2দৈনিক বার্তাঃ আমাদের কোনো মুখোশ নেই। পরিচয় একটাই—আমরা টিআইবি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীর একটি হোটেলে টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে দুর্নীতি দমন কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর বক্তব্যের সমালোচনা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ মন্তব্য করেন। হোটেল অবকাশে ‘জাতীয় শুদ্ধতার কৌশল: বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশে এ সংবাদ সম্মেলন করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দুদক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মো. সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন, টিআইবি বিদেশ থেকে আনা টাকা গবেষণায় কতটা ব্যয় করছে, তার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সময় হলে এ বিষয়ে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করা হবে।
টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, টিআইবি নিয়ে একজন কমিশনার যেভাবে বলেছেন তাতে আমি বলব আমরা বিব্রত, হতবাক হয়েছি। উনি যে ভাষা ও বডি ল্যাংগুয়েজ দেখিয়েছেন, তাতে তিনি নিজেকেই বিব্রত করেছেন। টিআইবির মুখোশ উন্মোচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকেই মুখোশ উন্মোচন করুন। তদন্তে আমরাও সাহায্য করব। আর যদি সমালোচনার কারণেই এমন হয়, তবে বলব আরেকবার ভেবে দেখুন।
দুদক প্রতিষ্ঠার পেছনে টিআইবির ভূমিকার কথা তুলে ধরে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদক প্রতিষ্ঠার দাবি আমরাই করেছিলাম। এর মূল খসড়াও আমরা করে দিয়েছিলাম। আমরা চাই প্রতিষ্ঠানটি আরও কার্যকর হোক। ‘আপনারা কতটা স্বচ্ছ। বিদেশি টাকায় যে কাজ করছেন, তা কতটুকু গবেষণার কাজে লাগানো হচ্ছে?’ টিআইবির উদ্দেশে সাহাবুদ্দিনের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিআইবি বিদেশি অর্থায়নে চলে, আমরা এটা অস্বীকার করি না। এটা আমরা আগেও বলেছি। সরকারের সম্মতি ছাড়া টিআইবি একটি টাকাও গ্রহণ করে না, খরচও করে না, করতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা জবাবদিহি করি। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য বেমানান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন তুলে ধরেন টিআইবির রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লাইলা ইসলাম ও সাধন কুমার দাশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এবং ট্রাস্ট্রিবোর্ডের সদস্য হাফিজ উদ্দীন খান প্রমুখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন সংশোধনের মাধ্যমে দুদককে দুর্বল করা হয়েছে এবং তদন্ত পরিচালনায় সরকারের হস্তক্ষেপ রয়েছে। দুদক আইনের আনীত সংশোধনীর ওপর হাইকোর্টের রহিতকরণ নির্দেশনা জারি সত্ত্বেও এখনও তা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ নেই।
এতে বলা হয়, অর্থপাচার রোধ আইনী কাঠামো তৈরি হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রয়োগের প্রতিবন্ধকতা থাকায় বিদেশে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের সাফল্য উল্লেখযোগ্য নয়। স্থানীয় নাগরিকদের অংশগ্রহণে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি এবং সততা সংঘ গঠন করে জনসচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু দুদকের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রমে সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের আনুষ্ঠানিক কোনো জোটবদ্ধতা নেই।