11দৈনিক বার্তাঃ জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন,শিগগিরই তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে।বুধবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরামের সেরা সাংবাদিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমের নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বানও জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ নীতিমালা প্রণীত হলে সংবাদ কর্মীরা তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবেন।মানবিক দিক বিবেচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো পরিবারের মুখের সামনে বুম ধরা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

তিনি বলেন,দুর্ঘটনা ও মানবিক বিপর্যয়ের সময় ক্ষতিপ্রস্ত পরিবারের প্রতিক্রিয়া নেওয়া হয়।এতে শিশুসহ সব শ্রেণির মানুষের মাঝে বিরূপ প্রভাব পড়ে। দর্শকরা এ নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। মানবিক দিক বিবেচনা ও দায়িত্বশীলতার দিক থেকে এসময় প্রতিক্রিয়া নেওয়া উচিত নয়।কয়েকটি দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো কোনো দেশে যত বড় ঘটনাই হোক না কেন দর্শকদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে এমন কিছু দেখায় না।

টেলিভিশন মিথ্যা সম্প্রচারের কেন্দ্র নয় উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, টকশো’ আর আলোচনার নামে ইচ্ছে মতো যা খুশি তা সম্প্রচার করা টেলিভিশনের নীতি বর্হিভূত।মহাজোট সরকারের সময় দলীয় লোকজন অপরাধ করে পার পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপরাধ করে দলীয় লোকজন পার পায় না বলে ইতোমধ্যে তার প্রমাণ পেয়েছেন। এর আগে অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনার এমন সংস্কৃতি তৈরি হয়নি।

খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তার আমলে দলের কোন্দলে অপরাধী নিহত হয়েছেন, সেখানেও তিনি গেছেন।শিগগিরই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা অনুমোদিত হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিভিশনের বিরুদ্ধে দর্শকদের বিস্তর অভিযোগ। ইতোমধ্যে সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া তৈরি হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দর্শক, টিভি মালিক ও সাংবাদিকদের অধিকার সংরক্ষিত হবে।

সম্প্রচার নীতিমালার পাশাপাশি টেলিভিশন মালিকদের নিজস্ব একটি নীতিমালা তৈরি করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশি চ্যালের প্রতি দর্শকদের আকৃষ্ট করতে ভালো মানের খবর, বিজ্ঞাপন ও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলে দর্শকরা বিদেশি চ্যানেলের প্রতি আকৃষ্ট হবে না।গুণ অর্জন হয়েছে এবার মান অর্জন করতে হবে বলেও টেলিভিশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

ক্যাবল টিভি মালিকদের প্রতি অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, আইন অনুসারে প্রথম ৩০টি চ্যানেলের মধ্যে দেশীয় চ্যানেল থাকবে। কিন্তু খাতির ও দলীয় মনোভাব থাকায় এ আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে। দর্শকদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও দেশীয় চ্যানেলের আসক্তির জন্য এসব করা উচিত নয়।দর্শকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে ইনু বলেন, ক্যাবল টিভি মালিকরা অতিরিক্ত চার্জ ও দর্শকদের হয়রানি করে। এসব বন্ধ করলে ক্যাবল টিভি মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার কাজ করবে।

টেলিভিশন মালিকদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন,শেখ হাসিনা বা হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে গঠনগত সংবাদ প্রচার করলে কোনো সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হবে না বলে গ্যারান্টি দিচ্ছি। কিন্তু কোনো উস্কানি দেওয়া যাবে না।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ২২ জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও দর্শক জরিপে সেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার পেলেন বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিড়িয়ায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।বাংলাদেশ ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরাম এ জরিপ ও পুরস্কারের আয়োজন করে।

সংগঠনটি ২০০৬ সাল থেকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ,নিরপেক্ষ ও অনুসন্ধানমূলক রির্পোট পর্যালোচনা করে বিচারকের রায় ও দর্শক জরিপের মাধ্যমে পুরস্কার প্রদান করে আসছে।২০১৩ সালের সেরা সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল হিসেবে পুরস্কার লাভ করে একাত্তর টিভি এবং সেরা বিনোদন চ্যানেল হিসেবে পুরস্কার লাভ করে এটিএন বাংলা।

সেরা টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বার্তা প্রধান খালেদ মহিউদ্দিন এবং সেরা উপস্থাপিকা হিসেবে একাত্তর টিভির নবনীতা চৌধুরী,সেরা সাংবাদিকতায় চ্যানেল আই এর দিনাজপুর স্টাফ রিপোর্টার শাহ আলম শাহী, একুশে টিভি’র মিরাজ মিজু পুরস্কার লাভ করেন।

সেরা শিশুতোষ অনুষ্ঠান ক্যাটাগরিতে এটিএন বাংলার আমরা করবো জয়,সেরা টকশো ক্যাটাগরিতে একাত্তর টিভির একাত্তর জার্নাল পুরস্কার লাভ করে।

বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন, এটিএন বাংলার হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, কোয়াব’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ, সাবেক মহাসচিব নিজাম উদ্দিন মাসুদ, বিটিভি ওয়ার্ল্ড’র সিইও বাহার উদ্দিন খেলন,মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সলিমুল্লাহ সেলিম,ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ আগারওয়াল।

২০১২ সালে সেরা সাংবাদিকতার পুরস্কার লাভ করেন আরটিভি’র আরাফাতুর রহমান,মাইটিভি‘র প্যাট্রিক ডি কস্তা, সময় টিভির রতন সরকার, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি’র আহসান হাবীব অপু।