সরকার অভিবাসন ব্যয় কমাতে চাইলেও উল্টো পথে হাঁটছে বেশ কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি। তাদের বিরুদ্ধে উচ্চদামে ভিসা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর উঠেছে, সাত লাখ পর্যন্ত টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে সৌদি ভিসা।

Saudi Visit Visa for EU

দৈনিক বার্তা – নিজের সদস্যদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ খোদ জনশক্তি রপ্তানিকারকদের প্রতিষ্ঠান বায়রা (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি)। প্রতিষ্ঠানটি সরকারের কাছে এসব সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছে। এই প্রথম বায়রা তার সদস্যদের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৌদি আরবের সেদের গ্রুপ ট্রেডিং অ্যান্ড কন্ট্রাক্টিং কোম্পানি থেকে এক হাজার ৩শ’ ২২টি ভিসা বের হয়েছে। বাংলাদেশের রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি ৪০০টি এবং অ্যাসুরেন্স সার্ভিসেস কোম্পানি রিক্রুটিং এজেন্সি ৬০০টি ভিসা অতিরিক্ত মূল্যে কিনে নিয়েছে। বাকিগুলোও কেনার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে এসব রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে ভিসাগুলো ছয় লাখ টাকা করে বিক্রি করে দিয়েছে। এমনকি শ্রমিকদের মেডিকেল চেকআপও হয়ে গেছে।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাসার উচ্চমূল্যে সৌদি ভিসা বিক্রয়কারী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে একমত হয়ে বায়রা অভিবাসন ব্যয় কমানোর বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু সরকারের চেষ্টা এবং বায়রার উদ্যোগকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিছু এজেন্সি অধিক মুনাফার আশায় সৌদি আরবের ভিসা বিক্রি করছে ৬-৭ লাখ টাকায়।

ফলে অতিরিক্ত খরচে বিদেশে গিয়ে শ্রমিকরা সময়মতো বিনিয়োগ করা টাকা তুলতে পারছে না। কারণ তাদের ভিসার মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেওয়া। এরপর তারা অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে বায়রা সভাপতি আবুল বাসার বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপালের তুলনায় আমাদের দেশের অভিবাসন ব্যয় অনেক বেশি। সরকার সে ব্যয় কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। বায়রাও সরকারের সঙ্গে একমত। সে লক্ষ্যেই আমরা অসাধু এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা বেশি মূল্যে ভিসা কিনে এনে শ্রমিকদের ঠকাচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি বলেন, তাদেরকে বায়রা থেকে বহিষ্কার না করা হলেও সতর্ক করেছি। আমরা চাই সবাই সৎভাবে ব্যবসা করুক।

এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অতিমূল্যে ভিসা বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাও আবার বায়রার পক্ষ থেকে। সাধারণত এমনটি হয় না। অভিযোগ আমলে নিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়। এমনকি তাদের নিবন্ধনও বাতিল হতে পারে।