সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী)-1

দৈনিকবার্তা -নিউজ: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল-১ এর দেয়া রায়ের কপি ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)৷বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে মামলার গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা মো. শাজাহান এ চার্জশিট দাখিল করেন৷

চার্জশিটে থাকা অন্য আসামিরা হলেন: সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাদ কাদের, ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, আইনজীবী ফখরুল ইসলাম, আইনজীবীর সহকারী মেহেদী হাসান, সাকা চৌধুরীর ব্যবস্থাপক মাহবুবুল আহসান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও ফারুক৷মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীকে গতবছরের ১ অক্টোবর মৃতু্যদণ্ড দেয় ট্রাবু্যনাল-১৷

রায়ের পর সাকার পরিবার দাবি করে, রায় ফাঁস হয়েছে৷ এ রায় আইন মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়েছে, যা তারা আগেই ইন্টারনেটে প্রকাশ পেয়েছে৷২ অক্টোবর ট্রাইবু্যনালের রেজিস্ট্রার নাসির উদ্দিন মাহমুদ রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন৷ ট্রাইবু্যনালের কম্পিউটার থেকে রায়ের খসড়া ফাঁস হয়ে থাকতে পারে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়৷ পরে ট্রাইবু্যনালের কর্মচারী নয়ন আলী ও মুদ্রাক্ষরিক ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়৷ নয়ন আলী ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ জবানবন্দিতে রায় ফাঁসে ব্যারিস্টার ফখরুলের সংশ্লিষ্টতার কথা বলেন৷

গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহাজাহান হোসেন বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন৷আদালত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার আনিসুর রহমান জানান, আসামিদের মধ্যে ফারহাত, হুম্মাম ও মেহেদী ছাড়া বাকি আসামিরা কারাগারে রয়েছেন৷ ওই তিন জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে অভিযোগপত্রে৷

মামলার আসামি নয়ন ও ফারুক ইতোমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে৷পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রটি হাকিম আদালতের বিচারক সাবরিনা আলীর কাছে জমা দেয়া হয়েছে৷ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতবছর ১ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃতু্যদণ্ড দেয় আদালত৷ তবে রায়ের আগেই বিএনপি নেতার স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যরা ট্রাইবু্যনালের সামনে ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত রায়ের কপি সংবাদকর্মীদের দেখান৷

এরপর তুমুল আলোচনার মধ্যে ট্রাইবু্যনাল স্বীকার করে রায়ের খসড়া ফাঁস হয়েছে৷ ট্রাইবু্যনালের রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৪, ৫৭ ও ৬৩ ধারায় শাহবাগ থানায় মামলা করেন৷ ওই মামলায় ৫ অক্টোবর ট্রাইবু্যনালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নয়ন ও সাঁটলিপিকার ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ৷ তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০ নভেম্বর সেগুন বাগিচায় পাইওনিয়ার রোডের চেম্বার থেকে আইনজীবী ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবীর এক সহকারী বড় অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে ট্রাইবুনালের দুই কর্মীর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের খসড়ার অংশবিশেষ বের করেন৷ ওই অংশটিই রায়ের দিন আদালতে সাংবাদিকদের দেখানো হয়৷