_20150124165212

দৈনিকবার্তা- গাজীপুর, ২৪ জানুয়ারি: গাজীপুরের কোনাবাড়িতে শনিবার এক সিনথেটিক কারখানায় ভয়াবহ অগি্নকান্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ আগুনে কারখানার চারটি ইউনিটের মেশিনপত্র, সিনথেটিক, কাপড়, সুতাসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে৷ ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট প্রায় ৬ ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷ আগুন নেভাতে গিয়ে দুই শ্রমিক আহত হয়েছে৷ এদিকে অগি্নকান্ডের এঘটনা তদনত্মের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের পৰ থেকে পৃথক দু’টি তদনত্ম কমিটি গঠণ করা হয়েছে৷ আগুনে অর্ধশত কোটি টাকারও বেশী ৰয়ৰতি হয়েছে বলে কারখানা কর্তৃপৰ দাবী করেছে৷

ফায়ার সার্ভিস ও কারখানার সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি বিসিক শিল্প এলাকায় কাদের সিনথেটিক ফাইবার্স কারখানার কম্পাউন্ডে ওই কারখানার ৪টি ইউনিটের ৪টি ভবন রয়েছে৷ এছাড়াও একই ক্যাম্পাসে কারখানা ভবন সংলগ্ন রয়েছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য চার তলা আবাসিক ভবন৷ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কারখানার স্পিনিং সেকশনের দ্বিতল টিন শেড ভবনের নীচ তলায় সিনথেটিক মেশিনের ফলস্ সিলিংয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়৷ সকালে নাইট শিফ্ট শেষ হবার পর ডে শিফ্ট এর কর্মীরা যখন কাজে যোগদানের জন্য কারখানায় প্রবেশ করছিল তখন এ অগি্নকান্ডের ঘটনা ঘটে৷ মুহূর্তেই আগুন সিলিংয়ের ডাস্ট এবং সিনথেটিক কাপড় ও সূতাসহ দাহ্য পদার্থে ছড়িয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়৷ আগুনের লেলিহান শিখা কারখানার ওই ভবনসহ পাশর্্ববর্তী নিটিং, কমপেক্ট ও কোন সেকশনের অপর তিনটি ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আকার ধারন করে৷

এ তিনটি ভবনের মধ্যে দু’টি দ্বিতল টিন শেড ভবন, অপরটি তিন তলা ভবনের উপরের তলায় টিন শেড রয়েছে৷ আগুনের ভয়াবহতা ও প্রচন্ড ধোঁয়ার কারনে পাশর্্ববর্তী আবাসিক ভবনের লোকজনের মাঝে আতংক দেখা দেয়৷ এসময় ওই ভবনে অবস্থানরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরম্ন করে এবং পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা কালে দু’শ্রমিক আহত হয়৷ খবর পেয়ে ঢাকা সদর দপ্তর, সাভার ইপিজেড, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টংগী ও মির্জাপুর ফায়ার সার্ভিসসহ আশপাশের কয়েকটি ষ্টেশনের ১৬টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়৷ কিন্তু পানি স্বল্পতার কারণে আগুন নেভানোর কাজে বিঘ্ন ঘটে৷ প্রায় ছয় ঘন্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুপুর দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷ এরই মধ্যে পুড়ে গেছে ওই কারখানার চারটি ভবনের মেশিনপত্রসহ বিপুল পরিমান সিনথেটিক কাপড় ও সুতাসহ বিভিন্ন মালামাল৷

বিকালে ৫টায় পর্যনত্ম পুরোপুরি আগুন নেভাতে ডাম্পিংয়ের কাজ করছিল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ আগুনের তাপে ভবনের কয়েক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে৷ গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন৷ কারখানার কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নূর হোসেন জানান, ওই কারখানায় তিন শিফটে অর্ধ সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করে৷ সকালের শিফটের শ্রমিকরা সাড়ে ৭টার দিকে কাজে যোগ দিতে এসে কারখানার ভেতরে ধোঁয়া দেখে৷ এসময় কারখানার সতর্ক সংকেত বেজে উঠলে শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বেরিয়ে যায়৷ এ কারণে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি৷ তবে আগুন নেভাতে গিয়ে দু’শ্রমিক আহত হয়েছে৷ কারখানার ব্যবস্থাপক মনিরম্নল ইসলাম জানান, কারখানার সিমপেস্নঙ্ মেশিনের উপরের ফলস সিলিং থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়৷ আগুনে কারখানার সমসত্ম মালামাল পুড়ে গেছে৷ এতে অর্ধশত কোটি টাকারও বেশী ৰয়ৰতি হয়েছে৷

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক আখতারম্নজ্জামান লিটন জানান, তদনত্ম সম্পন্ন না হওয়া পর্যনত্ম আগুনের সঠিক কারণ ও ৰয়ৰতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব নয়৷ তবে বৈদু্যতিক শট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে৷ এ ব্যপারে গাজীপুর জেলা প্রশাসক নুরম্নল ইসলাম জানান, অগি্নকান্ডের এঘটনা তদনত্মের জন্য গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পৰ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. হোসেনকে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদনত্ম কমিটি গঠণ করা হয়েছে৷ কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদনত্ম রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে৷ এছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের পৰ থেকেও অপর একটি তদনত্ম কমিটি গঠণ করা হয়েছে৷