1দৈনিক বার্তাঃ গণজাগরণ মঞ্চ,ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিকে আশ্বস্ত করলেন আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক। আইনমন্ত্রী বলেন, জামায়াতের বিচার সঠিক সময়ে হবে। আইনের নিয়ম-নীতি মেনেই তাদের বিচার সম্পন্ন করা হবে।এ নিয়ে অধৈর্য্য হওয়ার কিছুই নেই।আপনারা আমার উপর আশস্ত থাকতে পারেন।

শনিবার ঢাকা বারের বড় টিনসেড মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বার শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন-২০১৪ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে শেষ করেছি। ১০০ বছর পরেও এ বিচারের মধ্যে কোন ব্যত্যয় খুজে পাবেন না। দু’দিনের মধ্যে বিচার শেষ করিনি। তাই বলতে চাই জামায়াতের বিচারও সঠিক ভাবে করা হবে। আওয়ামী আইনজীবীদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আমি আইন মন্ত্রী হিসেবে বলতে চাই। আপনাদের যত রকমের সাহায্য সহযোগিতা করা দরকার আমি তা করবো।

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বেয়াদব ছেলে হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, এমপি। আনিসুল হক বলেন, তারেকের জন্মই বোধ হয় বিদেশে হয়েছে! এজন্যই সে সব সময় বিদেশে বসে কথা বলে। দেশে আসতে সাহস পায় না। সে চরম বেয়াদব একটা ছেলে। সে তার বাবাকেই শ্রদ্ধা করতে জানে না; তাহলে অন্যকে শ্রদ্ধা করবে কীভাবে!

তারেক রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী বলেন,তারেক সেন্ট জোসেফে পড়াশুনার সময় বেয়াদবি করায় তাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা শুধু আল¬াহই জানেন!এজন্যই সে বিদেশে বসে উল্টাপাল্টা কথা বলছে’ বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।এ সময় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এমপি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ভোট চুরির সংস্কৃতি চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তিনিই প্রথম ভোট ডাকাতি শুরু করেছিলেন। খালেদা জিয়া নির্বাচনে না এলে সে দোষ কার!

যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার সম্বন্ধে আমু বলেন, বর্তমানে বিদ্যমান আইনে জামায়াতের বিচার সম্ভব নয়। তাই,জামায়াতের বিচার শুরুর আগে আইন সংশোধন করার প্রয়োজন আছে। জামায়াত যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে, সেজন্য আইন সংশোধন ছাড়া জামায়াতের বিচার করা সম্ভব নয়।একই অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে কোন লাভ নেই। যথা সময়ে তাদের বিচার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াতের সঙ্গে আতাত করার কোন প্রশ্নই আসেনা। আতাত করা হলে নিজামীর বিচার হতো না। নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কামরুল বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিচার না করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসেছে।

নারায়ণগঞ্জ ও ফেনীর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চলছে। বিরোধী দল ও এক শ্রেণির মানুষ উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে এ তদন্তকে প্রভাবিত করতে চাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন কামরুল। এ ঘটনার সুষ্টু তদন্তের জন্য উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরোধী দলকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিকদের ‘এথিক্স’ (নৈতিকতা) নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন,একজন পলাতক আসামি বিদেশে যা ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে; আর সাংবাদিকরা তা প্রচার করে চলেছেন। একজন ফেরারি আসামির বক্তব্য প্রচার করা কোনো এথিক্সে পড়ে না।তারেক রহমানকে বেয়াদব উলে¬খ করে তিনি বলেন, তারেক শুধু বেয়াদব’ নয়, এ সংক্রান্ত যত রকম বিশেষণ দেওয়া যায়, তার সবগুলোই তারেক রহমানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বার শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ হেমায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম, এমপি।

এর আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বার শাখার সম্মেলন সম্মেলন উদ্বোধন করেন।১১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ঢাকা বার শাখার এ সম্মেলন শুরু হয়েছে। এর আগে ২০০৩ সালের ১১জুন সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।এ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট শেখ হেমায়েত হোসেন সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মো. মোখলেসুর রহমান বাদল সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর গত ১১ বছর আর কোনো সম্মেলন করতে পারেনি সংগঠনটি।

গত কয়েক বছরের ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ব্যাপক ভরাডুবি হয়, পুরনো কমিটি দিয়ে চলা এ সংগঠনটির। এর ফলে কমিটিতে স্থবিরতা নেমে আসে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির ১৭ হাজার সদস্যের কমপক্ষে ১৩ হাজারই গত ১১ বছরে সদস্যপদ লাভ করেন। মূলত তাদের সঙ্গে পুরনো কমিটির পরিচয় ঘটেনি।তাদের মধ্যে রাজনীতি থেকে উঠে আসা চৌকস আইনজীবী থাকলেও দলের কোনো নেতৃত্বে আসতে পারেননি।এ সম্মেলনের ফলে সংগঠনটি চাঙ্গা ও বেগবান হবে বলে মনে করছেন সংশি¬ষ্টরা। এবারের কমিটিতে পুরনো ও নতুন নেতৃত্বের সমন্বয় ঘটবে বলে আশা করছেন তারা।