1দৈনিক বার্তাঃ নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের তিন কর্মীর। এ ঘটনায় মুগদা, বাড্ডা ও  তেজগাঁও থানায় পৃথক তিনটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এছাড়াও ভাটারা থানায় একটি অজ্ঞাতনামা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা  থেকে জবির তিন ছাত্রদল কর্মীসহ ৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন বলে দাবি করছেন নিখোঁজদের স্বজনরা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলকর্মীরা। এ ঘটনায় র‌্যাব-১ এর সদস্যরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

নিখোঁজ ছাত্রদলকর্মীরা হলেন- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের আলামিন ও মাযহারুল ইসলাম রাসেল, দর্শন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের আসাদুজ্জামান রানা। নিখোঁজরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল  নেতা মামুন সরকারের অনুসারী। এছাড়াও নিখোঁজ অন্য ৩ জন হলেন- তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মামুন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সুমন ও তানভীর।

এ ঘটনায় র‌্যাব-১ কে দায়ি করে ছাত্রদল নেতা মামুন সরকার বলেন, র‌্যাব-১ এর সদস্যরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রদল কর্মীকে তুলে নিয়ে গেছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা একাধিকবার র‌্যাব-১ এর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও  কোন লাভ হয়নি। বিষয়টি ম্যাডামকেও (খালেদা জিয়া) অবহিত করা হয়ে হয়েছে।
এদিকে,নিখোঁজদের স্বজনরাও ঘটনার সঙ্গে র‌্যাব-১ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন। নিখোঁজ ছাত্রদলকর্মী আলামিনের ভাই ইয়াকুব আলী বলেন, গত ৪ডিসেম্বর আলামিন, রানা, রাসেল ও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মামুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সুমন ও তানভীরের সাথে দেখা করতে যায়। কিন্তু ফিরে আসার পথে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেটের কাছ  থেকে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে যায়।

র‌্যাব-১ এর সদস্যরা এর সঙ্গে জড়িত কিভাবে নিশ্চিত হলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিখোঁজদের ছবি  দেখালে ঘটনাস্থলে কর্মরত ম্রমিকরা আমাদের জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর দুটি গাড়ি ও একটি সিভিল গাড়িতে করে ৬ জনকে তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে ভাটারা থানায় তাদের কথোপকথনের রেকর্ড দিয়ে আমরা একটি অজ্ঞাতনামা মামলা করি। কিন্তু এরপর ওই শ্রমিকদের আর এ এলাকায় দেখা যায়নি।

ইয়াকুব আলী বলেন, আমরা বিভিন্ন থানায়,কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর কারাগারে খুঁজেও তাদের হদিস পায়নি। তবে পুলিশ ও র‌্যাব-১ এর সঙ্গে আমরা ৬ পরিবার মিলে  যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারা আমাদের কোন সহযোগীতা করছেন না।

তবে রাজনৈতিক কারণে তারা নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিখোঁজরা ছাত্রদলের পদপ্রাাপ্ত নেতা নন। তাদের সাথে কারো শত্রুতাও নেই। এমন হতে পারে কেউ কোন অপরাধের সাথে জড়িত কিংবা কাউকে সন্দেহভাজন ভাবে ধরা হয়েছে। কিন্তু ৬ জন মানুষ একসঙ্গে এতদিন ধরে নিখোঁজ থাকা বিস্ময়কর।

এ অভিযোগের বিষয়ে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক  লে. কর্ণেল কিসমৎ হায়াৎ বলেন, ঘটনার দিন র‌্যাব-১ এর  কোনো দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা  থেকে কাউকে আটক করেনি। । ঐ দিন ‘ প্রেসিডেন্ট পার্কে’ একটি সম্মেলন থাকায় আমিসহ র‌্যাব-১ এর সদস্যরা  সেখানেই ব্যস্ত ছিলাম। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর  থেকে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।