Shakib-al-hasan

দৈনিক বার্তা – বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও তার মুখ ছিল ভার। সাকিব আল হাসান তখনই কি জানতেন, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শাস্তিটাই অপেক্ষা করছে সামনে? সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজ চলার সময় তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করা সাকিব এবার ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ হলেন। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক দুই ধরনের ক্রিকেটই এই সময় খেলতে পারবেন না। এমনকি অনুশীলনও করতে পারবেন না জাতীয় দলের সঙ্গে।

শাস্তির মেয়াদ এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাইরের কোনো লিগে খেলার জন্য এনওসি (অনাপত্তিপত্র) পাবেন না। আগামী আইপিএলেও তাই খেলা হবে না তার। আচরণ শোধরানো না হলে ভবিষ্যতে আজীবনের জন্যও নিষিদ্ধ হতে পারেন সাকিব। সাকিবকে ছাড়াই আগামী মাসের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির বদলে সাকিবই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দলের। এ ছাড়া নভেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজেও খেলা হবে না তার। তবে ফেব্রুয়ারিতে শুরু ২০১৫ বিশ্বকাপের আগে দলে ফিরবেন এই অলরাউন্ডার।

সোমবার বিসিবির সভা শেষে নাজমুল হাসান এই সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান। সর্বশেষ অনাপত্তিপত্র না নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগে খেলতে যাওয়া, রাগের মাথায় টেস্ট ও ওয়ানডে দল থেকে অবসর নিয়ে ফেলার মতো মন্তব্য করার পর এই শাস্তি দিল বিসিবি। তবে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, শুধু সর্বশেষ ঘটনার কারণে সাকিবের ওপর এই কঠিন শাস্তি নয়। দীর্ঘদিন ধরে সাকিবকে নিয়ে জমে থাকা অভিযোগের ভিত্তিতেই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। নাজমুল বলেন, এটি কেবল এ ঘটনার শাস্তি নয়, বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনার ফল। সাকিব দলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছিলেন। তার এসব কা- দলের পারফরম্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলেছে। ওর দেখাদেখি অন্যরাও এমনটা করার সাহস পাচ্ছে। সাকিবের মারাত্মক আচরণগত সমস্যা আছে। কাউকেই সে পরোয়া করে না। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এমনটা আগে কখনো দেখা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরেই সাকিব দলীয় শৃঙ্খলা ভাঙছেন মন্তব্য করে নাজমুল হাসান বলেন, ‘হঠাৎ সে এমনটা করেনি। সব সময়ই করছে। দেশের মূল খেলোয়াড় বলে আমরা এতদিন বিষয়গুলো উপেক্ষা করেছি। কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সে কোচ-অধিনায়ক কারো কথা মানে না।’ 

সাকিবের এমন আচরণ প্রত্যাশিত নয় বলেও মনে করেন বিসিবি সভাপতি, ‘সাকিব আমাদের দেশের দূতের মতো। অনেকে বাংলাদেশকে চেনে কেবল তার জন্যই। এ সুনাম রক্ষার্থেই আমাদের এ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট সাকিবের জন্য এটি মাথায় রেখেই দুঃখজনক ও কষ্টকর এ শাস্তির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’  নাজমুল বলেন, ‘ভবিষ্যতে এমনটা হলে আজীবন নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ছাড় নেই।’ নাজমুল জানিয়েছেন, এখন থেকে বিসিবির চুক্তিবদ্ধ কোনো ক্রিকেটার অনুমতি ছাড়া বিজ্ঞাপনেও কাজ করতে পারবেন না।