চিনিকলের

দৈনিকবার্তা-চুয়াডাঙ্গা,২ ফেব্রুয়ারি: জেলার একমাত্র ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান। এঞ্চলের অর্থনৈতি চালিকা শক্তি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা কেরুজ চিনি কল। এ প্রতিষ্ঠনকে ঘিরে এতদা অঞ্চলের মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে সুবিধা ভোগ করে থাকে। চিনিকল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়মের কারণে এলাকার আখ চাষিরা এরই মধ্যে আখচাষে আগ্রহ হারিয়েছে। তার উপর চলতি মাড়াই মৌসুমে অদক্ষ প্রশাসনে কারণে দফায় দফায় চিনিকলটির মাড়াই কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে মাড়াই করা আখের রস ও গুড় পরিকল্পিত ভাবে ড্রেন দিয়ে ফেলে দেওয়া হচ্ছে নদীতে। যা ভেসে যাচ্ছে গঙ্গার জলে। ফলে এবারের মাড়াই মৌসুমে চিনি উৎপাদনে কর্তৃপক্ষকে গুনতে হবে মোটা অংকের লোকশান। চিনি উৎপাদনে লোকশান হলে কি কতৃপক্ষের আর কি হবে। স্থানীয় কতৃপক্ষ উদ্ধর্তন কতৃপক্ষকে বরাবরের মত এবারও বোঝাতে সক্ষম হবেন চিনি কলের জন্যই ডিষ্টিলারী বিভাগে কোটি কোটি টাকা লাভ হয়েছে। চিনিকলটি না থকলে ডিষ্টিলারী করখানার কাঁচা মাল সরবরাহ করা অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যায় বহুল হতো।

রোববার ভোর ৪ টার পর থেকে জ্বালানী কাঠের অভাবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘন্টা চিনিকলের কর্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। দর্শনা চিনি কলের মত এমন একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান জ্বালানী কাঠের অভাবে বন্ধ থাকায় কতৃপক্ষের অদক্ষতার বিষয়টি গতকাল রোববার দর্শনার সর্বত্র আলোচনা হতে থাকে।সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানাগেছে, ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দর্শনা কেরুজ চিনিকল। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া চিনিকলটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। প্রতিবছরই চিনিকল মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করার বিল ভইচার দাখিল করা হয়ে থাকে। এতে চিনিকলটির কোন উন্নয়ন না হলেও উন্নয়ন ঠিকই হয় কর্তা ব্যক্তিদের। মাড়াই মৌসুমে সংশ্লিষ্ঠ উদ্ধর্তন কর্তাব্যক্তিরা চিনিকলটি ভিজিট করতে এসে বিভিন্ন অনিয়ম বা দুর্ণীতি ধরা পড়লে তাও আলোর মুখ দেখার আগেই ধামাচাপা পড়ে যায় অজ্ঞাত কারণে। এসব অনিয়ম আর দুর্ণীতির সাথে জড়িতদের কোন সাজা না হওয়ায় অনিয়ম আর দুর্ণীতি এখানে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসেছে। অবস্থা এমন সরকারী মাল দরিয়া মে ঢাল।

প্রতিবছর চিনিকল কর্তৃপক্ষ চিনি উৎপাদন খাতে কোটি কোটি টাকা লোকশান গুনে থাকে। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে অদক্ষ প্রশাসনের কারণে বিগত বছরের চাইতে চলতি বছর চিনি উৎপাদনে বেশি ক্ষতির সন্মুখীন হবে চিনিকলটি। কর্তৃপক্ষক চিনি উৎপাদনে লোকশানের বিষয়টি আমলে না নিয়ে যুক্তি দেখাবে ডিস্টিলারি বিভাগেত কোটি কোটি টাকা লাভ হয়েছে। এছাড়া, আখ ক্রয়ের ক্ষেত্রে পূর্জি অনিয়মের অভিযোগতো দীর্ঘদিনের। যার কারণে এলাকার আখ চাষিরা ভোকান্তির হাত থেকে রেহায় পেতে ইতঃমধ্যে আখ চাষ কমিয়ে দিয়েছে অনেকাংশে। তার উপর দফায় দফায় মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মিল গেটে আখ নিয়ে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয় চাষীদের। যা তাদের জন্য খুবই বিড়াম্বনার। এ ভাবে চলতে থাকলে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠনটি পড়বে হুমকির মুখে এনটাই মনে করছে সচেতন মহল।

চিনিকলের সিবিএ নেতারাসহ একাধিক সূত্রে জানা যায় গতকাল রোববার ৪ টার পর থেকে জ্বালানী কাঠের অভাবে হটাত করে মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এই মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয় বিকেল ৪ টার দিকে। এই সময় উৎপাদিত লাখ লাক টাকার রস ও গুড় কৌশলে ফেলে দেওয়া হয় মিলের ময়লা আবর্জনা বের হওয়া ড্রেনে। আর সেই রস গুড় ড্রেন দিয়ে পড়ে শ্যামপুর গ্রামের নিচে বয়েচলা মাথাভাঙ্গা নদীতে। মাথাভাঙ্গা নদী বয়ে সেই রসগুড় চলে যায় ভারতের গঙ্গায়। অথচ এর কোন সদোত্বর দিতে পারেনি অদক্ষ প্রশাসনের কর্তা কেরুর এমডি আজিজুর রহমান।তিনি জানান,এত বড় প্রতিষ্ঠানে ত্রুটি থাকতেই পারে। এনিয়ে সাংবাদিকদের মাথা ব্যথার কি আছে। এসব দেখার জন্য সরকারের অনেক (বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের নাম বলেন তিনি) লোক আছে।