Muhit-Army

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১ জানুয়ারি: সশস্ত্র বাহিনীতে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকার নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি৷ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে ১৬টি গ্রেডে বেতন-ভাতা বাড়ানোর জন্য এ প্রস্তাব দেয়া হয়৷

পরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সংবাদিকদের বলেন, সুপারিশ যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে৷ এছাড়া বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে অর্থসঙ্কট হবে না এবং বাজেটের সঙ্গে সমন্বয় করেই তা কার্যকর করা হবে৷ সুপারিশটি চূড়ান্ত হলে তা আগামী ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হবে৷প্রস্তাবে, তিন বাহিনীর প্রধান পদে ১ লাখ, মেজর জেনারেল পদে ৮০ হাজার, লেফট্যানেন্ট জেনারেল ৮৮ হাজার ও অফিস সহকারী পদের জন্য ৮ হাজার ২০০ টাকা সুপারিশ করা হয়েছে৷সামরিক বাহিনীর বেতনকাঠামোর প্রতিবেদন পেশ

সামরিক বাহিনীর জন্য আলাদা বেতনকাঠামোর একটি প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার সকালে অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে গঠিত আট সদস্যের কমিটির প্রধান লে. জেনারেল আনোয়ার হোসেন মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এটি জমা দেন৷প্রতিবেদনে জেনারেলের জন্য নির্ধারিত এক লাখ,লে.জেনারেলের জন্য ৮৮ হাজার, মেজর জেনারেলের জন্য ৮০ হাজার ও সৈনিকদের নিচে যাঁরা বেসামরিক তাঁদের জন্য আট হাজার ২০০ টাকা বেতনকাঠামো সুপারিশ করা হয়েছে৷

লে.জেনারেল আনোয়ার হোসেন পরে সাংবাদিকদের বলেন, বেসামরিক বেতনকাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে সামরিক বেতনকাঠামো করা হয়েছে৷ একই সঙ্গে বাড়িভাড়া ও ঝুঁকিভাতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে৷

অর্থমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমে বেতনকাঠামো ৫িয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন হচ্ছে৷ এটা ভালো৷ সমাজের যেসব অংশের মতামত বেতনকাঠামোতে উঠে আসেনি, এর ফলে সেগুলো উঠে আসবে৷নতুন বেতনকাঠামো কার্যকর করতে কত টাকা বাড়তি লাগবে? এর জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘গতবারের তুলনায় বেশি লাগবে না৷ সব এই হিসাব ঠিক থাকলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বেতন বাড়বে গড়ে ১০০ শতাংশের বেশি৷ এর সঙ্গে তারা পাবেন বাড়িভাড়াসহ সশস্ত্রবাহিনীর জন্য প্রযোজ্য অন্যান্য ভাতা ও সুবিধা৷

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ‘সশস্ত্র বাহিনী বেতন কমিটি’ বৃহস্পতিবার সকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাতে এই সুপারিশ জমা দেয়৷ আট সদস্যের কমিটির অন্য সদস্যরাও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন৷

অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের প্রস্তাবে নতুন কিছু কথা, কিছু উদ্ভাবনী ধারণা থাকে৷ প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি, আমরা এটা দেখব৷ তারপর সিদ্ধান্ত নেব৷আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যে বেতন কাঠামো জমা দিয়েছেন তার সঙ্গে সমন্বয় রেখেই সশস্ত্র বাহিনীর বেতন কাঠামো প্রস্তাব করেছেন তারা৷

আমরা জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছি,তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের বেতন প্রস্তাব বিশ্লেষণ করেছি৷ বেতন কাঠামো ঠিক করতে আমরা মোট ১৬টি সভা করেছি৷তিনি জানান, কমিটি সশস্ত্র বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত এবং নন-কমিশনড সদস্যদের জন্য ১৬টি গ্রেডে বেতন প্রস্তাব করা হয়েছে,যেখানে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন হবে জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশের মতোই সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২০০ টাকা৷সর্বোচ্চ গ্রেডে সচিব পদমর্যাদায় মেজর জেনারেলদের মাসিক মূল বেতন হবে ৮০ হাজার টাকা৷

তবে সিনিয়র সচিব মর্যাদায় লেফটেন্যান্ট জেনারেলরা ৮৮ হাজার এবং মন্ত্রী পরিষদ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের মতো জেনারেলরা পাবেন ১ লাখ টাকা৷সরকারি চাকরিজীবীদের মতো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও এখন সর্বনিম্ন ৪,১০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা বেসিক’ ধরে বেতন পাচ্ছেন৷ তবে তাদের ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তুলনায় বেশি৷

আনোয়ার হোসেন বলেন, বাহিনী প্রধানরা তাদের র্যাংক অনুযায়ী বেতন পাবেন৷ বাহিনী প্রধান যদি চার তারকা জেনারেল হন তবে তার মূল বেতন হবে এক লাখ টাকা৷ এর সঙ্গে বাহিনী প্রধান হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্বের জন্য ভাতা যুক্ত হবে৷সুপারিশে সবার জন্য সারাদেশে একই হারে বাড়ি ভাড়া এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের জন্য বিশেষ আনুতোষিক দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বলে কমিটি প্রধান জানান৷

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন গত ২১ ডিসেম্বর একই রকম কাঠামোতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করে৷তাদের প্রস্তাবে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ গ্রেডে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়৷ আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন কাঠামোয় বেতন পাবেন প্রায় ১৩ লাখ সরকারি চাকরিজীবী৷