1422115565

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি: ছেলে হারানোরশোকে নির্বাকুমূহ্যমান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া৷ নিজের ঘরে কবাট বন্ধ করে একান্তে অশ্রুপাত করছেন তিনি৷ বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করছেন না৷এদিকে, ছেলে মৃতু্যতে শোকে বিহ্বল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে৷ তিনি এখন ঘুমিয়ে আছেন৷ তাই প্রধানমন্ত্রী এখন তার সঙ্গে সাক্ষাত্‍ করতে পারবেন না৷শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়পারপারসনের কার্যালয়ে এমনটাই জানিয়েছেন খালেদার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস৷

তিনি জানান, ছেলের শোকে অস্থির হয়ে পড়েছেন খালেদা জিয়া৷ চিকিত্‍সকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে৷ তিনি সুস্থ বোধ করলে এবং সাক্ষাত্‍ করার মতো পরিস্থিতি হলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় দেয়া হবে৷ তখন তিনি চাইলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্‍ করতে পারেন৷সদ্য প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর মা বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গুলশানে তার কার্যালয়ে এসেছিলেন টওধানমন্ত্রী৷তবে কার্যালয়ের গেট না খোলায় মিনিট পাঁচেক অবস্থানের পর প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ফিরে যায়৷

শনিবার দুপুরে মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় আরাফাত রহমান কোকোর৷ সন্ধ্যা নাগাদ ঘোষণা আসে প্রধানমন্ত্রী আসছেন গত ৩ জানুয়ারি থেকে নিজের কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে৷কিন্তু পপ্রানমন্ত্রী আসার খানিক আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস জানান, খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে৷

এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আসার সময় পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান শিমুল বিশ্বাস৷এর কিছুক্ষণ পর প্রধানমন্ত্রী আসেন৷ তার গাড়ি বহর বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছায় রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে৷ দুই সিনিয়র মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমু আগেই সেখানে উপস্থিত হন৷

কার্যালয়ের সামনে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে কয়েক কদম এগিয়েও যান প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় শেষ তক ফিরে যায় তার গাড়ি বহর৷শোক সন্তপ্ত খালেদাকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য আসার ইচ্ছা প্রকাশ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদও দেন শিমুল বিশ্বাস৷অন্যদিকে, ছোট ছেলের মৃতু্যতে শোকে মুহ্যমান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে তার গুলশান কার্যালয়ে এসেও ফিরে যেতে হলো আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে৷

শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় তিনি সেখানে পৌঁছান৷ কিন্তু শোকে বিহ্বল খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে বলে জানালো হলে তিনি মূল ফটকে থেকেই ফিরে যান৷এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মো. নুর এলাহি মিনা বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷

এর আগেই খালেদার গুলশান কার্যালয়ের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়৷ এসএসএফ, পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়৷তবে রাত সাড়ে ৮টার কিছু আগেই খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, শোকে অস্থির খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন৷৩ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন৷গুলশান কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, শনিবার বেলা আড়াইটার সময় খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ এসকান্দরের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ ও শামীম এসকান্দরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা খালেদা জিয়াকে তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃতু্যর সংবাদ দেন৷ তাঁরা বলেছেন, দুই ভাইয়ের স্ত্রীদের কাছ থেকে ছেলের মৃতু্যর সংবাদ পেয়ে নির্বাক হয়ে যান খালেদা জিয়া৷ পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ কিন্তু কোনো কথা বলতে পারেননি৷ এর পর থেকে তিনি তাঁর কক্ষে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না৷

খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,ওনার ঘরের দরজা বন্ধ৷ কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷

এদিকে গুলশানের কার্যালয়ে গেছেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এসকান্দর, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক প্রমুখ৷

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ায় আরাফাত রহমান কোকোর মৃতু্য হয়৷ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করেন৷ বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হলে কোকোকে মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান৷

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্রথম জানাজা রোববার বাদ জোহর মালয়েশিয়ার জাতীয় মসজিদ নাগারায় অনুষ্ঠিত হবে৷ বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার অ শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন৷শামসুদ্দিন দিদার জানান, কোকোর জানাজার পর মরদেহ বাংলাদেশে আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে৷

এদিকে, ছোট ভাইয়ের মৃতু্য সংবাদ শুনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে মালয়েশিয়ায় যেতে পারেন বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে৷ তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি৷

কোকো মারা গেছেনআরাফাত রহমানের মৃতু্যর খবর পেয়ে রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে গেছেন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা৷ এর মধ্যে রয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদ, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরীসহ অনেকে৷

এদিকে, খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে কোরআন তিলাওয়াতের জন্য স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রকে নিয়ে আসা হয়েছে৷২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তার হন আরাফাত রহমান কোকো৷ চিকিত্‍সার জন্য ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই আদালতের অনুমতি নিয়ে চিকিত্‍সার জন্য থাইল্যান্ড যান তিনি৷ পরে সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়া যানএদিকে,অতি আদরের ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর আকষ্মিক মৃত্যুতে শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷

ভাইকে শেষ দেখা দেখতে শনিবারই মালেশিয়ার উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগের পরিকল্পনা করছেন তিনি, এমনটিই জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র৷সূত্র জানান, শনিবার লন্ডন সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে কোকোর মৃতু্য সংবাদ পান তারেক৷

খুবই পাশাপাশি সময়েই ঢাকা ও মালেশিয়া থেকে তারেককে এই মৃতু্য সংবাদ দেওয়া হয়৷ অবশ্য তারেকের মালয়েশিয়া যাওয়ার খবরটির সত্যতা কাছে নিশ্চিত করতে পারেননি তারেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মহিদুর রহমান৷লন্ডন সময় সকাল ১১টায় এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, তারেক রহমান মালয়েশিয়া যাচ্ছেন কিনা, তা তিনি এখনও জানেন না৷তিনি বলেন, আমি রওয়ানা দিয়েছি তার বাসার দিকে৷ সেখানে গিয়ে জানার চেষ্টা করবো, তার (তারেক) পরিকল্পনার কথা৷

মহিদ জানান, কোকোর মৃতু্য সংবাদ আসার পর তারেকের সঙ্গে এখন পর্যন্ত তার কথা হয়নি৷ তার (তারেক) বাসায় যাচ্ছেন বলে টেলিফোন আনসারিং মেশিনে তিনি মেসেজ রেখেছেন৷একই সময়ে তারেক রহমানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম ও তারেকের মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যাপারে এখনও কিছু জানেন না বলে জানান ৷তিনি বলেন, আমিও রওয়ানা হয়েছি তার (তারেক) বাসার উদ্দেশে৷এদিকে, ভাই হারানোর শোকে বিহ্বল বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান মালয়েশিয়া যাচ্ছেন না৷ তারেক রহমানের একজন সহকারী এবং লন্ডন বিএনপির একাধিক নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেন৷

লন্ডনে স্থানীয় সময় দেড়টায় যখন মোবাইলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তখন তাঁরা তারেক রহমানের বাসায় অবস্থান করছিলেন৷খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো আজ শনিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে মালয়েশিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন৷ রোববার মালয়েশিয়ায় কোকোর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে৷ লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান ভাইয়ের মৃতু্যর সংবাদ শুনে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন, এমন কথা চাউর হয়েছিল৷ ঢাকায়ও বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছিলেন, তারেক রহমান মালয়েশিয়া যেতে পারেন৷

বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান জানান, কোকোর মৃতু্যর সংবাদে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন তারেক রহমান৷ যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা কর্মীরা তারেক রহমানের বাসায় গিয়ে দেখা করতে ভিড় জমাচ্ছেন৷ তারেক রহমান সবার সঙ্গে দেখা করছেন৷ তবে তিনি ছোট ভাইকে হারানোর শোকে কাতর৷

লন্ডনের ইস্ট লন্ডন মসজিদে কোকোর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান মাহিদুর রহমান৷ তিনি বলেন, এর আগে আজ কোকোর আত্মার মাগফিরাত কামনায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে৷এদিকে, তারেক মালয়েশিয়া যাচ্ছেন এ তথ্য প্রদানকারী যুক্তরাজ্য বিএনপির ওই সূত্র জানান, ভাই কোকোর মৃতু্য সংবাদ পাওয়ার পর তারেক শোকে কাতর হয়ে পড়েন৷ ভাইয়ের সঙ্গের বিভিন্ন স্মৃতি স্মরণ করে ক্ষণে ক্ষণে তারেক ঢুকরে কেঁদে উঠছেন৷

সূত্র মতে, প্রথমে এই আকষ্মিক দুঃসংবাদটি পেয়ে কিছুক্ষণ কথাই বলতে পারেননি তারেক৷ এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি৷ স্ত্রী জোবায়দা রহমান তাকে শান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি কোকোর মৃতু্যর কারণ জানতে মালয়েশিয়া কথা বলেন৷

শোককাতর তারেককে ঢাকায় মা খালেদা জিয়ার সঙ্গেও প্রথম কথা বলিয়ে দেন জোবায়দা৷ এরপর কয়েকবারই মায়ের সঙ্গে কথা বলেন তারেক৷ যেহেতু দেশে যেতে পারবেন না, সেহেতু তারেককে মালেয়শিয়া গিয়েই ভাইকে শেষবারের মতো দেখার পরামর্শ দেন মা খালেদা জিয়া, এমনই জানায় ওই সূত্র৷সূত্রের দাবি, রোববার মালয়েশিয়া পৌঁছে সেখানে অনুষ্ঠিত কোকোর জানাজায় অংশ নেওয়া যায় কিনা সেটিই এখন চেষ্টা করছেন তারেকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতারা৷ অবরোধের মধ্যে ৩৬ ঘন্টার হরতালের ঘোষণা বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে দেওয়ার পর শনিবার দুপুরে গুলশানে নিজের কার্যালয়ে বসে সংবাদপত্র পড়ছিলেন খালেদা জিয়া৷এই সময়ই আরাফাত রহমান কোকোর মৃতু্যর খবর নিয়ে দুই ভাইয়ের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ ও কানিজ ফাতেমা ওই কার্যালয়ের দোতলায় ওঠেন৷

দোতলায় নিজের চেম্বারে গত ৩ জানুয়ারি থেকে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন৷ বেলা আড়াইটার দিকে সরাসরি সেখানে উঠে যান শামীম এস্কান্দার ও প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের স্ত্রীরা৷

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, দুই ভাইয়ের বউয়ের কাছ থেকে ছেলের মৃতু্যর সংবাদ পেয়ে এক রকম নির্বাক হয়ে কেঁদে ফেলেন খালেদা জিয়া৷ কান্নায় তিনি কোনো কথা বলতে পারেননি৷এরপর লন্ডন থেকেও টেলিফোন আসে খালেদা জিয়ার কাছে৷ বড় ছেলে তারেক রহমান রয়েছেন সেখানে৷জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত শনিবার দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মারা যান৷ তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর৷ স্ত্রী সৈয়দ শামিলা রহমান সিঁথি, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন আরাফাত৷

জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার হয়ে এক বছর কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই মুক্তি পেয়ে চিকিত্‍সার জন্য থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন আরাফাত৷ সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান৷ অন্যদিকে মুদ্রা পাচার মামলায় বাংলাদেশের আদালতে ২০১১ সালে তার ৬ বছর কারাদণ্ড হয়; তবে বিএনপির দাবি, এই মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷

২০১৩ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ে খালেদা জিয়া ব্যাংককে যাত্রাবিরতি দিয়ে ছোট ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলেন৷ সেটাই ছিল মায়ের সঙ্গে তার শেষ সাক্ষাত্‍৷আরাফাতের দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিকালে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান৷

সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফউদ্দিন নিজান জানান, আরাফাতের মরদেহ মালইয়া ইউনির্ভাসিটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে৷ রোববার জোহরের নামাজের পর কুয়ালালামপুরে নিগারা মসজিদে জানাজা হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন৷

আরাফাতের মৃত্যুর সংবাদের পর গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে ছুটে যান নিকটাত্মীয়রা৷ আরাফাতের শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের সদস্যরাও যান সেখানে৷আরাফাতের মৃতু্য সংবাদে গুলশানে কার্যালয়ে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে৷প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান বলেন, আমার বিশ্বাসই হচ্ছিল না৷ এরকম একটা সংবাদ আমি শুনব, এরকম প্রস্ততি ছিল না৷মালয়েশিয়া থেকে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ দ্রুতই বাংলাদেশে আনা হচ্ছে৷পুত্রশোকগ্রস্ত খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করে এসে শনিবার বিকালে একথা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ৷শনিবার দুপুরে মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে মারা যান বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত কোকো৷ তিনি মুদ্রাপাচার মামলায় ৬ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বিদেশে পালিয়ে ছিলেন৷

আরাফাতের মৃতু্যর খবর পেয়ে খালেদা জিয়ার নিকটাত্মীয়সহ শুভাকা্ক্ষীরা গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান৷ ৩ জানুয়ারি থেকে নিজের কার্যালয়ে রয়েছেন তিনি৷খালেদার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় খুব দ্রুতই তার লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে৷ পারিবারিকভাবে অন্যসব বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে৷

অবরোধের মধ্যে ৩৬ ঘন্টার হরতালের ঘোষণা বিএনপি জোটের পক্ষ থেকে দেওয়ার পর ঘন্টাখানেকের মধ্যে খালেদার ছেলের মৃতু্য সংবাদ আসে৷এখন কর্মসূচিতে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না- সাংবাদিকরা জানতে চাইলে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বলেন, ছেলের মৃতু্যতে তিনি খুবই বিমর্ষ আছেন৷ এই সময়ে ওই সব বিষয়ে কোনো কথা হয়নি৷আরাফাতের দাফনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে বিকালে সাংবাদিকদের জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান৷সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফউদ্দিন নিজান জানান, আরাফাতের মরদেহ মালইয়া ইউনির্ভাসিটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে৷

রোববার জোহরের নামাজের পর কুয়ালালামপুরে নাগারা মসজিদে জানাজা হবে বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন৷মৃতু্যর সংবাদের পর গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে যান আরাফাতের শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের সদস্যরাও৷