image_36_4817_42849

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১নভেম্বর: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলায় এনামুল ওরফে হুমায়ুন কবির এবং পলাশ রুদ্র পাল নামের দুইজনের ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত৷ মঙ্গলবার সকালে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তারেক মইনুল ইসলাম ভুইয়ার আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ৷ শুনানি শেষে বিচারক তাদের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন৷

সংশ্লিষ্ট আদালতের পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক হুময়ায়ুন কবীর জানান, র্যাবের ইনভেস্টিগেশন এবং ফরেনসিক উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি ওয়ারেছ আলী এই দুই আসামিকে সাত দিনের হেফাজতে চেয়ে গত ২১ অক্টোবর আবেদন করেন৷ মঙ্গলবার শুনানি শেষে বিচারক তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন৷ এ সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না বলেও জানান তিনি৷

উচ্চ আদালতের নির্দেশে র্যাব তদন্তের দায়িত্ব নিলেও দীর্ঘ সময়ে এই হত্যাকাণ্ডের কোনও কূল-কিনারা করতে পারেনি৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ২৮তম বারের মতো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে যায়৷ সেদিন আদালত আগামী ২ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ঠিক করে৷২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের একটি বাড়িতে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি৷

পলাশ ও এনাম ওই এপার্টমেন্টের পাহারাদার ছিলেন৷ পলাশকে ঘটনার পরপরই এবং এনামকে পরে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী৷ নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনে বলা হয়, পলাশ ঘটনার সময় অর্থাত্‍ রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ওই বাসায় প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন৷ আনুমানিক সকাল ৫ টা- সোয়া ৫টার দিকে অ্যাপার্টমেন্ট মালিক নূরুন্নবী কান্নার আওয়াজ পেয়ে এই প্রহরীকে ফোন করেছিলেন৷ পলাশ তখন নূরুন্নবীকে বলেছিলেন, কান্নার আওয়াজ অন্য এপার্টমেন্ট থেকে শোনা গেছে৷

প্রকৃতপক্ষে পলাশ সত্য গোপন করে এ তথ্য পরিবেশন করেন বলে তদন্তে জানা গেছে৷ তাছাড়া অন্য সাক্ষীদেরকে জিজ্ঞাসা করেও বেশ কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে৷আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগকারী, তাদের নিজেদের স্বজন, বন্ধু, সহযোগী আসামিদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি বলে রিমান্ডের আবেদনে বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত এএসপি ওয়ারেছ আলীকে বেশ কিছু পরামর্শ দেয়, যার মধ্যে দুই দারোয়ানকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টিও ছিল৷

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর তত্‍কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন৷ তবে তারপর পুলিশের হাত ঘুরে তদন্তভার র্যাবের ওপর এলেও দুই বছরেও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার হওয়া ছাড়া বড় কোনও অগ্রগতি হয়নি৷

শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জহুরুল ইসলাম, ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রবিউল আলম এবং র্যাবের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার জাফর উল্লাহর হাত ঘুরে ওয়ারেছ আলী বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন৷সাহারা খাতুনের পর মহীউদ্দীন খান আলমগীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর শিগগিরই হত্যারহস্য উদ্ঘাটনের ঘোষণা দিলেও তেমন কোনো অগ্রগতি আসেনি৷

সর্বশেষ গত বছরের ১০ অক্টোবরে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এক চিকিত্‍সককে হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামি মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়৷ সেই সঙ্গে রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান এবং বাড়ির দারোয়ান পলাশ ও এনামকে এই হত্যামামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে৷