whisky

দৈনিকবার্তা-ঢাকা ৩০, আগস্ট:স্কটল্যান্ডের পার্থশায়ারে বিশ্বখ্যাত হুইস্কি ব্র্যান্ড ফেমাস গ্রাউসের একটি ডিস্টিলারি। স্কটল্যান্ডের কথা উঠলে প্রথমেই যে জিনিসের কথা মানুষের মনে হয়, তাহলো স্কচ হুইস্কি। পানের যাদের অভ্যাস আছে, তারা বুঝতে পারবেন স্কচ হুইস্কির বিশেষত্ব । এখানকার পানি, বার্লি, ওক কাঠ এবং শত শত বছরের অভিজ্ঞতার কল্যাণে স্কচ হুইস্কি অতুলনীয়। এটিই শুধুই কোনো পানীয় নয়, হুইস্কি স্কটল্যান্ডের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। ১৪৯৫ সালে অর্থাৎ পাঁচশ বছরেরও বেশি আগের একটি লিখিত দলিলে স্কচ হুইস্কির কথা পাওয়া যায়।
গ্যালিক ভাষায় হুইস্কির নাম ছিল উসকাভে। তার থেকেই হুইস্কি নামটি এসেছে।
এডিনবারা থেকে মাইল পঞ্চাশেক দুরে গ্লেনটরেট নামে একটি ডিস্টিলিরি দেখতে গেলে সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানালেন তিনশ বছর ধরে একনাগাড়ে এখান থেকে হুইস্কি তৈরি হচ্ছে।
সে কারণে হুইস্কি নিয়ে স্কটিশদের রয়েছে গভির আবেগ। হুইস্কি হয়ে উঠেছে স্কটিশ সমাজের ডিএনএ’র অংশ। সেই সাথে হয়ে উঠেছে স্কটিশ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি।
স্বাধীন হলে স্কটল্যান্ড চলবে কিভাবে? এই প্রশ্ন উঠলে স্বাধীনতার পক্ষে শিবিরের লোকজন তেল-গ্যাসের পর যে পণ্যের নাম করেন, তা হলো হুইস্কি।
বিশ্বের দুশটি দেশে বছরে প্রায় পাঁচশ কোটি পাউন্ডের হুইস্কি রপ্তানি হয়। স্কটল্যান্ডের মোট রপ্তানির বিশ শতাংশ, এবং ব্রিটেনের খাবার ও পানীয়ের মোট রপ্তানির এক-চতুর্থাংশ হুইস্কি থেকে আসে। তেল-গ্যাসের পরপরই স্কটল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শিল্প হুইস্কি।তিনশ বছরের পুরোনো একটি ডিস্টিলারি। একশটি দেশে রপ্তানি হয় এখানকার তৈরি হুইস্কি স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার সম্ভাবনাকে হুইস্কি শিল্প কিভাবে দেখছে?
এডিনবারাতে, হুইস্কি শিল্প মালিকদের সমিতি, স্কটিশ হুইস্কি ইউনিয়নের অফিসে কথা হচ্ছিল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ডেভিড উইলিয়ামসের সাথে। প্রথমে মজা করে বললেন, দেখুন একটি বিষয় নিশ্চিত যে ১৯শে সেপ্টেম্বরেও অর্থাৎ গণভোটের পরদিনও স্কচ হুইস্কি স্কটল্যান্ডেই তৈরি হবে।
তবে পরে ঘুরে ফিরে বলার চেষ্টা করলেন, অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যৎ স্কটল্যান্ডের মানুষ নির্ধারণ করবে, স্কচ হুইস্কি শিল্পের এখানে কিছু বলার নেই। তবে কোনও সন্দেহ নেই, অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে স্বাধীন হলে স্কটল্যান্ড কি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকবে–তা নিয়ে এই শিল্প উদ্বিগ্ন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইউরোপ তাদের বাজার, এবং একই সাথে ইউরোপের বাইরে বিভিন্ন বাজারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদস্যদের পক্ষে দেন দরবার করে বাণিজ্য চুক্তি করে। বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে স্বাধীন স্কটল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব কতটা থাকবে, তা নিয়েও হুইস্কি শিল্প চিন্তিত।
আমরা বিভিন্ন বাজারে নানা ধরণের বাধার সম্মুখীন হই। নতুন নতুন কর, নতুন ট্যারিফের ফলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হয়। ব্রিটেনের সরা পৃথিবী জুড়ে দূতাবাস রয়েছে। যে সব দূতাবাস আমাদের পক্ষ হয়ে দেন দরবার করে।
মি উইলিয়ামসন বললেন, স্কটিশ সরকার বলছে প্রাথমিক অবস্থায় তারা ৭০ থেকে ৯০ টি দূতাবাস খুলবে, যেখানে ব্রিটেনের রয়েছে দুশটি।
স্বাধীন স্কটল্যান্ডের খুঁটিনাটি সম্পর্কে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকামী আঞ্চলিক সরকার খুব যে একটা উত্তর দিতে পারছে, তা নয়। তবে স্কটিশ আঞ্চলিক সরকারের মন্ত্রীরা ভরসা দিচ্ছেন, স্বাধীন হলে দেশের অর্থনীতির বিকাশে যা যা করার দরকার তাই তারা করবেন।