PM Press Briefing-04দৈনিক বার্তাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে তাঁর দৃঢ় আশা ব্যক্ত করে বলেন, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যেকোন সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।বুধবার সকালে জাপানের জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশটির স্থানীয় মিডিয়ার সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি বলেন, নীতিগত ভিন্নতা থাকা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কোন সমস্যা তৈরি হলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ভারতের সাথে আমরা সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পারবো। মোদির নিজস্ব ধ্যানধারণা রয়েছে। এখন তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আমি আশা করি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনিও প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে নিজস্ব ভুমিকা পালন করবেন।

নরেন্দ্র মোদী ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কোন বাধা তৈরি হবে কিনা- জাপানের এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদকালে ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তির কারণে এ নিয়ে দুদেশের দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান হয়। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির কথাও উল্লেখ করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় দুদশকের জঙ্গিবাদের অবসান ঘটে।ভারতের বিদ্যমান পররাষ্ট্র নীতির আলোকে তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় থাকার আশা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ভারতের বিদ্যমান পররাষ্ট্র নীতির আলোকে তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় থাকার আশা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুবই স্পষ্ট- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গেই বৈরিতা নয়। আমরা যখন থেকে সরকার গঠন করেছি, প্রতিবেশির সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি।ভারতেরও একটি পররাষ্ট্রনীতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করব তারা সে নীতি অনুসরণ করবে।

শেখ হাসিনা তাঁর তিন ধাপে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালীন ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারতে ক্ষমতাসীন চারটি পৃথক রাজনৈতিক দলের সরকারের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন এবং সর্বশেষ মোদী সরকার হচ্ছে তাঁর মেয়াদে পঞ্চম।

তিনি বলেন, জনগণকে কিভাবে রক্ষা করতে, নিরাপত্তা দিতে ও ভাল রাখতে হয় তা আমি জানি। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ ছোট ও ভারত একটি বড় দেশ হতে পারে, কিন্তু জনসংখ্যার বিবেচনায় আমরাও একটি বড় দেশ। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং আমরা আমাদের জনগণের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি।প্রতিবেশি দেশগুলোর প্রতি সব সময় বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় বলে আসছি যে আমাদের অভিন্ন শত্র“ দারিদ্র এবং এর বিরুদ্ধে আমরা একত্রে লড়াই করছি।

তিনি বলেন, আমি সব সময়ই প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছি, যেন আমরা একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে পারি।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের অস্থায়ী আসনে বাংলাদেশ জাপানকে সমর্থন করবে কিনা, এমন এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান বন্ধুত্বপূর্ণ দুটি রাষ্ট্র এবং ঢাকা টোকিওর এ বন্ধুত্বের গুরুত্ব দেয়।১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাপানের সর্বাত্মক সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেবল জাপানের সাধারণ জনগণই নয়, জাপানি স্কুলশিশুরাও তাদের টিফিনের অর্থ বাংলাদেশের শরনার্থী ও তাদের শিশুদের জন্য প্রদান করে অবদান রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, শুধু এটাই নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশ পূর্নগঠনের কাজ শুরু করলেন, তখন যে কয়েকটি দেশ সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিল, জাপান তাদের অন্যতম।তিনি বলেন, আমরা সব সময়ই জাপানের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। জাপান আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু এবং বাংলাদেশ পরীক্ষিত এ বন্ধুর জন্য যে কোন পদক্ষেপ গ্রহণে প্রস্তুত।