image_170973.5

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ জানুয়ারি: অনুমতি না দিলেও ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করবে বিএনপি বলে জানিয়েছেন দলের নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক৷শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি ডিএমপি কার্যালয়ে পৌঁছনোর পর এ কথা বলেন তিনি৷ প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি৷

সমাবেশে নাশকতা বিষয়ে তিনি বলেন, নাশকতা করার প্রশ্নেই উঠে না আর আমাদের দেলের নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে৷তিনি বলেন, অনুমতি এখনো পায়নি্ত পূর্ব নির্ধারিত গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে আমরা সমাবেশ করতে চাই, আমরা আশা করি ও প্রত্যাশা করি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার জন্য সরকার আমাদের অনুমতি দেবেন৷ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি সে কারণে আমরা বার বার আসছি৷ যদি আমাদের অনুমতি না দেয়া হয় তাহলে আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা চেষ্টা অবশ্যই করবো৷

জয়নুল আবদিন আরো বলেন, ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা না হলেও বিএনপির পক্ষ থেকে তারা আশা করছেন শেষ মুহূর্তে হলেও তারা সমাবেশ করার অনুমতি পাবেন৷এ সময় পুলিশের কোনো ঊধর্্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতিনিধি দলের সাক্ষাত হয়নি৷আগামী ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমোদন বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয়ে যান বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল৷

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখ এবং মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে বিএনপি৷এখন ডিএমপির পক্ষ থেকে কোথায় সমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হয় সেই অপেক্ষায় রয়েছে দলটি৷

আগামী ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি চাইতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয়ে গেলেও বিএনপি নেতাদের সাক্ষাত্‍ দেয়নি পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা৷ তারা বিশ্ব ইজতিমার প্রস্তুতির জন্য টঙ্গীতে অবস্থান করায় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্‍ হয়নি বলে জানায় পুলিশ৷

এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে যায়৷ বাকি দুই সদস্য হলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি৷ তারা ডিএমপিতে প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান করেন৷

ডিএমপি থেকে বের হওয়ার সময় জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘আমরা গত মাসের ২২ তারিখে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছি৷ অনুমতির বিষয়টি জানতে গত ১ জানুয়ারি ডিএমপিতে গিয়েছিলাম, আজও গেলাম৷ কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে দেখা করেনি৷তবে ফারুক আশা করছেন, আজকের মধ্যে তারা সমাবেশের অনুমতি পাবেন এবং ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করা হবে৷

জানা গেছে, বিএনপি ৫ জানুয়ারি রাজধানীর নয়াপল্টন, মতিঝিল শাপলা চত্বর সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়েছে৷ তবে অনুমতি না পেলেও তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে৷ সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া৷গণমাধ্যমে দলটির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমাদের সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ৷ শান্তির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ৷ বিএনপির সমাবেশ যে শান্তিপূর্ণ হবে তার দৃষ্টান্ত অতীত থেকেও পাওয়া যাবে৷অনুমতি না পেলে বিএনপি কী করবে? জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‘আমরা কর্মসূচি করবো৷ এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি৷

এ বিষয়ে স্বারষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আগামী ৫ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে৷ আইনশৃঙ্খলার ব্যতয় না ঘটিয়ে এবং নাশকতার আশঙ্কা না থাকলে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হতে পারে৷আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন,সময় হলে অনুমতির ব্যাপারে জানানো হবে৷

দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনটি গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া বিএনপি সেদিন পুলিশের অনুমতি না পেলেও সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে৷অন্যদিকে একই দিন রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্যে এক বছর পর বাংলাদেশে আবার রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷

সমাবেশের অনুমতি চাইতে গত বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনারে কার্যালয়ে গিয়ে তার দেখা না পেয়েই ফেরত আসে বিএনপি প্রতিনিধি দল৷কমিশনার বেনজীর আহমেদ সেদিন নতুন আইজিপির সঙ্গে টুঙ্গীপাড়ায় গিয়েছিলেন৷বেনজীরও র্যাবের নতুন মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন, তবে উত্তরসূরি আছাদুজ্জামান মিয়াকে এখনও দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি৷

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় আবার বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বেইলি রোডে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান৷ কিন্তু ইজতেমার প্রস্তুতির কথা বলে তাদের নিরাশ করা হয়েছে৷এরপর বেরিয়ে আসার পথে ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, গত বৃহস্পতিবারের মতো আজও একই অবস্থা হয়েছে৷ আমরা ডিএমপি কমিশনারসহ ঊধর্্বতন কর্মকর্তাদের কারোর দেখা পাইনি৷ অর্থাত্‍ আমরা এখনও সোমবারের জনসভার অনুমতি পাইনি৷

অনুমতি না পেলে কী করবেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, সেজন্য বারবার অনুমতির জন্য আসি৷ আমরা এখনও প্রত্যাশা করছি, অনুমতি পাব৷ অনুমতি না পেলে আমরা আমাদের ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যাব৷

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনের সড়ক অথবা মতিঝিলের শাপলা চত্বর- এই তিন স্থানের যে কোনো একটিতে জনসভার জন্য গত ২২ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে অনুমতি চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করা হয়৷ সেদিন রাজধানীর ১৬টি স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের৷