???????????????????????????????বিএনপির চলমান আন্দোলন সফল করার জন্য ঢাকায় সমাবেশ করতে ৪-৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নেতা কর্মীরা ঢাকায় আসতে পারেননি। এখন তারা যাতে ঢাকায় আসতে পারেন সেই জন্য তাদেরকে আগামী ৮ থেকে ১০ জানুয়ারির মধ্যে ঢাকায় আসার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিএনপির ৬৪ জেলার দায়িত্বশীল বিভিন্ন স্তরের নেতার কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে তারা যাতে সুসংগঠিত হয়ে নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। যাকে যেভাবে পােেরন সেভাবে ঢাকায় পাঠানোর জন্যও বলেছেন। ঢাকায় আসার পর কি হবে এটা তাদেরকে স্পষ্ট করা না হলেও তাদেরকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা না ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। ইজতেমা উপলক্ষে যারা ঢাকায় আসবেন তারা যাতে কমপক্ষে ৫-৭ দিন ঢাকায় থাকার জন্য আসেন ও সেই ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আসেন সেটিও বলা হয়েছে। এই অবস্থায় বিএনপির নেতা কর্মীরা ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপির বিশ্বস্ত সূত্রে এই তথ্য মিলেছে।

সূত্র জানায়, ঢাকায় ইজতেমাকে সামনে রেখে ২০ লাখ মানুষ জড় করা বিএনপির একটা নতুন কৌশল। আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা চলবে। এই ইজতেমায় অন্যান্যবারও বিএনপির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা কর্মী যোগ দেন। বিএনপি চেয়ারপারসনও আখেরী মোনাজাতে যোগ দেন। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এই ইজতেমাতে যোগ দেওয়ার জন্য তারা ঢাকায় আসবেন এবং সেখানে অবস্থান করবেন। তারা সবাই পায়জামা পাঞ্জাবী, টুপি পড়ে আসবেন নাকি যে কোন পোশাকে আসবেন এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, সেই রকম কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তারা পায়জামা, পাঞ্জাবী, টুপি পড়েও আসতে পারেন আবার সাধারণ পোশাকেও আসতে পারেন। লুঙ্গি, শার্ট, চাদর গায়ে দিয়ে আসতেও সমস্যা নেই।

সূত্র জানায়, বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন যে, অন্যান্য সময় সরকার সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দিয়ে ঢাকায় নেতা কর্মীদের আসতে বাধা  দেয়। কিন্তু ইজতেমা উপলক্ষ্যে তারা সেই কাজটি করতে পারবে না। কাউকে বাধাও দিতে পারবে না। কারণ ধর্মপ্রাণ মসুলমানরা বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে আসবেন স্বাভাবিকভাবে। আর এই অবস্থায় এই সুযোগটি নিতে চাইছে বিএনপি। এটাও বলেছেন, সরকার নেতা কর্মী ও সমর্থকদের ইজতেমাতে যোগ দিতে ঢাকায় আসতে বাধা দিলে ধর্মীয় কাজ পালনে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে সরকারে বিরুদ্ধে তারা মুসল্লিদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবেন। সেক্ষেত্রে আন্দোলন সহিংসতায়ও রূপ নিতে পারে।

সূত্র জানায়, যেসব নেতা কর্মী ও সমর্থকরা ঢাকায় আসবেন তারা যে সবাই ঢাকায় এসে ইজতেমাতে যোগ দিবেন এমন নয়। তারা ইজতেমাতে যোগ দিতে পারেন আবার নাও পারেন। যারা ঢাকায় আসবেন কিন্তু ইজতেমাতে যোগ দিবেন না তারা ঢাকায় থাকবেন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে।
ইজতেমা উপলক্ষে বিপুল এই জনসমাগম করার কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, এই ইজতেমা শেষ হওয়ার পর পরই বিএনপি চেয়ারপারসন চেষ্টা করবেন একটি সমাবেশ করার। ওই সমাবেশে তিনি যে কোন মূল্যে যোগ দিবেন। এর জন্য কোন জায়গা নির্ধারিত হয়নি। যখন যেখানে যে অবস্থায় পারবেন নেতা কর্মীরা জড় হবেন তিনি বাইরে বের হয়ে এসে বক্তৃতা করবেন। আর তাকে সরকার তালাবদ্ধ করে রাখলে ওই তালা ভেঙ্গে যাতে নেতা কর্মীরা তাকে নিয়ে আসেন সেই রকমও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিএনপির এই পরিকল্পনা সফল করার জন্য জামায়াতেরও সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনায় জামায়াতকেও বলা হয়েছে কমপক্ষে তাদের দশ লাখ নেতা কর্মী ও সমর্থককে ঢাকায় আনার জন্য। তারাও ঢাকায় আসবেন ও ইজতেমায় যোগ দিবেন। তারা ইজেতমাতে যোগ দেওয়ার পর বিশ দলীয় জোটের সমাবেশে অংশ নিবেন। জামায়াতও তাদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সূত্র জানায়, সমাবেশের জন্য ঘোষণা আসতে পারে যে কোন সময়ে। তবে এই ব্যাপারে দুটি তারিখ চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। এছাড়াও সরকার যাতে করে তাদের সমাবেশ পন্ড করতে না পারে সেই কারণে অনেকটা গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। বিশ্বস্ত সূত্র আরো জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এই সমাবেশের পরিকল্পনা সফল করার জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তারা মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমাতে যে কেউ যোগ দিতে পারবেন যদি তিনি ধর্মীয় কাজ পালনের জন্য আসেন। কিন্তু বিশ্ব ইজতেমাকে উপলক্ষ করে ঢাকায় কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করবেন, আইনভঙ্গ করার চেষ্টা করবে, সরকার সেটা কোন ভাবেই সহ্য করবে না। বিএনপি কোন ভাবেই ঢাকায় কোন ধরনের সমাবেশ করতে পারবে না বলেও তিনি সতর্কতা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশ করার কোন সুযোগ এখন নেই। এখন ঢাকায় সর্বত্র সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। সেই নির্দশনা তারা ভাঙ্গলে কঠোর ব্যবস্থা নিবে সরকার।