hasina
বিএনপির দুর্নীতির কারণে অর্থায়ন বন্ধ করেছিলো বিশ্বব্যাংক:প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা,৬জুলাই, দৈনিক বার্তা : বিএনপির দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক বিদুৎ এবং যোগাযোগখাতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার সচিবালয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পরিদর্শনে এসে বক্তব্য প্রদানকালে পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।

দেশের যোগাযোগ খাতকে কোনো মন্ত্রী-এমপির ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার না করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রোববার সকালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠকে এ হুঁশিয়ারি ঊচ্চারণ করেন তিনি।বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন শেষে এক বৈঠকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দেশে ৪১টি সেতু নির্মাণের এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এক হাজার ২৬৬ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করা হবে।এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চার লেনের কাজ শিগগিরই শেষ হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা এ সময় তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের মধ্যে ঢাকাবাসী মেট্রোরেলের সুবিধা পাবে।এর আগে সর্বশেষ ১৯ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে আসেন শেখ হাসিনা। ২২ মে মৎস্য ও প্রাণি সম্পাদ মন্ত্রণালয়, ১৮ মে তথ্য মন্ত্রণালয়, ১৫ মে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেন তিনি।

৭ মে বেসামরিক বিমান, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, ১০ মে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ৩০ এপ্রিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।গত ১২ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে শ্রম মন্ত্রণালয়; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরের শেষ দিন বাতিলের কথা জানায়, যা বোর্ডেও অ্যাপ্র“ভ হয়নি।কোনো একটা বিশেষ মহল, আমাদের দেশেরও কিছু লোক এবং আমেরিকার প্ররোচনায় এটা বাতিল করল। শেখ হাসিনা বলেন, অথচ যখন প্রজেক্ট হাতে নেই, বিশ্বব্যাংক যখন বিশাল অর্থ নিয়ে আসল। তারা খুব বেশি উৎসাহ দেখাল। শেষ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট বাতিল করে দিল, বলল দুর্নীতি হয়েছে। এটাকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করলাম। কী কী ডকুমেন্ট আছে, আমাদের দেখান।

যোগাযোগ এবং বিদ্যুত বিএনপি আমলের দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক অর্থ বন্ধ করে দিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট একটা কাগজ দেখালেন। আমি বললাম এটা তো বিগত সরকারের আমলের। মন্ত্রীও আমার না। সেটা ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের কাজের। যে কারণে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে শুরু করি। যদি বসে থাকতাম জীবনে শুরু করতে পারতাম না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন চ্যালেঞ্জ করলাম তারা কোনো এভিডেন্স দিতে পারল না। একা রিপোর্ট পাঠালো। পাসেরন্টেজ ইত্যাদি। কার ডায়রিতে নাকি লেখা আছে কে কত পার্সেন্টেজ পান। আমার সঙ্গে তো অনেকের দেখা হয়। হিলারির সঙ্গে দেখা হলো, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী-এমপিরা আসে, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে কথা বলে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলি। এগুলো লিখে রাখি। এটা যদি ডকুমেন্ট হিসেবে দেয়…। এভাবে আমাদের মোকাবিলা করা হয়েছে। কাজটা সহজ ছিল না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন বললাম নিজস্ব অর্থায়নে করব, তখন তারা নানা শর্ত দিল অমুক অমুককে মামলা দিলে, অ্যারেস্ট দিলে তারা অর্থ দেবে- এসব চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ শুরু করি। তাই আপনাদেরও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এটা দেশের প্রেসটিজ।

পদ্মা সেতু নতুন একটা ইউনিট হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মার কাজ সঠিক সময়ে শেষ করতে চাই। আর কোনো বাধা নয়। বাংলাদেশ পারে, পারবে। অন্যের উপর কেন নির্ভরশীল থাকতে হবে। যদি বিজয় অর্জন করতে পারি, সামান্য একটা ব্রিজ তৈরি করতে পারব না। এটা কথা হলো? অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কাজ শুরু করেছি, সেটা শেষ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাঙালি পারে, যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য, যে কোনো কাজ সহজ না, বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হয়। আমাদের ২১ বিলিয়ন রিজার্ভ আছে। ২/১ বিলিয়ন খরচ করা ব্যাপার না।প্রতি সেকেন্ডে কত গাড়ি চলবে তার হিসেব মাথায় রেখে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, শুধু রাস্তা তৈরি করাই নয়, তার মেইনটেনেন্সের (রক্ষণাবেক্ষণ) জন্যও খরচ হয়। কোন রাস্তা কতটুকু ব্যবহার হবে, প্রতি সেকেন্ডে কত গাড়ি চলবে, কতটুকু যানবাহন ধারণ করবে সে হিসেবে প্ল্যান- প্রোগ্রাম তৈরি করতে হবে।

কাজের গতি আনতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ধারাবাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রতি বছরেই বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকে। এবারও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যখন যা প্রয়োজন তা দেওয়া হয়।

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে টেকসই ও মানসম্মত সড়ক অবকাঠামো গড়ে তুলতে ১৪৬টি নতুন গ্রকল্প গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে ১০০টি প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি, বাকি গুলোর কাজ চলছে।

শেখ হাসিনা জানান, চলতি অর্থ বছরে মেট্রোরেল, ঢাকা-চট্রগ্রামে মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণসহ ১২১টি প্রকল্প বাস্তবায়ণ করা হচ্ছে। এ অর্থবছরে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত হবে।২০১৯ সালের মধ্যে ঢাকাবাসী মেট্রো রেলের সুবিধা পাবে বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৪১টি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, ইতোমধ্যে সারাদেশে ১ হাজার ২৬৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৩ হাজার সকড় প্রশস্ত ও মজবুত করা হয়েছে।

ঢাকা-সিলেট সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে জানিয়ে হাসিনা বলেন, হাতের কাজ শেষ করে আগামীতে আমরা এ কাজ করব।আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেস সড়ক নির্মাণ শুরু হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা জানান,যমুনার পাশ দিয়ে আরেকটা রেল সেতু করার জন্য জাপান প্রস্তাব দিয়েছে। কক্সবাজার-মহেশখালী রাস্তা, পাওয়ার প্ল্যান্ট, এলএনজি ট্রিটমেন্ট নির্মাণ করা হবে।

হরতালের নামে বাস পোড়াওয়ে ৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত বিআরটিসি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। বর্তামানে বিআরটিসিকে লাভজনক করা হয়েছে।

বিআরটিসি বাসে ওয়াইফাই আরো প্রসার করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ বাসেও ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ভোগ করতে শুরু করেছে।এসময় স্কুলে স্কুলে ট্রাফিক নিয়ম শেখানোর নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।ঈদ- রোজাকে সামনে রেখে উন্নয়ন কাজ একেবারে বন্ধ না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের যেন চলাফেরার সমস্যা না হয় সে দিকে নজর দিতে হবে।

পাতাল রেলের উপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দেশে পাতাল যোগাযোগে যাচ্ছে। বাংলাদেশে থাকবে না কেন? আমাদের পাতাল রেল করা যায় কি না, তা দেখতে হবে।দেশের উন্নয়ণ করতে হলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-কুনমিং পযন্ত বিসিআইএম ইকোনমিক করিডোর চীন, মিয়ানমারের সঙ্গে হচ্ছে। এতে বাণিজ্যের প্রসার হবে।এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত-নেপালের মধ্যে ত্রিদেশীয় যোগাযোগের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময় মতো পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার ওপর গুুেত্বারোপ করে সেতু নির্মাণে আর যাতে কোনো বাধা না আসে সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন।

পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়ে গেলো। এটা নিয়ে অন্য উদ্দেশ্য ছিলো। কোন কারণ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট তার শেষ কার্য দিবসে এদেশের একটি মহলের প্ররোচণায় পদ্মা সেতুর বরাদ্ধ বন্ধ করে দেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।বেলা ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সচিবালয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিয়ে সভাকক্ষে যান।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ধারাবাহিক পরিদর্শনের অংশ হিসেবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে এ বক্তব্য রাখেন। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যে কাজটি শুরু করেছি তা যেন ভালোভাবে করতে পারি সে ব্যাপারে নজর রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারলে একটা ব্রীজ বানাতে কেন পারবো না। বৈদেশিক মুদ্রার অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে এখন রির্জাভ ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার থেকে এক দুই বিলিয়ন খরচ করলে সমস্যা হবে না।

পদ্মা পাড়ে হংকং-এর মতো শহর নির্মাণ করা হবে। সেখানে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার তৈরি করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক মেলা সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু রাস্তা তৈরি করাই নয়Ñ তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য খরচ হয়। কোন রাস্তা কতটুকু ব্যবহার হবে, প্রতি সেকেন্ডে গত গাড়ি চলবে, কতটুকু যানবাহন ধারণ করবে সে হিসেবে প্লান-প্রোগ্রাম তৈরি করতে হবে।তিনি বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের বাড়ি থাকলে রাস্তা ঘুরিয়ে নিতে হবে এ রকম একটি প্রবণতা আছে। অল্প জায়গায় রাস্তা তৈরি হয়ে যেতে পারে। কিš‘ অনেক সময় তা ঘুরিয়ে নেয়া হয়। এ মানসিকতা বাদ দিতে হবে।

উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। এ জন্য প্রতিবছরই বাজেট বরাদ্দ থাকে। এবারো যোগাযোগ খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

বর্ষা,রোজা এবং ঈদকে সামনে রেখে উন্নয়ন কাজ একেবারে বন্ধ না করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের যাতে চলাফেরার সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে নজর দিতে হবে। হাতের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, যেখানে যেখানে প্রয়োজন সেখানে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

দেশের উন্নয়ন করতে হলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-কুনমিং পর্যন্ত বিসিআইএম ইকোনমিক করিডোর চীন-মিয়ানমারের সঙ্গে হচ্ছে। এতে বাণিজ্যের প্রসার হবে।

শুধু সড়ক বিভাগের আওতায় গত পাঁচ বছরে সারাদেশে ১ হাজার ২৬৬ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ এবং প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত ও মজবুত করাসহ প্রায় ৪৩ হাজার মিটার কংক্রিট সেতু নির্মাণ করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার-নবীনগর অংশ চারলেনে উন্নীত করা হয়েছে।এ অর্থ বছরেই জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরীপ শেষ হয়েছে। ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশে প্রথম এই টানেল নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৫ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, এটি নির্মিত হলে কর্ণফুলী নদীর অপর প্রান্তে নতুন নতুন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরের সাথে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ¯’াপিত হবে এবং এটি এশিয়ান হাইওয়ের সাথেও সংযুক্ত হবে।

এছাড়াও হজরত শাহজালাল আর্ন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ ৪৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজও আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শুর“ করা যাবে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

২০০৯ সালে সরকারে এসে বিআরটিসিকে পুনরায় লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার আমরা সরকারে আসার পর বিআরটিসি’র জন্য বিভিন্ন ধরণের ৯৫৮টি বাস সংগ্রহ করেছি। এখন ১ হাজার ৫৪৩টি বাস জনগণের সেবায় নিয়োজিত আছে। আমরা আরও ৩০০টি দ্বিতল বাস ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাস ও ৫০০টি ট্রাক সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ফলে বিআরটিসি’র রাজস্ব আয় ও নীট অপারেটিং প্রফিট ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আরও এগিয়ে যাব। বাংলাদেশ আজ পরমুখাপেক্ষী নয়। আমরা উন্নয়নের মডেল। তিনি সবাইকে দেশের কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বিনির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করা হবে।