index 3

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫আগষ্ট: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চেহারার চাদর গায়ে দিয়ে কৌশলে সেই বাকশালের পথেই’অগ্রসর হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সজ্ঞানে গণতন্ত্র হত্যা করছেন অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনমত ও বিশ্ববিবেককে উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল এবং ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে তারা জনগণকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্রের লেশ মাত্র রাখতে চায় না৷
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাব কনফারেন্স লাউঞ্জে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আয়োজিত জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা, বিচারপতি অভিশংসন ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট শীর্ষক আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন৷জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা, বিচারপতিদের অভিসংশন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ এবং সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷

ফখরুল বলেন, এমনিতেই এখন বিচারপতিরা কোনো মামলার রায় ঘোষণার সময় রায় পরে দেয়া হবে জানিয়ে এজলাস থেকে বেরিয়ে যান৷ কথিত আছে তারা নাকি উপরওয়ালাদের সঙ্গে আলোচনা করে রায় ঘোষণা করেন৷ তারপরও সরকার বিচারপতিদের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না৷ এখন যদি অভিসংশন ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয় তাহলে জনগণ কার কাছে যাবে, কোথায় যাবে৷ সাধারণ জনগণের ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে৷
জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা বাতিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এ নীতিমালা করার অর্থই হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মীদের মুখে কালো কাপড় বেঁধে দেয়া৷ অতীতে ‘৭৫ সালে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল৷ বর্তমানেও তারা সেই প্রচেষ্টা অব্যাহতরেখেছে৷ সমপ্রচার নীতিমালা, অভিশংসন আইন এরই বহিঃপ্রকাশ৷বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, এ সরকারের ভয়াবহতা জনগণ সবাই বুঝতে পারছে না বলেই ৭১ সালের মতো জেগে উঠছে না৷ এখন জেগে না উঠলে দেশের অস্থিত থাকবেন না৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেবেন না৷ এর পরিণতি ভালো নয়৷ জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে কিছুক্ষণ ভালো থাকা যায়৷ হিটলার, মুসোলিনী কেউ টিকতে পারেনি, আপনারাও পারবেন না৷ তাই জনগণের কাতারে আসুন৷ এক নায়কতন্ত্রের কাতারে নাম লেখাবেন না৷ সরকারকে আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, অতি দ্রুত আলোচনা করে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন৷ যে নির্বাচনে সব দল ও জনগণ অংশগ্রহন করে৷
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা সংসদে পাস করেও আওয়ামী লীগ তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি৷ এবার তারা সেটাই করতে যাচ্ছে৷
ওপর দিয়ে গণতান্ত্রিক চেহারার একটি চাদর গায়ে দিয়ে তারা ভেতরে ভেতরে গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে৷ উদ্দেশ্য একটাই- ভিন্ন কৌশলে ধীরে ধীরে বাকশালের দিকে অগ্রসর হওয়া৷আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা বাতিল, সমপ্রচার নীতিমালা প্রণয়ন এবং সংসদের কাছে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার মতো সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্র হত্যার নীল নকশা’ হিসাবে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল৷জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিলে তার পরিণতি শুভ হবে না বলেও তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করেন৷ দেশের বর্তমান অবস্থায় দলমত-নির্বিশেষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন,দেশের অবস্থা সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে৷ আজ বাম-ডান, ছোট-বড় নয়, সকলকে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে এক হয়ে আওয়াজ তুলতে হবে, সোচ্চার হতে হবে৷ সবাইকে আজ জেগে উঠতে হবে৷’
এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মূর্তজা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার সাধারণ সসম্পাদক খোন্দকার লুত্‍ফর রহমান, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমার মোস্তফা আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন৷