bgmea_203529.png

দৈনিকবার্তা-ঢাকা ১২ জানুয়ারি: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে গত কয়েক দিনে তৈরি পোশাক শিল্প খাতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে৷সোমবার তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে৷

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৪-১৫ অর্থবছরে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে লৰ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার, যা টাকার অংকে প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা৷ সেই হিসেবে, একদিন অররোধ বা হরতাল থাকলে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্থ হয়৷ আর প্রতিদিন এই শিল্পে প্রকৃত উত্‍পাদনের মূল্যমান হচেছ প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা৷ হরতাল বা অবরোধের কারণে যদি উত্‍পাদন ৫০ শতাংশও বিঘি্নত হয়, তাহলে প্রতিদিন উত্‍পাদন ব্যাহত হয় অনত্মত ২১৫ কোটি টাকার৷

তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বর্তমানে পোশাক শিল্পে এক উত্‍কন্ঠাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে৷ পোশাক শিল্প আজ একরকম বিপর্যয়ের দ্বারপ্রানত্মে উপনীত হয়েছে৷ শুধুমাত্র ইমেজ সংকটের কারণে বর্তমানে ব্যবসা হারানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷আতিকুল ইসলাম জানান, বড়দিনের উত্‍সব শেষ হওয়ার পর বছরের শুরুতে এখন নতুন নতুন রপ্তানি অর্ডার পাওয়ার সময় হলেও এই সময়ে এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি অনভিপ্রেত৷ ক্রেতারা অর্ডার দেয়ার জন্য এখন এখানে আসতে পারছেন না৷ এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সহিংসতা একটি দানব আকারে আবির্ভূত হয়েছে৷ এই অবস্থা চলতে থাকলে এই খাতে শ্রমিকদের বেতন দেয়া মালিকদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে যাবে বলে তিনি জানান৷

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে মালামাল আনা নেয়া করা গেলেও স্বাভাবিকভাবে নির্বিঘ্নে মালামাল আনা-নেয়া করা যাচ্ছে না৷ আর শুধুমাত্র ঢাকা ও চট্রগ্রামই নয়, পোশাক শিল্পের বিভিন্ন এঙ্সেরিজ যেমন বোতাম, জিপার, সুতাসহ বিভিন্ন সামগ্রী স্থানীয় পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করতে হয়৷ অবরোধ বা হরতাল থাকলে এগুলো সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না৷ ফলে সমগ্র সাপস্নাই চেইন ব্যাহত হচ্ছে৷বিজিএমইএ সভাপতি জানান, গত বছরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার এয়ার শিপমেন্ট করতে হয়েছে৷ আর ৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য ডিসকাউন্ট হয়েছে৷

পোশাক শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা এবং জাতীয় অর্থনীতিকে সচল রাখার স্বার্থে পোশাক শিল্পকে সকল ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচীর আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন এলাকাসমূহ, যেসব এলাকা থেকে শিল্পের বিভিন্ন এঙ্সেরিজ আসে সেগুলো হরতাল ও অবরোধসহ সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমের আওতামুক্ত রাখুন, যাতে সাপ্লাই চেইন অব্যাহত থাকে৷সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, তারা প্রয়োজনে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করবেন এবং তাদের সমস্যার কথাগুলো বলবেন৷সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি, মো. ছিদ্দিকুর রহমান এবং সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজীম উপস্থিত ছিলেন৷