1aa3a437d3865a9adc333a5504e90ef0-Match-report

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১নভেম্বর: বছরের তো প্রায় শেষ। অথচ এখন কিনা বলতে হচ্ছে, ‘প্রথম জয়!’ হ্যাঁ, বছরটা বাজেই গেছে বাংলাদেশ দলের। ১২টি ওয়ানডে খেলে জয় নেই একটিতেও। উল্টো আছে আফগানিস্তানের কাছে দেশের মাটিতে হেরে যাওয়ার দহন। অবশেষে বছরের শেষে এসে শুরুর ক্ষতে যেন প্রলেপ দিতে শুরু করল বাংলাদেশ। টেস্টে পাওয়া সাফল্যের সুরটা থাকল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেও। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮৭ রানে জিতেছে বাংলাদেশ।

এক ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট ওয়ানডেতে আছে মাত্র দুজনের—স্যার ভিভ রিচার্ডস ও পল কলিংউডের। অল্পের জন্য এ দুজনের পাশে না বসা হলেও আরেকটি রেকর্ড করেছেন সাকিব। ৩৫৫০টি ওয়ানডে ম্যাচে এক ইনিংসে সেঞ্চুরি ও চার উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১২জন খেলোয়াড়। সাকিব এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন। শিশির-তত্ত্ব উতরে জিম্বাবুয়েকে হারানোর পেছনে আরাফাত সানি, মাহমুদউল্লাহ ও মাশরাফি মুর্তজার কৃতিত্বও কম নয়। ব্যাট হাতে ভূমিকা রেখেছেন মুশফিকুর রহিম ও অভিষিক্ত সাব্বির রহমান।
বাংলাদেশের সংকটময় মুহূর্তে উদ্ধারকর্তা হিসেবে সাকিবের উপস্থিতি নতুন নয়। ব্যাটিংয়ে তাঁরই সেঞ্চুরিতে দল ভালো সংগ্রহ পেয়েছে আজ। বল হাতেও সেই সাকিব। দলের প্রয়োজনীয় ব্রেক-থ্রুটা এনে দিলেন বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক। শুরুটাই ভালোই করেছিলেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও সিকান্দার রাজার উদ্বোধনী জুটি ৪৪ বলে তুলে ফেলল ৪৭।
ঠিক এ সময়ে সাকিব-জাদু! রাজাকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন বাঁ–হাতি অলরাউন্ডার। এর সঙ্গে নতুন এক রেকর্ড ছুঁলেন মুশফিকুর রহিম। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে খালেদ মাসুদের ৩৫টি স্টাম্পিংয়ের রেকর্ড স্পর্শ করলেন মুশফিক। একই ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে রুবেল হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ভুসি সিবান্দাকে ফেরান সাকিব। ৪৭ রানেই জিম্বাবুয়ের দুই উইকেটের পতন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৫ রান তুলে জিম্বাবুয়ে আরেকটি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইল। মাসাকাদজাকে (৪২) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে স্বস্তি এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর তেমন কোনো বড় জুটি গড়ে ওঠেনি জিম্বাবুয়ের। তবে বাংলাদেশকে কিছুক্ষণ ভোগান টেলর। মাশরাফির বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচে টেলরকে ফেরান মুশফিক। ফেরার আগে টেলরের সংগ্রহ ৫৪ রান। মাসাকাদজার পর টেলর ফিরে যাওয়াতেই জিম্বাবুয়ের পরাজয় এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়। ১৪৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কাটা জিম্বাবুয়ে আর সামলেও উঠতে পারেনি। ৪৮ রানে হারিয়েছে শেষ ৫ উইকেট।এর দুটো উইকেট নিয়েছেন সাকিব। তিনটি নিতে পারলেই হতো ইতিহাস। তা না হলেও ৪২.১ ওভারে জিম্বাবুয়েকে ১৯৪ রানে অলআউট করে দেয় মাশরাফির দল। সাকিবের ৪ উইকেটের পাশাপাশি আরাফাত, মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।

এর আগে সাকিব-মুশফিকের জুটিতে চ্যালেঞ্জিং স্কোর পায় বাংলাদেশ। শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে স্বাগতিকেরা। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর সাকিব-মুশফিক বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড ১৪৮ রানের জুটি গড়েন। সাকিব ৯৯ বলে ১০১ করেছেন। মুশফিক ৭২ বলে ৬৫। শেষ দিকে ওয়ানডেতে অভিষিক্ত সাব্বির রহমানের ২৫ বলে অপরাজিত ৪৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৮১ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। বাংলাদেশের বিপক্ষে এত রান তাড়া করে আগে কখনো জেতা হয়নি জিম্বাবুয়ের। হলো না আজও।