MOHIT-1422260577

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি: বর্তমানে দেশে আন্দোলনের নামে যা চলছে তা মেনে নেয়ার মতো নয়৷ সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে এটা সবার জন্য মহাবিপদ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত৷ আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে তা আন্দোলন নয় মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা প্রতিহিংসা পরায়ণতা,জঘন্য ও অসামাজিক কাজ৷ স্বাভাবিক চলার পথকে রুদ্ধ করা হয়েছে৷ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে৷ এটাকে দমন না করলে দেশ টিকবে না৷ সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে মহাবিপদ হবে৷ আশা করি বিরোধীদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে৷

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন৷

অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে চলাফেরা বেশ বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে৷ আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, অত্যাচার করা হচ্ছে৷ হুঁশিয়ার জানিয়ে তিনি বলেন, এটা দমনে সবার সমর্থন প্রয়োজন৷ মনে রাখবেন, সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে মহাবিপদ হবে৷তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে, অত্যাচার করার যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ৷ এটা চলতে দেওয়া যায় না৷

কাস্টমস দিবস সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আহরণে কাস্টমস ভূমিকা পালন করে৷ আগামীতে বর্ডার ব্যবস্থাপনায় ট্রেড ফ্যাসিলিটি বাড়বে৷তিনি বলেন, কাস্টমস ব্যবস্থাপনা এমন সমন্বয়ের মাধ্যমে করতে হবে যেন ব্যবসায়ীরা সহজেই তাদের কাজ সমাধা করতে পারেন৷ উত্তম সেবা পেতে পারেন৷ আবার এমন ব্যবস্থাও নিতে হবে যেনো জঙ্গিবাদীরা সুবিধা না পায়৷

অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মুক্তবাজার অর্থনীতিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ ভবিষ্যতে শুল্ক ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে৷ কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাজ কমে যাবে৷ তবে সীমান্তে সমন্বয় সাধন করে ব্যবসায়ে সহায়তা বাড়াতে কাস্টমস গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে৷কাস্টমস দিবস নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় কাস্টমস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এর গুরুত্ব অপরিসীম৷ বর্ডার ব্যবস্থাপনা বিজিবি, পুলিশ, কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে হলে ট্রেড ফ্যাসিলিটি বাড়বে৷

ট্যারিফ ও নন-ট্যারিফের কারণে বেশ কয়েকটি দেশের দেওয়া কোটামুক্ত সুবিধা কাজে না লাগাতে পারাকে দুর্ভাগ্য বলে আখ্যা দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ৷ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কয়েকটি দেশ কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার পরও ট্যারিফ নন-ট্যারিফ বেরিয়ারের (বাধা) কারণে দুর্ভাগ্যবশত সে সুবিধা কাজে লাগাতে পারিনি আমরা৷তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর এটি একটা বড় সমস্যা৷ নেওয়ার সময় আমাদের কাছ থেকে সব নিয়ে গেছে ও দেওয়ার সময় কিছুই দেয়নি বলেও মনে করেন তিনি৷

সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা যাতে হয়রানি ছাড়া পণ্য আমদানি-রফতানি করতে পারেন, সে দিকে খেয়াল রাখতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) লক্ষ রাখার অনুরোধ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ৷বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের তথাকথিত আন্দোলন সফল হবে না উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তথাকথিত আন্দোলনের নামে কোনো কোনো দল সন্ত্রাস, মানুষ হত্যা করে দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়৷তোফায়েল আহমেদ বলেন, রাজনীতি করি দেশ ও মানুষের জন্য৷ তাদের (বিএনপি) আন্দোলন কোনোদিন সফল হবে না৷রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবসা ও বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করে বাংলাদেশকে একটি কার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি৷

অনুষ্ঠানে শুল্ক আদায়ে সহায়তা ও কাস্টমস প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্টকহোল্ডার ও শুল্ক প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ২০ জনকে ডবি্লউসিও এর মেরিট সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়৷ বাংলাদেশসহ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন (ডবি্লউসিও) সদস্যভুক্ত ১৭৯টি দেশে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস পালিত হচ্ছে৷এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা মশিউর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও এনবিআরের সদস্য ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷