Advocate_Kamrul_Islam_9431

দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি: খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩’ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে৷ এ আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রসত্ম ব্যক্তি সরাসরি মামলা করতে পারবেন৷

সরকার আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে খাদ্য নিরাপত্তা আইন ২০১৩’ বাসত্মবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে৷ এ লক্ষ্যে আজ দেশের তিনটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় খাদ্য নিরাপত্তা আইন বাসত্মবায়ন সংক্রানত্ম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে৷ আমরা আশা করি, খাদ্য নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্য ভেজাল প্রতিরোধ সহজতর হবে, খাদ্য নিরাপত্তা আইন বাসত্মবায়ন সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বৃহস্পতিবারএকথা বলেন৷ তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ সম্মেলনের আয়োজন করে৷

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আইনে যে কোন ব্যক্তি মামলা দায়েরের জন্য কারণ তৈরি হওয়ার ৩০ (তিরিশ) দিনের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য বিরোধী যে কোন কাজ সম্পর্কে’ বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত’-এ সরাসরি মামলা দায়ের করতে পারবেন৷ এর আগের অধ্যাদেশে কোন ব্যক্তি অনিরাপদ খাদ্য উত্‍পাদক, প্রক্রিয়াকারী বা বিক্রেতার বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা দায়ের করতে পারতেন না৷ এই আইনে ২৩ টি বিভিন্ন অপরাধে ১ থেকে ৫ বছর পর্যনত্ম কারাদন্ড অথবা ৪ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে৷

এই আইন কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে ‘পিউর ফুড অর্ডিন্যান্স ১৯৫৯’ রহিত হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তবে রহিত অধ্যাদেশের অধীনে অনিষ্পন্ন কার্যক্রম, দায়েরকৃত মামলা ও তার আপীল পূর্বের অধ্যাদেশের অধীনেই নিষ্পত্তি করা হবে৷পুর্ববর্তী অধ্যাদেশের ‘পিউর ফুড কোর্ট’ বর্তমানে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত নামে কাজ করবে৷

কামরুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত নির্ধারণ প্রক্রিয়াধীন৷ নিরাপদ খাদ্য আইনের অধীনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য আইনটিকে ‘মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯’ এর তফসিলভুক্ত করতে ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে৷

খাদ্য দ্রব্যে বিষাক্ত উপাদান (ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ফরমালিন, সোডিয়াম, সাইক্লামেট, ডিডিটি, পিসিবি ইত্যাদি), তেজষ্ক্রিয় ও ভারী ধাতুর ব্যবহার, ভেজাল খাদ্য বা খাদ্যোপকরণ উত্‍পাদন, আমদানি, বিপণন, নিম্নমানের খাদ্য উত্‍পাদন, অনুমোদন বিহীন, খাদ্য সংযোজন দ্রব্য বা প্রক্রিয়াকরণ সহায়ক দ্রব্যেও ব্যবহার, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্য আমদানি, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রয়, অনুমোদিত মাত্রার বাইরে বৃদ্ধি প্রবর্ধক, কীটনাশক, বালাইনাশক বা ঔষধের অবশিষ্টাংশ, অনুজীব ইত্যাদির ব্যবহার, অনুমোদন বিহীন বংশগতি বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনকৃত খাদ্য, জৈব খাদ্য, অভিনব খাদ্য ইত্যাদির উত্‍পাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন শাসত্মির আওতায় আনা হয়েছে৷ এটি নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর অধীনে ‘নিরাপদ খাদ্য (খাদ্যদ্রব্য জব্দকরণ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ পদ্ধতি) বিধিমালা ২০১৪’ নামে প্রণীত হয়েছে৷তিনটি পৃথক কমিটি এই আইন বাসত্মবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে পরমর্শ, সমন্বয় ও কার্যকর পদৰেপ গ্রহণে কাজ করবে৷

নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক নীতিমালা-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ দেয়ার জন্য খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ থাকবে৷পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সংশিস্নষ্ট সকল সংস্থার কার্যাবলী সমন্বয় করবে৷ নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার স্বার্থে সব খাদ্য ও খাদ্য উপাদান উত্‍পাদন, প্রক্রিয়াকরণ, প্রসত্মতকরণ ও বিপণন কার্যক্রম পরিবীক্ষণ এবং উত্‍কৃষ্ট পদ্ধতির অনুশীলন ও বিপত্তি বিশ্লেষণ ইত্যাদি কার্যক্রম নিরাপদ খাদ্য কর্তর্ৃপক্ষের দায়িত্বে থাকবে৷

নিরাপদ খাদ্য কতর্ৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধিবর্গের সমন্বয়ে ২৮ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি গঠিত হবে৷ নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সংস্থার মাঝে সমন্বয় সাধন করা এ কমিটির দায়িত্ব৷কামরুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কারিগরি কমিটিও গঠন করা হবে৷ এছাড়াও নিরাপদ খাদ্য কতর্ৃপৰ প্রয়োজনীয় সংখ্যক খাদ্য বিশ্লেষক’ ও ‘নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক’ নিয়োগ করবে৷খাদ্য সচিব মুশফেকা ইকফাত্‍, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহমদ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন৷