vss0u1ry-e1408967008268

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০সেপ্টেম্বর: নিউইয়র্কে ভারত-বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী৷ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি৷জাতিসংঘের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এ সময় তাদের মধ্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি৷পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক বিষয়সহ মোদির বাংলাদেশ সফর বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷

গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব হাসিনা সরকারে প্রশংসা করার কথাও জানান তিনি৷জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক৷

মাহমুদ আলী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ নিয়ে আঞ্চলিক শক্তি গঠনে বাংলাদেশ গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে৷ পাশাপাশি মোদির বাংলাদেশ সফর নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান তিনি৷এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান ও ভাষণের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৯তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রী৷

এ বছরের মে মাসে মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই ছিল দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠক৷মন্ত্রী বলেন, প্রথম বৈঠক হলেও পরিবেশ ছিল অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ, উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ৷ এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন৷

এ প্রসঙ্গে মোদীর মন্তব্য উদ্ধৃত করেন মাহমুদ আলী, বঙ্গবন্ধু নে বাংলাদেশ বানায়া, আউর উনকো বেটি নে বাংলাদেশ কো বাঁচায়া৷এটা নরেন্দ্র মোদির এসেসমেন্ট৷ এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ তিনি আরেকটা কথা বলেছেন, ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷

Hasina Modi

বৈঠকে ১৯৭৪ সালের স্থলসীমানা চুক্তির অনুসমর্থন ও তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি শেখ হাসিনা মোদীর কাছে বিশেষভাবে তুলে ধরেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান যে, তার সরকার এ বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে৷

মন্ত্রী জানান,নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ট্রানজিট সহযোগিতা স্থাপনের বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী৷ জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সার্ক স্যাটেলাইট স্থাপনের বিষয়ে তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ৷এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ আলী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে বেশ আগ্রহী৷ দুদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সফরের দিন নির্ধারণ করা হবে৷তিনি জানান, দক্ষিণ এশিয়ার সব রাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন মোদী৷ এসময় শেখ হাসিনাও এবিষয়ে একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন ৷

এর আগে ২৭সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী৷পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী সময়ে দেশে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে পারার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান৷জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারী ও মেয়ে শিশুদের সাক্ষরতা, শিক্ষার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা ও শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সমপ্রতি বাংলাদেশের শীর্ষ স্থান অর্জনেরও প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব৷

সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নেয়ার পাশাপাশি মন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র সচিব নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর বিভিন্ন সভায় বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷