100দৈনিক বার্তাঃ   গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু রাজনীতি নির্বাসনে পাঠিয়ে বর্তমানে ক্ষমতাসীনরা গডফাদারের রাজনীতি শুরু করেছে।তাই ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন,জনগণের বিরুদ্ধে সরকারের অত্যাচার নির্যাতন যে কোন সময় গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিতে পারে। তখন অবৈধ অনির্বাচিত মন্ত্রী-এমপিরা কেউই পতন ঠেকাতে পারবেন না।মঙ্গলবার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি’র  কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে অবস্থান করছে। এ যুদ্ধের  নেতৃত্ব দিবেন  দেশনেত্রী  বেগম খালেদা জিয়া।তিনি জানান,  বুধবার মুন্সীগঞ্জ  জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে  যোগ  দেয়ার উদ্দেশ্যে  চেয়ারপারসন  বেগম খালেদা জিয়া দুপুর  দেড়টায় গুলশানের বাসা ত্যাগ করবেন।

বুধবার মুন্সীগঞ্জে ব্এিনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনসভাকে  কেন্দ্র করে সরকার বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বাধা এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।এক্ষেত্রে সরকারের কোনো ষড়যন্ত্র থাকলেও সেটি যথাসময়ে জানা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন,আমাদের মুন্সীগঞ্জের নেতারা জানিয়েছেন, জনসভার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। এখনো  কোনো বাধা পাইনি।তার মানে সরকারের সহযোগিতা পাচ্ছেন?- এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে রিজভী বলেন, এখনো বাধা পাইনি।তবে সরকারের কোনো ষড়যন্ত্র থাকলে যথাসময় জানতে পারবো।

তিনি জানান, প্রস্তুতির প্রায় ৯৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে, বিকেলের মধ্যে শতভাগ হবে। এ কর্মসূচি সফল করতে সবাই  চেষ্টা করছেন।সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দিন-রাতের  কোনো মুহূর্তেই বিরোধী দলের  নেতাকর্মীদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের উপায়  নেই। সরকার বিরোধীশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে নিজেরা আজীবনের সুখময় জীবনের ব্যবস্থা করছে জনগণের রক্ত পায়ে মেখে।

রিজভী বলেন, বেলা থাকতেই  শেষ করে ফেলতে হবে। তাই তারা তাড়াহুড়া করে এসব করছে।

তিনি বলেন,এদেশে গণতন্ত্র এখন নির্বাসনে।দেশে এখন গডফাদারদের শাসন চলছে।দেশে এখন  নৈতিকতার  কোনো মূল্য  নেই। জনগণের শক্তিকে এরা কখনোই মূল্য দেয়নি। জনগণের নিরাপত্তা যেন দলের লোকদের হাতে।তিনি বলেন, মোহভঙ্গ, হতাশ জনগণ এখন লড়াইয়ে প্রস্তুত।

দেশে অস্বাভাবিক জরুরি অবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ সরকার বিশ্বের সকল নিষ্ঠুর শাসকদের ছাড়িয়ে  গেছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের রক্তে নিজের হাত রঞ্জিত করে অনির্বাচিতদের নিয়ে  দেশ পরিচালনা করছেন।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রিজভী বলেন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে। বিরোধী দলের  নেতা-কর্মীদের প্রতিটি রক্তের  ফোঁটায় হাজার হাজার জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্ম হবে। বিরোধী দল বিনাশে সরকার নির্মম কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দফতরের দায়িত্বে থাকা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, বর্বরতম পরিকল্পনা ও সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে গত ৫ জানুয়ারির একতরফা  ভোটারবিহীন নির্বাচন করার পরে তারা জনগণের সকল অধিকার একে একে কেড়ে নিয়েছে।বিরোধী দলের রাজনৈতিক অধিকার গণতন্ত্রেরপ্রাণশক্তি। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বিরোধী দল বিনাশে নির্মম কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে উন্মুক্ত কিংবা ঘরোয়া  কোথাও সভা সমাবেশ করতে দিতে তারা আতংকগ্রস্ত ও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। তারা একটি মনস্তাত্বিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর কারণ  দেশব্যাপী তাদের অপকর্ম এবং মানুষের রক্তঝরানো কর্মসূচি। তারা ঘোর দুর্দিনে  দেশকে ঠেলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের লালিত পালিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অতি সক্রিয় ভূমিকায় একটি ফ্যাসিবাদী সরকারেরই সুষ্পষ্ট চিত্র ফুটে উঠে।

দেশে এক অস্বাভাবিক জরুরি অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এটির সাথে বিশ্বের  কোনো দেশেরই বিভৎস নির্মম শাসনের তুলনা করা যাবেনা। বর্তমান শাসন ব্যবস্থা বিশ্বের সকল নিপীড়ক নিষ্ঠুর শাসকদের দৃষ্টান্তকে অতিক্রম করেছে। দু:শাসনের এক অন্ধকারতম সময় গ্রাস করেছে সমগ্র জনজীবনকে। বিরোধী দলগুলোর প্রতি এক জন্মান্ধ বিরোধীতা প্রধানমন্ত্রীর মাথায় চিরস্থায়ীভাবে  চেপে বসেছে।

তিনি আরও বলেন,গণতন্ত্র ও সংবিধানে সভা সমাবেশ করার যে অধিকার  সেটিকে তারা রাষ্ট্রের দমন যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে নির্মমভাবে প্রতিহত করছে।  দেশজুড়ে গুম, খুন, অপহরণের সংস্কৃতিতে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে একটা নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। কদাচার, অনাচার, গুম, খুন, গুপ্তহত্যা এবং চরম দুর্নীতিতে দেশব্যাপী আর্তনাদ ও হাহাকারে তাদের মোটেও বোধোদয় হয়না। দুর্নীতি এদের সময় পাগলা  ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছে।

আওয়ামী লীগ ইতিহাস থেকে কখনোই শিক্ষা  নেয়নি, বরং ইতিহাসের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব,মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।