rijvi_dhaka_report_9610

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর: বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দিলে আওয়ামী লীগকেও কোথাও নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী৷রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন৷

দমন-পীড়ন বন্ধ করে গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসুন–সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিরোধীদলের সভা সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিন, গ্রেপ্তার নির্যাতন করে আন্দোলন বন্ধ করবেন না৷শিশু জিয়াহদের মৃতু্যর ঘটনায় সরকারকে দায়ী করেন রিজভী৷এ সময় জিয়াদের উদ্ধার অভিযানে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানান তিনি৷সোমবার হরতাল সফল করতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি৷

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বিএনপিকে নাকি দেশের কোথাও সভা সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না৷ আমি হানিফ সাহেবকে বলতে চাই্তবাংলাদেশের মালিকানা কী আপনারা মৌরসিপাট্টা (চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত) করে নিয়েছেন? আমরা দৃঢ়কন্ঠে বলতে চাই, বিএনপির সমাবেশে বাধা দিলে আওয়ামী লীগও দেশের কোথাও নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পারবে না৷ জনগণের সম্মিলিত শক্তিতে তা প্রতিহত করা হবে৷

রিজভী বলেন,হানিফ সাহেব বলেছেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে বিএনপিকে দেশের কোথাও সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না৷আমরা দৃঢ়কন্ঠে বলতে চাই, বিএনপির সমাবেশে বাধা দিলে আওয়ামী লীগও দেশের কোথাও নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে পারবে না৷ মানুষের সম্মিলিত শক্তিতে তা প্রতিহত করা হবে৷

শনিবার গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশ করার কথা থাকলেও পাল্টা পাল্টি অবস্থানের কারণে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷ এতে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ৷ এর প্রতিবাদে জেলায় হরতাল পালন করে তারা৷পরে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগনেতা হানিফ জানান, কটূক্তি ও ইতিহাস বিকৃতির জন্য ক্ষমা না চাইলে গাজীপুরের মতো আগামীতে দেশের কোথাও খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে কিনা তা ভাবার সময় এসেছে৷ব্রিফিংয়ে যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে বাসা থেকে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করেন রিজভী৷

রিজভী খিলগাঁও বিএনপির সহসভাপতি ফরহাদ হোসেন, বরিশালের স্বেচ্ছাসেবক দলের হাবিবুর রহমান পিন্টু,পটুয়াখালীর শাহাবুদ্দিন, আহসান উল্লাহ পিন্টু, শাহজাহান হাওলাদারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন৷

মধ্যরাতে যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে তাঁর লালমাটিয়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, সরকার নাকি কোনকিছুতেই ভয় করছে না, খুব স্বস্তিতে আছে বলে দম্ভোক্তি করছে৷ অথচ দেশব্যািপ এই গ্রেপ্তার অভিযান কেন? কারণ এই অবৈধ সরকার কচুপাতার পানির মতো অবস্থান করছে৷ আন্দোলনের সামান্য আওয়াজেই পতনের ভয়ে টলমল করতে থাকে৷ সেজন্যই নির্দয় দমন-পীড়নের পুরোনো কৌশলই অবলম্বন করে চলছেন৷ রিজভী দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার জনগণের সঙ্গে মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ব্ল্যাকমেইলিং করে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেছে৷ তারপর থেকে এ দেশকে তাঁরা ঘাতকের চারণভূমিতে পরিণত করেছে৷ পেশিশক্তি ও জিহ্বার ধার দিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী দুঃশাসনের রক্তাক্ত থাবা বিস্তার করেছেন বলেও অভিমত তাঁর৷ অবিলম্বে মোয়াজ্জেম হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি৷

রাজধানীর শাহজাহানপুরে কলোনী মৈত্রী সংঘ মাঠের কাছে পানির পাম্পের পাইপের মধ্যে চার বছরের শিশু জিহাদ পড়ে যাওয়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য শুধু বিভ্রান্তিকরই নয় বরং উদ্ধারপ্রচেষ্টা লোক দেখানো বলে মন্তব্য করেন রিজভী৷ তিনি বলেন, উদ্ধার প্রচেষ্টায় সরকাির শৈথিল্য দেখে মনে হয় সরকার শিশুটিকে বাঁচাতে আন্তরিক ছিল না৷দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন, বেলাল আহমেদ, আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন৷