যুগ্ম-মহাসচিব-রুহুল-কবির-রিজভী

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮জানুয়ারি: বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ভোটার বিহীন সরকার বর্তমানে দেশকে জাহান্নামের দ্বারপ্রান্তে টেনে নিয়ে এসেছেন৷ সুদৃঢ় রাষ্ট্রের বন্ধনগুলোকে ছিঁড়ে ফেলে বাংলাদেশকে একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন এ সরকার তা সবই করছে৷বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন৷

ঢাকা গুম,গুপ্তহত্যার ঘটনায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এসব ঘটনার দায়ে অভিযুক্তদের ভবিষ্যতে ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের ন্যায় আদালত গঠন করে বিচারের কথা উল্লেখ করেছেন বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ৷ একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের হুমকি দেয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুরও কঠোর সমালোচনা করেন তিনি৷ বুধবার গণমাধ্যমে ২০ দলীয় জোটের তরফে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রিজভী আহমেদ বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, বেগম জিয়ার জন্য নাকি কাশিমপুর কারাগারে জায়গা করে রাখা হয়েছে৷ বেগম জিয়াকে গ্রেফতার ও বিচারের অহর্নিশ হুমকি দিয়ে হাসানুল হক ইনুরা দেশকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন চরম সংঘাতের দিকে৷ বিদ্যমান সংকটকে তারা আরো বেশী ঘনীভূত করতে চাচ্ছেন৷

গুম ও গুপ্ত হত্যা প্রসঙ্গে রিজভী আহমেদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘গুম, গুপ্তহত্যা এবং গ্যাস চেম্বারের অব্যবহিত পরেই আসে কুখ্যাত নাত্‍সী সহযোগীদের বিচারের জন্য নূ্যরেমবার্গ ট্রায়াল৷ নূ্যরেমবার্গ ট্রায়ালের ন্যায় বাংলাদেশের মাটিতেও যে দেশের নাত্‍সী সহযোগীদের বিচার হবে না এটা যেন কেউ মনে না করে৷ সুতরাং এখন থেকেই কারাগারগুলো সংস্কার করে রাখলে ভাল হয়৷তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে জ্যেষ্ঠতা ও দক্ষতাকে ডিঙ্গিয়ে আওয়ামী পন্থী পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব্ব বিভাগের প্রধান পদে অথবা অন্যকোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করেছেন৷

দেশের বিরোধী দলের আন্দোলন দমাতে এরা সর্বনাশা নির্মূল যুদ্ধে নেমে পড়েছে৷দেশব্যাপী ক্রসফায়ার আর বন্দুক যুদ্ধের মনগড়া কাহিনী তৈরি করে আন্দোলনরত তরুণ নেতাকর্মীদের মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করা হচ্ছে৷ রিজভী বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো নিজেদের স্বার্থেই এ অবৈধ সরকারের স্বার্থ রক্ষা করছে৷ যেখানে আইনে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে রাষ্ট্রের কর্মচারীরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে৷ কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সরকারের বেআইনি রাজনৈতিক এজেন্ডা সফল করার কাজে তারা উঠেপড়ে লেগেছে৷ আর সেজন্যই দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের হুমকি-ধামকির সঙ্গে সুর মিলিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান কর্তারা কথা বলছেন৷ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কেউ কেউ ক্ষমতাসীনদের হুমকির প্রতিধ্বনি করে প্রকাশ্যে গুলি করার কথা বলছেন, আবার কেউ বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতির সবক দিচ্ছেন৷ ঔদ্ধত্য ও ধৃষ্টতা কত চরম সীমায় গিয়ে পৌঁছলে তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এখতিয়ার বহির্ভুত কথা বলতে পারেন কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যক্তিরা?

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দল ও জোটের আন্দোলন রাষ্ট্রের দমনমূলক শক্তি দিয়ে সমাধানহীন রক্তঝরা হানাহানির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে৷ রাজপথে মানুষের ধেয়ে আসা স্রোতকে আটকাতে না পেরে পেট্রল বোমা ছুঁড়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারার এক অমানবীয় নাশকতার মরণখেলায় তারা মেতে উঠেছে৷ আর এর দায় বিরোধী দলের ওপর চাপানো হচ্ছে৷ বিগত ছয় বছর ধরে দলীয় চেতনার মালিকানায় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম গড়ে তোলা হয়েছে একদলীয় দু:শাসনের সাফাই গাওয়ানোর জন্য৷ রিজভী আরো বলেন, তথ্যমন্ত্রী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বেগম জিয়ার জন্য কাশিমপুর কারাগারে জায়গা করে রাখা হয়েছে৷ বেগম জিয়াকে গ্রেফতার ও বিচারের হুমকি দিয়ে হাসানুল হক ইনুরা দেশকে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন চরম সংঘাতের দিকে৷ যদি বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ও তাকে গ্রেফতারের ষড়যন্ত্র করা হয়, চলমান গণতন্ত্র পুণ:রুদ্ধারের আন্দোলনের ওপর আক্রমণ বন্ধ না করা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে যদি প্রসারিত না করা হয়, গুলি করে হত্যা করা না থামান তাহলে বিরোধী দল লড়াই থেকে সরে দাঁড়াবে না৷