-বিএনপি1-e1407313371888

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ৫ জানুয়ারি: বিএনপি ঘোষিত গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালনের জন্য সোমবার (৫ জানুয়ারি) গাজীপুর জেলার কোন শীর্ষ নেতা মাঠে নেই৷ এমনকি তারা এলাকায়ও নেই৷ কেন্দ্রিয় কর্মসূচি পালনের জন্য কর্মীদের উদ্দেশ্যে তারা সুনির্দিষ্ট কোন নিদের্শনা বা কর্মসূচীও দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে৷ আর এ কারণেই জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের মাঝে হতাশ ও ৰোভ দেখা দিয়েছে৷ তাই গাজীপুরের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অর্ধশতাধিক ৰুব্ধ নেতা আনন্দ ভ্রমণে সুন্দর বনে গেছেন৷বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, গাজীপুরে রয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েক নেতা৷ এদের মধ্যে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান একজন, তিনি বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, এছাড়াও জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল একই সঙ্গে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার বিএনপি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার শ্রমিকদলের কেন্দ্রিয় কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি৷ তাছাড়া বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আসম হান্নান শাহ্র বাড়িও গাজীপুরে৷ অথচ প্রভাবশালী এসব নেতাদের অধিকাংশই গাজীপুরে থাকেন না৷ দলের স্থানীয় নেতা কর্মীদের অভিযোগ দলের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের জন্য এসব নেতাদের খুব একটা মাঠে পাওয়া যায় না৷ অথচ দলের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীরা বিভিন্ন মামলার আসামী হচ্ছেন, গ্রেফতার ও পুলিশী হয়রানীর শিকার হচ্ছেন৷ অপরদিকে জেলার এসব হেভিওয়েট নেতারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং নিজেদের সুবিধা নিচ্ছেন৷ ফলে রাজধানীর পাশর্্ববর্তী এ জেলায় এ পর্যনত্ম সরকার বিরোধী আন্দোলনের কোন কর্মসূচি তেমন একটা সফলভাবে পালন হয় নি৷

এতে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মাঝে ৰোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে৷ সর্বশেষ গত ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভাকে কেন্দ্র করে হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হলেও স্থানীয় কর্মীরা এসব নেতাদের মাঠে পায় নি৷ এমনকি তাদের অনেকের মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল৷ ২৭ ডিসেম্বরের হরতালকালে গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় একটি মামলায় জিসিসি মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানসহ প্রায় অর্ধশত নেতা কর্মীকে আসামী করা হয়৷ ওই মামলার একাধিক আসামী ইতোমধ্যে আদালত থেকে জামিন নিলেও মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান জামিন নেন নি৷ দলের নেতা কর্মীদের অভিযোগ, দলের নেতা কর্মীদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে একটি মামলার আসামী হওয়া সত্ত্বেও আদালত থেকে জামিন না নিয়ে নিজ স্বার্থে ও গ্রেফতার এড়াতে তিনি সরকারের সঙ্গে অাঁতাত করেন৷ এরপর তিনি গত শনিবার সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অঞ্চলের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি পর্যালোচনা সভায় যোগ দেন এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন৷ ওই অনুষ্ঠাণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহা পরিদর্শক, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বিভিন্ন বাহিনীর বেশ ক’কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন৷ সভাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও সরকারের সঙ্গে অাঁতাতের কারনে তাকে গ্রেফতারের কোন উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ অথচ জোট ও দলের কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে স্থানীয় নেতা কর্মীরা পুলিশী হয়রানীর ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে৷ প্রায় একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে জেলার শীর্ষ অন্যান্য নেতাদের বিরম্নদ্ধেও৷ তাদের অভিযোগ দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করায় জেলা বিএনপি,ও সভাপতি ও সাধারন সম্পাকসহ শীর্ষ এসব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে৷ তাই দলের বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালনে ব্যাহত হচ্ছে৷নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ৰুব্ধ নেতা কর্মীরা আরো জানায়, বিএনপি ঘোষিত সোমবার (৫ জানুয়ারি) গণতন্ত্র হত্যা দিবস কেন্দ্রিয় কর্মসূচি পালনের জন্য কর্মীদের উদ্দেশ্যে জেলার শীর্ষ নেতারা সুনির্দিষ্ট কোন নিদের্শনা বা কর্মসূচী দেননি৷ এমনকি নিজেরা মাঠে থাকারও আশ্বাসও দেন নি৷ এতে স্থানীয় নেতা কর্মীদের মাঝে ৰোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে৷ তাই শুধু শুধু পুলিশী হয়রানী এড়াতে কেন্দ্রিয় কর্মসূচি বাদ দিয়ে ৰুব্ধ এসব নেতা কর্মীদের অনত্মতঃ ৬০ নেতা আনন্দ ভ্রমন করতে রবিবার ভোরে গাজীপুর থেকে সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে রওনা হন৷ ভ্রমনরত এসব নেতাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে জানা গেছে সোমবার তারা সুন্দরবন এলাকায় অবস্থান করছিলেন৷ তাদের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ত্যাগী নেতা৷ আর একারনেই ২০ দলীয় জোটের শরীক জামায়াত শিবিরের কর্মীরা কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর ও অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটালেও সোমবারের কেন্দ্রিয় কর্মসূচি জেলায় ফ্লপ করেছে৷ আর এসবের জন্য জেলার শীর্ষ নেতারাই দায়ী৷