Morshed khanDudok

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৬আগষ্ট: অর্থ পাচার মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম মোর্শেদ খানের বিরুদ্ধে শিগগিরই চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান মো.বদিউজ্জামান৷ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান৷
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে এ মামলাটি করা হয়েছে৷ মামলাটির তদন্তও প্রায় শেষ হয়েছে৷ তদন্ত পর্যায়ে মোর্শেদ খানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা শেষ হয়েছে৷ শিগগিরই এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে৷এদিকে, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মোর্শদ খান ও তার ছেলে ফয়সাল মোর্শদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক৷ দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদনী শিবলী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন৷
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মোরশেদ খান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, কেবল আইনের প্রতি সম্মান দেখাতেই এখানে এসেছি৷অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আমার বক্তব্য দুদককে বলেছি৷ দুদক এখন সেটা খতিয়ে দেখবে৷বিএনপির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দুদক হয়রানিমূলক মামলা করছে কি না্তজানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আপনারা (সাংবাদিক) জাস্টিফাই (বিবেচনা) করে দেখুন৷পরে সাংবাদিকেরা তাঁকে আরও প্রশ্ন করেন৷ তবে তিনি আর কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে গাড়িতে উঠে যান৷
গত বছরের ৩১ডিসেম্বর রাজধানীর রমনা থানায় দুদক এম মোরশেদ খান, তাঁর স্ত্রী নাসরিন খান ও ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানের বিরুদ্ধে মামলা করে৷মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে মোরশেদ খান তাঁর প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট টেলিকম লিমিটেডের মাধ্যমে মোট ১১টি ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে ৩২১ কোটি সাত লাখ ৫৩ হাজার ৩৫৯ টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন৷
হংকংয়ে ৩২১ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক৷ মামলায় এম মোর্শেদ খানের সঙ্গে তার ছেলে ও স্ত্রী নারসিন খানও আসামি হিসেবে রয়েছেন৷
দুদক সূত্র জানায়, আসামিরা বিদেশে ব্যাংক হিসাব খোলা এবং ওই হিসাবগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন গ্রহণ করেননি৷ আসামিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ব্যতিরেকে বিদেশে বৈদেশিক মুদ্রা রেখে বেআইনি কার্যকলাপ করেছেন৷আসামিদের উপার্জিত বৈধ অথবা অবৈধ অর্থের উত্‍স গোপন রেখে তা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার ও সংরক্ষণ করেছেন৷
এম মোর্শেদ খান, তার স্ত্রী ও ছেলের মালিকানাধীন ফার ইস্ট টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের নামে হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে সাতটি মাল্টি কারেন্সি অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গেছে৷ এর মধ্যে একটি ইউএসডি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, একটি ইউএসডি সেভিংস অ্যাকাউন্ট, চারটি ফিঙ্ড ডিপোটিজ অ্যাকাউন্ট ও একটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷এছাড়া, হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে এম মোর্শেদ খানের নিজ নামে একটি ইউএসডি সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও একটি এইচকেডি (হংকং ডলার) সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷ অনুরূপভাবে হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ফয়সাল মোর্শেদ খানের নামে একটি ইউএসডি সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও একটি এইচকেডি সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷
এ সব অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময় আসামিরা ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৫৪১ মার্কিন ডলার ও ১ কোটি ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩ হংকং ডলার পাচার করেছেন৷ বাংলাদেশি অর্থে এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩২১ কোটি টাকা৷ আসামিরা ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সময়ে এসব অর্থ পাচার করেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে৷