c71127cb7884c85703cc209603875403-tareq-4-jan

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫ জানুয়ারি: সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে থাকা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঘরে ফিরতে বলেছেন তিনি৷

রোববার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের এট্রিয়াম হলে এক সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান এ আহ্বান জানান৷ গত বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা ও কালো দিবস’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি৷গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে তারেক রহমান এক ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে নির্বাচন ঠেকাতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ আর এবার তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের মাকে যদি কেউ তোমাদের কাছে আসতে না দেয়, তাহলে সন্তান হিসেবে তোমাদের কী করা উচিত? মাকে মুক্ত করা৷

সারা দেশের একটি এলাকা থেকে আরেকটি এলাকা এবং ঢাকার ভেতরে একটি জায়গা থেকে আরেক জায়গাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তারেক৷ তিনি বলেন, যখন খবর পাবেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, ঠিক তখনই রাজপথ ছাড়বেন৷

সোমবার বিএনপি ঘোষিত গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে ডাকা আন্দোলনে ঢাকাসহ সারা দেশে লাখ লাখ নেতা-কর্মী ঝাঁপিয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন তারেক৷ তিনি বলেন, আজ আমাদের নেতা-কর্মীরা রাস্তায়, তাদের গন্তব্য একটি৷ সেটি হচ্ছে দেশকে মুক্ত করা, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা৷

এই আন্দোলন থেমে গেলে দেশ ও দেশের মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্দোলনে নিরীহ মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকবেন৷

হলভর্তি নেতা-কর্মীদের অনুরোধে শুরুতেই বক্তব্য দেন তারেক রহমান৷ বক্তব্যের ফাঁকে কয়েকবার জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হন যে, এই সভার কার্যক্রম বাংলাদেশে সরাসরি দেখানো হচ্ছে৷স্লোগানরত নেতা-কর্মীদের কয়েকবার বলেন, এই তোমরা থামো, দেশের মানুষকে শুনতে দাও৷

গত কয়েকটি সভায় বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে নতুন তথ্য দিয়ে বিতর্ক ছড়ান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে তারেক রহমান৷ বিজয় দিবসের সভায় তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার, পাকবন্ধু ও খুনি বলে মন্তব্য করেন৷ গতকালের সভায় ইতিহাস কিংবা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তেমন কোনো মন্তব্য না করলেও তিনি অভিযোগ করেন, শেখ মুজিব বাংলাদেশে হত্যা এবং দুর্নীতির রাজনীতি শুরু করেছিল, বাকশাল কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল এবং রক্ষীবাহিনী গঠন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করেছিল৷ বাবার মতো মেয়ে শেখ হাসিনাও একই কায়দায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করেছে এবং ৫ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে৷ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ আন্দোলনের গন্তব্য হাসিনার বিদায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন৷

তিনি সর্বস্তরের নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বলেন,আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহণ করুন৷ প্রতিটি এলাকায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন৷ যেন গণতন্ত্রের বিরোধী শক্তি ঘর থেকে বেরুতে না পারে৷ ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ঢাকাকে যেমন সারা বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছিল, এবার ঢাকার ভেতরেও এক এলাকা অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিন৷ যাতে করে একটি বিশেষ অঞ্চলের কোনো বাহিনী গিয়ে আন্দোলনকারী জনগণের ওপর নির্যাতন চালাতে না পারে৷ একইভাবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও নিজ নিজ এলাকা বিচ্ছিন্ন করে দিন৷ আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবেন না৷ তিনি বলেন, এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে৷ আর থামিয়ে দেয়া যাবে না৷ এ আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে৷ গতিশীল করতে হবে৷ লক্ষ্য একটি৷ গন্তব্যস্থল একটি৷ শেখ হাসিনা যেদিন বিদায় নেবে, আন্দোলনকারীরা সেদিন ঘরে ফিরবে৷

তারেক রহমান বলেন, আন্দোলন শুরু হয়েছে৷ আন্দোলন সফল করতে হবে৷ এ আন্দোলন থেমে গেলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ বিশেষ করে আন্দোলনকারী তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ তাই নিজে বাঁচতে, পরিবার বাঁচাতে, দেশ বাঁচাতে, জনগণ ও গণতন্ত্র বাঁচাতে চলমান এই আন্দোলনের বিকল্প নেই৷তিনি সকল শ্রেণী- পেশার মানুষের উদ্দেশে বলেন, এ সরকারকে আর সময় দেয়া যাবে না৷ এ সরকার অবৈধ সরকার৷পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য আর কত গুলি চালাবেন? এ পথ থেকে সরে আসুন৷ জনগণের ওপর গুলি চালাবেন না৷

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের দিয়ে গত ৫ জানুয়ারি অন্যায় করতে বাধ্য করা হয়েছে৷ এ দেশ আপনাদের কাছে জনগণের পবিত্র আমানত৷ এবার জনগণের পক্ষ নিন৷ অন্যায় আদেশ মানবেন না৷ নিজেদের অবস্থান পরিবর্তণ করুন৷ তিনি বলেন, “এই আন্দোলন কোনো দলের নয়, এ আন্দোলন দেশ রক্ষার৷ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের৷ তিনি এ আন্দোলনে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে শরীক হওয়ার আহ্বান জানান৷

তারেক রহমান বলেন, আমরা শেখ হাসিনার মতো একটির বদলে দশটি লাশ ফেলার আহ্বান জানাই না৷ তবে এই অবৈধ সরকারের এক মন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, আন্দোলনকারীদের ঘরে ঘরে ঢুকে হত্যা করতে হবে৷ আমি নেতাকর্মীদের সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এরা যদি কেউ আপনাদের ঘরে ঢুকে আর যেন বের হতে না পারে৷ কারো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না৷ বিভ্রান্তির অবকাশ নেই৷ যখন খবর পাবেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছে, ঠিক তখনই রাজপথ ছাড়বেন৷ তার আগে নয়৷ নব্বইয়ে আপনারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সফল হয়েছিলেন, এবারো আপনারা সফল হবেন৷ তবে এই আন্দোলনে নিরীহ কোনো মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন৷

তারেক রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জনগণ নেই৷ তাদের সঙ্গে আছে বিশেষ অঞ্চলের কিছু র্যাব পুলিশ৷ এই র্যাব পুলিশ ছাড়া এদের রাস্তায় নামার মুরোদ নেই৷ র্যাব পুলিশ ছাড়া এরা কিছুই করতে পারবে না৷ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রয়েছে দেশের জনগণ৷

তারেক রহমান তরুণদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি তোমাদের এই নিশ্চয়তা দিতে পারি, বিএনপি আসলে বেটার বাংলাদেশ হবে৷ সেই বাংলাদেশে কালো বিড়াল সাদা করা হবে না৷ অন্যায়কে অন্যায়, ন্যায়কে ন্যায় বলা হবে৷ গণতন্ত্রের কথা বলে অন্য দলের ওপর জেল-জুলুম করা হবে না৷ স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে ক্রেস্টের স্বর্ণ চুরি করা হবে না৷ অন্যায়ের সমালোচনা করলে গণমাধ্যম বন্ধ করা হবে না৷ বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হবে না৷ ফেসবুকে সমালোচনার জন্য জেল-জুলুম হবে না৷

তারেক রহমান বলেন, আজ বাংলাদেশে গণতন্ত্র বন্দী৷দুর্নীতি, দুঃশাসন, জুলুম নির্যাতনে মানুষ অসহায়৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক৷তাকে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে৷তিনি ছাত্রদল-যুবদল- স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মাকে যদি তোমাদের কাছে আসতে দেয়া না হয়, সন্তান হিসেবে তোমাদের উচিত মাকে মুক্ত করা৷

তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশ মাতৃকা আজ অবরুদ্ধ৷ বাকশালীদের হাত থেকে দেশ মুক্ত করতে হবে৷গণতন্ত্র মুক্ত করতে হবে৷ গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে৷

তিনি বলেন, এই জানুয়ারি মাসেই শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্র হত্যা করেছিলেন, বাকশাল কায়েম করেছিলেন৷ হরণ করেছিলেন মানুষের বাক স্বাধীনতা৷ সেই জানুয়ারি মাসেই পিতার মতো শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন৷তারেক রহমান বলেন,শেখ হাসিনা সরকার অবৈধ সরকার৷ দুর্নীতিবাজ সরকার৷”

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বন্ধুপ্রতীম ভারত থেকে একজন কর্মকর্তা শেখ মুজিবের কাছে এসেছিলেন৷ শেখ মুজিবকে তিনি জানিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগৃহীত কিছু টাকা ভারত সরকারের কাছে রয়েছে৷ এই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে ফেরত আনতে শেখ মুজিবকে নিয়মানুযায়ী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি আহ্বান জানান৷ কিন্তু প্রতি-উত্তরে শেখ মুজিব ব্যাংকের মাধ্যমে না এনে এসব টাকা বস্তায় ভরে ট্রাকে পাঠানোর প্রস্তাব দেন এবং বলেন, এসব টাকা তিনি পরবর্তী নির্বাচনে খরচ করবেন৷ এ তথ্য প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন তারেক রহমান৷

তিনি বলেন, এটি প্রমাণ করে শেখ মুজিব বাংলাদেশে প্রথম দুর্নীতিকে ভিত্তি দিয়েছিলেন৷শেখ মুজিবের মতো তার কন্যাও একই পথ অনুসরণ করছে৷তারেক রহমান আরো বলেন, শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে৷ জনগণের চাওয়া ছিল একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন৷ কিন্তু তারা জানে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয় লাভ করতে পারবে না৷ এ কারণে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোর খাটিয়ে সংবিধান সংশোধন করে ৫ জানুয়ারি তামাশার নির্বাচন করেছিল৷ তারা জানে, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বিডিআর বিদ্রোহের নামে মুখোশধারীরা যেভাবে বাংলাদেশের গর্ব মুক্তিযুদ্ধের গর্ব সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছিল, এর বিচার হবে৷

তারা জানে, কুইক রেন্টালের নামে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে, তার বিচার হবে৷ তারা জানে, আইটি সেক্টরে দুর্নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় উপদেষ্টা পরিচয়ে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন, তারও বিচার হবে৷ তারা জানে, বিএনপিসহ বিরোধী জোটের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে৷ এর বিচার হবে৷ তারা জানে, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের খুন-হত্যা করা হয়েছে৷ এর বিচার হবে৷ সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার বিচার হবে৷ এ কারণেই তারা মানুষ খুন করে গুম করে ক্ষমতা দখল করে রাখতে চায়৷

নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, তোমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিলে৷ কিন্তু তোমাদের সেই আশা কী সফল হয়েছে? তোমরা আর কত ঠকতে চাও৷ তিনি তরুণদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু ফেসবুক নয়, রাজপথের আন্দোলনেও শরীক হতে হবে৷তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে দুদক কালো বিড়ালকে সাদা করে৷ দুর্নীতিবাজকে সার্টিফিকেট দেয়৷ পদ্মা সেতুর দুর্নীতিবাজদেরকে এই দুদক সাদা বিড়াল বানায়৷ পদ্মা সেতুর আসল দুর্নীতিবাজ শেখ হাসিনার চোখে সেরা দেশপ্রেমিক৷ এই হলো শেখ হাসিনার দেশপ্রেম৷

এরা কথায় কথায় স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে৷ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে৷ আসলে এর কোনোটিতেই তারা বিশ্বাস করে না৷ আওয়ামী লীগ মূলত রাজাকারের দল৷ বাংলাদেশের বহু রাজাকার এই দলে রয়েছে৷ এমনকি শেখ হাসিনার ঘরেও রয়েছে নামকরা রাজাকার৷ রাজাকারদের সঙ্গে সখ্যতা তাদের দীর্ঘদিনের৷তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য বিদেশী বন্ধুদের সম্মাননা দেয়া হয়েছিল৷ সেই সম্মাননা ক্রেস্টের সোনা ও রূপাও তারা চুরি করেছে৷ প্রকাশ্যে সেই চোরদের পক্ষ নেন শেখ হাসিনা৷

তিনি বলেন,শেখ মুজিব রক্ষী বাহিনী তৈরি করে সেনাবাহিনী ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ তার মেয়ে শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সেনা বাহিনীর ৫৭ কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করেছেন৷ যারা এই হত্যার তদন্ত চেয়েছে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করেছেন৷ এদের অনেককে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ এভাবে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ও চাকরিচু্যতির মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা৷

তিনি বলেন, এই সরকার শিক্ষাঙ্গণগুলোকে ছাত্রলীগের লুট ও অবৈধ ব্যবসা কেন্দ্রে পরিণত করেছে৷ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে৷ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারছে নাশেখ হাসিনার এ ব্যাপারে কোনো আগ্রহ নেই৷ কারণ তার পরিবারের সদস্যরা কেউ দেশে পড়াশুনা করেনি৷ এজন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেলেও তার কিছু আসে যায় না৷

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনারা যারা এ অবৈধ সরকারের পক্ষ অবলম্বন করেন, তাদের কাছে আমি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা আশা করি না৷ কিন্তু আপনারা কী নিজেদের কখনো প্রশ্ন করেছেন, কেন আপনারা আপনাদেরই সহকর্মী সাগর-রুনী হত্যার বিচার চাইতে পারেন না? সেই বাস্তবতায় আমি আপনাদের কাছে নিরপেক্ষতা নয়, সাগর-রুনির নিষ্পাপ সন্তান মেঘের দিকে তাকিয়ে হলেও বস্তনিষ্ঠ তথ্য আশা করি৷

তিনি বলেন, এ সরকার বিচার বিভাগকেও ধ্বংস করছে৷ এ সরকারের আমলে একজন প্রধান বিচারপতি একজন রাজনৈতিক নেতার কবর জিয়ারত করেছিলেন৷ সেখানে তিনি মন্তব্য বইয়ে ওই রাজনৈতিক নেতার আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন৷ এ অবস্থায় নিরপেক্ষ বিচার সম্ভব কি-না এটি জনগণের প্রশ্ন ৷
যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এ প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস৷ সভা পরিচালনা করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ৷