3.++Brazil+striker+Neymar+Junior+celebrates+his+game

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫সেপ্টেম্বর: ফিরে এসেছিল সেই ব্রাজিল বিশ্বকাপের স্মৃতি। কলম্বিয়ার ডিফেন্ডারদের একের পর এক ফাউলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিলেন নেইমার। তবে কোনোভাবেই দমিয়ে রাখা যায়নি তাকে। ম্যাচের শেষের দিকে অসাধারণ এক গোল করে ব্রাজিলকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন বার্সেলোনার এই তারকা।

মায়ামির সান লাইফ স্টেডিয়ামে শুক্রবার রাতে (বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে) নেইমারের এই একমাত্র গোলেই কলম্বিয়াকে হারায় নিজের দেশের বিশ্বকাপে সমর্থকদের হতাশ করা ব্রাজিল। আর দ্বিতীয় মেয়াদে ব্রাজিলের দায়িত্বে এসে প্রথম ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেন দুঙ্গা।

বিশ্বকাপ দুঃস্বপ্ন ভুলে নতুন যুগের সূচনাটা স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্য ছিল ব্রাজিলের। আর তেতে থাকা কলম্বিয়ার লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপ কোয়ার্টার-ফাইনালে হারের ‘প্রতিশোধ’। তাই প্রীতি ম্যাচেও ছিল উত্তেজনা। ফাউল হলে দুই দলের খেলোয়াড়দের বাড়তি প্রতিক্রিয়াতেই বোঝা যাচ্ছিল তা।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণ-প্রতিআক্রমণ করে খেললেও প্রথমার্ধে গোলের পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো পক্ষই। ৩৩তম মিনিটে অস্কারের একটি শট বারের পাশ দিয়ে চলে যায়। পাঁচ মিনিট পর হুয়ান কামিলো সুনিগার জোরালো শট ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়।

বিরতির সাত মিনিট আগে এগিয়ে যেতে পারত ব্রাজিলের। কিন্তু উইলিয়ানের পাস থেকে অস্কারের দুর্বল শটটি লক্ষ্যে ছিল না।

তবে দুই দলের মধ্যেই ছিল ফাউল করে খেলার প্রবনতা। প্রথমার্ধেই রেফারির পকেট থেকে ছয়বার বের হয় হলুদ কার্ড যার চারটিই দেখেন কলম্বিয়ার খেলোয়াড়রা।

ব্রাজিলের সেরা তারকা নেইমারকে রুখতে অনেকবারই ফাউল করেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডাররা। এর মধ্যে ৩৯তম মিনিটে নেইমারকে বাজেভাবে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন হুয়ান সুনিগা। ব্রাজিল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে পিঠে হাঁটু দিয়ে গুতো মেরে নেইমারের বিশ্বকাপ শেষ করে দিয়েছিলেন কলম্বিয়ার এই ডিফেন্ডারই।

দ্বিতীয়ার্ধের চার মিনিটে নেইমারকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হুয়ান গুইলের্মো কোয়াদ্রাদো। প্রথমমার্ধে নেইমারকেই ফাউল করে প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখেছিলেন তিনি।

দশ জনের দলে পরিণত হওয়া কলম্বিয়াকে এরপর চেপে ধরে ব্রাজিল। কিন্তু গোল আর আসছিল না।

৫৭তম মিনিটে দাভিদ লুইসের ফ্রি-কিক কোনোমতে ফিরিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক দাভিদ অসপিনা। দুই মিনিট পর অস্কারের ব্যাকহিল থেকে দিয়েগো তারদেলির শট বাইরে দিয়ে চলে যায়।

তবে ৮৩তম মিনিটে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের নির্ভার করেন এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা নেইমার। ২৫ মিটার দূর থেকে তার নেয়া ফ্রি-কিকে বল অসপিনাকে বোকা বানিয়ে ওপরের ডান কোণ দিয়ে জালে জড়ায়। ভালোমতো ঠেকানোর চেষ্টাও করতে পারেননি অসপিনা।

ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিট মাঠে ছিলেন কলম্বিয়ার সবচেয়ে বড় তারকা রাদামেল ফালকাও। তবে ম্যাচের একদম শেষ সময়ে পাওয়া একটি সুযোগে লক্ষ্যে হেড রাখতে পারেননি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ধারে যাওয়া মোনাকোর এই স্ট্রাইকার। শুরু থেকে খেলেছেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হামেস রদ্রিগেস; তবে তেমন একটা জ্বলে উঠতে পারেননি রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার ।

ম্যাচের শেষের দিকে নামার সুযোগ পান বিশ্বকাপে স্কলারির দলে সুযোগ না পাওয়া রবিনিয়ো।

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে কলম্বিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তারপরই শুরু হয়েছিল ব্রাজিলের পতনের শুরু। সেমি-ফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩-০ গোলে হারে স্কলারির দল। প্রায় ৭৩ হাজার দর্শকের সামনে আবার সেই কলম্বিয়াকে হারিয়েই ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পাওয়ার পথে যাত্রা শুরু করলো দুঙ্গার ব্রাজিল।