদের ন্যায্য পানির দাবিতে  ক্ষেপে উঠলে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।কংগ্রেসের নির্লজ্জ আধিপত্যবাদী সমর্থনে আওয়ামী লীগ সরকার টিকে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,ভারতের আধিপত্যের মাঠ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। নির্বাচনের নীল-নকশা তৈরি হয় দিল্লিতে। এটা চলতে  দেওয়া যায় না।

তিনি হাসিনা সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী সকালে ঘুম থেকে উঠে যেন শুনি হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। তিনি পদত্যাগ করলেই সব সমস্যার সমাধান।

স্বাধীনতা  ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি আবু নাসের  মোহাম্মদ রহমত উল্ল্যার সভাপতিত্বে বক্তব্য  দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অধ্যাপক ড. পিয়াস করিম, সাবেক সংসদ সদস্য খাইরুল কবীর  খোকন, বিএনপি সহ- স্বেচ্ছাবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম  মোশাররফ, জাতীয়তাবাদী কর্মজীবিদলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ  হোসেন সরকার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ।