Gopalganj Photo 01(25.05.2014)মোহসিন সিকদার/দৈনিক বার্তাঃগোপালগঞ্জে জমিজমা সংত্রান্ত বিরোধের জের ধরে মেজবাহ চৌধুরী (২৫) নামে এক কলেজ ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের দুইটি চোখ উঠিয়ে ফেলা হয়েছে । হাত-পা ভেঙ্গে ফেলাসহ শরীরের বিভিন্ন জখমের চিহৃ রয়েছে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১ টায় পুলিশ সদর উপজেলার পাইককান্দি ইউনিয়নের আমুরিয়া গ্রামের একটি ফাঁকা জমি থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত মেজবাহ ওই গ্রামের জাফর চৌধুরীর ছেলে। সে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের øাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র। গত বুধবার সে বিয়ে করে।
এ ঘটনা তদন্তে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল) মোঃ মনিরুল ইসলাম, সদর থানার ওসি মোঃ জাকির হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ সেলিম রেজা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের মা তাসলিমা বেগম (৫৫) বলেন, গত ১৮ মে (বুধবার) আমার ছেলে বিয়ে করে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আমারে কয় মা একটু গোপালগঞ্জ যাব। ভাবলাম নতুন বিয়ে করেছে বৌয়ের জন্য কিছু আনবে কিনা। আমি যাতি দিলাম।  শহরের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হয়। দুই ঘন্টা হয়ে গেলেও মেজবাহ-এর কোন খোঁজ নাই। ফোনে অনেক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। আত্মীয় স্বজদের বাড়ি খোঁজ নিয়েছি। কোথাও তাকে পাইনাই। দুইদিন নিখোঁজ থাকার পর রোববার সকাল সাড়ে ৭ টায় পাশের বাড়ির জিবু শেখ মাঠে গরু চড়াতে গিয়ে আমার ছোয়ালের লাশ দেহে। পরে এসে আমাদের খবর দেয়।
নিহতের বাবা জাফর চৌধুরী (৬০) বলেন, পাশের বাড়ির আলী আকবর সিকদারের সাথে ১০ বছর আগে একটি জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ শুরু হয়। সেই জমির রায় আমার পক্ষে আসে। এরপর থেকে আলী আকবর চুরি, জালিয়াতি, ১৪৪ ধারা ও ৭ ধারাসহ ৭টি মামলা করে। এসব মামলায় আমিসহ আমার ছেলেদের আসামী করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে জীবননাশের হুমকিও দেয়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। রোববার মেশিন চুরি মামলার তারিখ ছিল। সেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন গ্রামবাসি বলেন, মেজবাহ যে মেয়েটিকে বিয়ে করেছিল ওই মেয়েটিকে তাদের এলাকার একটি ছেলে পছন্দ করতো। কিন্তু, মেয়েটি ওই ছেলেকে পছন্দ করতোনা। হয়তো প্রতিশোধ নিতে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।
অভিযুক্ত আলী আকবর সিকদারের  স্ত্রী হাদিয়া বেগম (৬৫) জানান,  আমার স্বামী মামলায় হাজিরা দিতে সকালে গোপালগঞ্জ আদালতে গিয়েছেন। জমিজমা নিয়ে তাদের সাথে বিরোধ আছে, কিন্তু এঘটনার সাথে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে। তবে, তদন্তের পর হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য জানা যাবে। এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।