01দৈনিক বার্তাঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার শাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেছেন, টিআইবি (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) উদ্দেশ্যমূলকভাবে দুদকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। তাই এমন একদিন আসবে, যেদিন তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে দ্বিধাবোধ করা হবে না।

টিআইবির অর্থের উৎস ও গবেষণা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দুদক সচিব।সংবাদ সম্মেলন করে দু’একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলেই সব হয়ে যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর- জেলা ও উপজেলায় দুর্নীতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় কয়েকটি শ্রেষ্ঠ কমিটিকে পুরস্কার দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শাহাবুদ্দিন বলেন,দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এক্ষেত্রে সরকারি নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এতকিছুর পরও কেউ কেউ দুদককে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করেন, যা খুবই দুঃখজনক।

এসময় বর্তমান সরকারের আমলে দুদকের সফলতা ও কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন শাহাবুদ্দিন চুপ্পু। বিগত কয়েক বছরে দুদকের নানা সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুদক একটি স্বাধীন ও কোনোধরনের প্রভাবমুক্ত একটি সংস্থা।এসময় দুদকের আওতায় বিচার করা বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা হলেও তা এখনো দুদকের ফান্ডে জমা হয়নি। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে কোকোর ফিরিয়ে আনা টাকা দুদকের ফান্ডে জমা দিতে অর্থমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান শাহাবুদ্দিন চুপ্পু।

শাহাবুদ্দিন বলেন,দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতকিছুর পরও কেউ কেউ দুদককে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করেন। যা খুবই দু:খজনক।দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, দুদকের একার পক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব নয়। এক্ষেত্র গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারে। তাই গণমাধ্যমকে শুধু দুদকের মামলার বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশনের কাজকে প্রচার করে গণসচেতনা বৃদ্ধি করা উচিত।

অনুষ্ঠানে টিআইবির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বলেন, ইদানীং আমাদের উপর একটা ওয়াচডগ ভর করেছে। সেটা টিআইবি। আমাদের কোনো কাজই তাদের পছন্দ না। আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা না করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সমালোচনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

তিনি আরো বলেন, অথচ তারা দেখছে না,আমরা বড় বড় দুর্নীতিবাজদের জেলে পাঠিয়েছি। এমএলএম কোম্পানির নামে সাধারণ মানুষ যেখানে প্রতারণার শিকার হতো,তা থেকে জনগণ অনেকটা মুক্ত। এমএলএম কোম্পানির রাঘববোয়ালদের আমরা শাস্তির আওতায় আনতে পেরেছি।

টিআইবির উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে চুপ্পু বলেন, আপনারা আমাদের এ সব সফলতার বিষয়ে তো কোনো প্রশংসা করেন না! কেন? উল্টো বলছেন, আমরা পক্ষপাতমূলক কাজ করছি। আমরা তো সরকারি দলের লোকদের বিষয়েও অনুসন্ধান করছি। দয়া করে আর নেতিবাচক প্রচারণা চালাবেন না’।

চুপ্পু বলেন, ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত দুদক ছিল একটি অথর্ব প্রতিষ্ঠান। এরপর ওয়ান ইলেভেনের সময় এ সংস্থাটিকে একটি বিশেষ গোষ্ঠী ব্যবহার করেছে। বর্তমানে সব বলয় ও প্রভাব থেকে এখন মুক্ত দুদক।এ সময় দুর্নীতি প্রতিরোধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ শ্রেষ্ঠ মহানগর/জেলা র্দীতি প্রতিরোধ কমিটি হিসাবে ৮ জেলা কমিটি ও উপজেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সদস্যদেরকে দুদক মনোগ্রাম খচিত ক্রেষ্ট এবং সনদপত্রসহ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান, কমিশনার (অনুসন্ধান) ড.নাসির উদ্দিন আহমেদ, চ্যানেল আইয়ে পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। অনুষ্ঠানেতে সভাপতিত্ব করেন দুদক সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী।