soudi_12263

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১লা ফেব্রুয়ারী: বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক নেয়ার ওপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় পাস হওয়ার পর রোববার দেশটির রয়েল কোর্ট তা অনুমোদন দিয়েছেন৷ রোববার সকালে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডেপুটি মিনিস্টার ডক্টর আহমেদ আল ফাহাইদ রোববার সকালে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামকে টেলিফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷

উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশের শ্রমিক নেয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সৌদি সরকার৷ আর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রস্তাব এবং পুনরায় বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আনার ব্যাপারে গত ১৮ জানুয়ারি সৌদি শ্রমমন্ত্রী ডক্টর আদেল ফাকিহ এবং ১৯ জানুয়ারি তত্‍কালীন ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স (বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স) মুকরিন বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন৷

বৈঠকে সৌদি মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং পুনরায় শ্রমিক আনার আশ্বাস দেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীকে৷

আব্দুল আজিজের আশ্বাস অনুযায়ী রোববার দেশটির রয়েল কোর্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশ থেকে ফের শ্রমিক আনার অনুমোদন দেন এবং বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সৌদি সরকারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে বলেও জানানো হয়৷এর ফলে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে শ্রমিক পাঠাতে আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম৷

রোববার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক বার্তায় তিনি বলেন, সৌদি আরবের রাজকীয় সভা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করেছে৷ দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ মন্ত্রী আহমেদ এফ আলফাহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷

বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সৌদি সরকারের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন বলেও আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত৷

সরকারি হিসাবে বর্তমানে ১২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত৷ এই হিসাবে সৌদি আরবই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার৷ ২০০৮ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক নিত সৌদি আরব৷

শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে যেতে একজন শ্রমিকের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে না বলে গত ২৫ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন৷

তিনি বলেন, সৌদি আরবে যেতে শ্রমিকদের প্র্যাকটিকালি তেমন কোনো খরচ নেই৷ চাকরিদাতাই লেভি, ভিসা, যাতায়াত এবং মেডিকেলসহ অন্যান্য খরচ বহন করবে৷এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি নিষেধাজ্ঞা ওঠার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে সৌদি শ্রমমন্ত্রী আবদেল ফকিহ রিয়াদে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সৌদি আরবের কোন কোন খাতে কীভাবে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিলে দুই দেশই লাভবান হবে- সে বিষয়ে একটি কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে৷

কাজ নিয়ে সৌদি আরবে আসার আগে আগ্রহীরা যাতে নিজের দেশে প্রশিক্ষণ পায় এবং অনলাইন ভেরিফিকেশনের সুযোগ রেখে স্বচ্ছতার সঙ্গে তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়- সে ব্যবস্থাও করার কথা বলেছিলেন তিনি৷