নাজিম হাসান/দৈনিক বার্তাঃ বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার তিন মাথার মোড় থেকে মচমইল হয়ে মোহনপুরের কেশরহাট পৌরসভার সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সংশি¬¬¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বাগমারা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার দেউলা তিন মাথার মোড় থেকে মচমইল বাজার হয়ে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের সংযোগস্থল মোহনপুরের কেশরহাট পৌরসভার তিন মাথার মোড় পর্যন্ত (বাগমারা অংশ) ১৪ কিঃ মিঃ সড়ক সংস্কার কাজের জন্য সম্প্রতি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২ কোটি ১৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ অর্থ পাওয়ার পর গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর রাজশাহীস্থ ‘মেসার্স হোসেন এন্টার প্রাইজ’ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটির সংস্কার কাজের দায়িত্ব পায়। বর্তমানে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অধীনেই সড়কটির রক্ষনাবেক্ষন ও সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু সড়কটির সংস্কার কাজ সিডিউল অনুযায়ী না করে দায়সারাভাবে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া সড়কটির সংস্কার কাজের কার্যাদেশ প্রদানের প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ১৮% (আড়াই কি:মি:)।
গতকাল সরজমিনে গিয়ে এলাকবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা, বাসুপাড়া, কাচারী কোয়ালীপাড়া, দ্বীপপুর, বড়বিহানালী, ঝিকরা, যোগীপাড়া, হামিরকুৎসা, গোয়ালকান্দি ও মাড়িয়া ইউনিয়নের এবং উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট সংযোগ সড়ক। এ সড়কটি ছাড়া এলাকাবাসীদের চলাচলের আর অন্য কোনো বিকল্প রাস্তা নেই। এ সড়কযোগে প্রতিদিন ১৫ মিটিন পরপর ভবানীগঞ্জ থেকে মচমইল বাজার হয়ে রাজশাহীগামী বাস চলাচল করে। এছাড়া সিএনজি, মিশুক, অটোরিক্সা, লচিমন, করিমন, ভুটভুটি, ট্রলি ও ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনযোগে রাজশাহী, নওগাঁ ও ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে মালামাল সরবরাহ করা হয়। কাজেই মালামাল আদান-প্রদান ও এলাকাবাসীদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এ সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ন। কিন্তু সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানের অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় এলাকাবাসীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। অবশেষে জনগনের প্রবল দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হলেও শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
মচমইল ডিগ্রী কলেজের অধ্যাপক মালেক মেহমুদ, প্রধান শিক্ষক ময়েজ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, সার ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল ও কৃষক আফজাল হোসেন অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে জানান, সড়কটির সংস্কার কাজের শুরুতেই পরিত্যক্ত ও নিম্ন মানের ইটের খোঁয়া দিয়ে ভরাট দিয়ে তার উপর সামান্য পরিমান পিকেট ইটের খোঁয়া দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশি¬¬¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বলেছেন, এ পর্যন্ত সড়কটির যেটুকু সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে তা সিডিউল অনুযায়ী সঠিকভাবেই করা হয়েছে। তবে অবশিস্ট কাজে অনিয়মের চেষ্টা করা হলে তাতে বাধা দেওয়ায় সংশি¬¬ষ্ট ঠিকাদারের পক্ষের লোকজন আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে সংশি¬¬ষ্ট ঠিকাদার ‘মেসার্স হোসেন এন্টার প্রাইজ’ এর মালিক আব্দুর রশিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।