Rizvi

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ জানুয়ারি: আন্দোলন দমাতে সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে গুপ্তহত্যার অবাধ লাইসেন্স দিয়েছে–এ অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী৷ বুধবার এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে এ কথা জানান র তিনি৷বিবৃতিতে রিজভী বলেন, গতবছর ৫ জানুয়ারির আগে বিরোধীদলের কর্মীদের বাসা থেকে বা অন্য কোনো জায়গা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করে দেয়া হয়েছে বা কয়েক দিন পর ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে,আবারো আগের অবস্থানে ফিরে গেছে সরকার৷

রিজভী অভিযোগ করেন, বিরোধীদলের আন্দোলন ঠেকাতে আবারো সরকার হত্যার নেশায় মেতেছে৷ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আবার কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে আন্দোলনরত বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে৷এরইমধ্যে ১০ জনের বেশি বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

তিনি আরো বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করছে পুলিশ-র্যাব৷ যাকে পাওয়া যাচ্ছে, তাকেই সেখান থেকে তুলে নিয়ে হয়তোবা সেখানেই অথবা অন্য কোনো অজ্ঞাত স্থানে গুলি করে হত্যার পর লাশ উদ্ধার দেখাচ্ছে৷

গত পরশু রাতে রাজধানীতে সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে তাঁর মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে৷ এ ছাড়া নড়াইল পৌর কমিশনারের লাশ ঢাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে৷শুধু বিরোধীদলের আন্দোলনকে দমানোর জন্য সরকারি বাহিনীগুলোকে মানবতাবিরোধী গুম, গুপ্তহত্যার অবাধ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে৷

সরকার তার এজেন্টদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধীদলের ওপর দায় চাপাতে হরদম মিডিয়াতে প্রচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷রিজভী বলেন, অধিকাংশ গণমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে কবজা করে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে কুত্‍সা আর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে৷

সরকার দেশকে হত্যা ও লাশের মহামারির দেশে পরিণত করতে পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী৷ বিবৃতিতে রিজভী বলেন, গত বছর ৫ জানুয়ারির আগে বিরোধী দলের কর্মীদের বাসা থেকে বা অন্য কোনো জায়গা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করে দেওয়া কিংবা কয়েক দিন পর ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকার মতো অবস্থা আবার দেখা যাচ্ছে৷

রিজভী অভিযোগ করেন,বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে আবারও সরকারকে হত্যার নেশায় পেয়েছে৷ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো আবার কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে আন্দোলনরত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি থেকে তুলে নিযয়ে গিয়ে হত্যা করছে৷ এরই মধ্যে ১০ জনের বেশি বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীকে হত্যার সংবাদ সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকার যে ভয়ংকর গণদুশমন তার আরও একটি প্রমাণ হলো-কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে হত্যার জন্য পুলিশকে সমর্থন দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী৷ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যেনো হিটলারের সহযোগী নাত্‍সী আইকম্যানের ভূমিকা পালন করছেন৷
তিনি বলেন, আদিম শিকারীরা যেমন শিকারকে বধ করার পর বন্য উল্লাসে মেতে উঠে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য সেই উল্লাসেরই প্রতিধ্বনি৷ এ ধরনের মানবতাবিরোধী বক্তব্য কেবলমাত্র বেআইনী অবৈধ সরকারের সদস্যদেরই সাজে৷

রিজভী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তার নিজ কার্যালয়ে ইট, বালি ও কাঠের ট্রাকসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার পরও বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি মর্মে প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে যে মিথ্যাচার করেছেন, সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে খালেদা জিয়া মানুষ হত্যা করছেন, তাকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে যে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন তাতে জাতির কাছে আরেকটি মিথ্যাচারের অবতারণা করলেন প্রধানমন্ত্রী৷

রিজভী আহমেদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ রেখে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে রেখে বর্তমান অবৈধ সরকার গায়ের জোরে দেশটাকে দখলে রেখে ভয়াবহ দুঃশাসন চালিয়ে যাচ্ছে৷তিনি প্রধানমন্ত্রীর নিকট প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি’র সদর দপ্তর তালাবদ্ধ রেখে প্রতিদিন বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সাদা পোষাকধারীরা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে কোনো না কোনো মায়ের বুক খালি করছে, এসব পৈশাচিক ও মানবতাবিরোধী অপকর্মগুলো কার নির্দেশে তামিল করা হচ্ছে? সেটিও জনগণ জানে৷

রিজভী আহমেদ বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালাতে একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে৷ আর এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোকে কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার৷

রুহুল কবির রিজভী বর্তমান অবৈধ সরকার কর্তৃক নিষ্ঠুর জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ জনগণের প্রতি চলমান আন্দোলন সফল করতে উদ্বাত্ত আহবান জানান৷ রিজভী আহমেদ বলেন,জনগণের দাবি হচ্ছে, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ঘোষণা করা৷বর্তমান সংকট নিরসন করতে হলে সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে৷

রিজভী বলেন , চলমান অবরোধের পাশাপাশি র্যাব-পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকে হত্যা, গুপ্তহত্যা ও বিভত্‍স দমন-পীড়ণের প্রতিবাদে আজ থেকে শুরু হওয়া ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা বিভাগ ও খুলনা বিভাগে ৪৮ ঘন্টার হরতাল সফল করার জন্য ২০ দলীয় জোটের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আহ্বান জানান রিজভী৷